গবেষণায় দেখা গেছে, ইউরোপিয়ানরাই লাতিন আমেরিকায় বেশি হারে অভিবাসন নিয়েছেন

 "Leaving" Mural, by Antonio Segui, at Independencia station in the Buenos Aires metro (Argentina). More Europeans have migrated to Latin America than vice versa. Credit: Rodrigo Borges Delfim

আর্জেন্টিনার বুয়েনোস আয়ারসের ইন্ডিপেনডেন্সিয়া স্টেশনে আঁকা একটি ম্যুরাল চিত্র। “ছেড়ে যাচ্ছি” নামের এই ম্যুরালটি এঁকেছেন আন্তোনিও সেগুই। ছবি তুলেছেন রদ্রিগো বোরগেজ ডেলফিম।

পোস্টটি প্রথম প্রকাশিত হয় পর্তুগিজ ভাষার ব্লগ মাইগ্রামান্ডোতে। কনটেন্ট বিনিময় চুক্তির আওতায় গ্লোবাল ভয়েসেস-এ পুনর্প্রকাশিত হয়েছে।

বেশিরভাগ মানুষের ধারনা, লাতিন আমেরিকা থেকে ইউরোপে বিপুল সংখ্যক অভিবাসী যান। সে তুলনায় ইউরোপ থেকে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে আসেন খুব কম সংখ্যক অভিবাসী। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে উল্টোটা। ইউরোপে নয়, বরং সেখান থেকেই বেশি সংখ্যক অভিবাসী লাতিন আমেরিকায় আসেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর ‘মাইগ্রেটরি ডাইনামিক্স ইন লাতিন আমেরিকান অ্যান্ড দ্য ক্যারিবিয়ান অ্যান্ড বিটুইন লাতিন আমেরিকা অ্যান্ড দ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন’ শিরোনামের গবেষণা প্রতিবেদনে সেটাই উঠে এসেছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১২ সালে ১৮১,০০০ জনের বেশি ইউরোপিয়ান তাদের দেশ ছেড়ে লাতিন আমেরিকায় গেছেন। অন্যদিকে একই সময়ে ১১৯,০০০ জন লাতিন আমেরিকান দেশ ছেড়ে ইউরোপে পাড়ি দিয়েছেন। যা ২০০৭ সালের তুলনায় ৬৮ শতাংশ কম। সে বছর লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের ৩৫০,০০০ জনের বেশি অভিবাসী ইউরোপে পাড়ি জমিয়েছিলেন। অভিবাসীর সংখ্যায় এ যাবৎকালে সেটাই সর্বোচ্চ।

লাতিন আমেরিকায় সবচে’ বেশি সংখ্যক অভিবাসী গেছেন স্পেন থেকে। ২০১২ সালে স্পেন থেকে যাওয়া অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ১৮১,১৬৬ জন। এর পরপরই আছে ইতালি, ফ্রান্স এবং জার্মানি।

২০১৩ সালে লাতিন আমেরিকায় বসবাসকারী আন্তর্জাতিক অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৮.৫ মিলিয়ন (এর ১.১ মিলিয়নই ইউরোপীয় ইউনিয়নের)। যা ২০১০ সালের চেয়ে ৫০০,০০০ এবং ২০০০ সালের চেয়ে ২.৫ মিলিয়ন বেশি।

ইউরোপ থেকে লাতিন আমেরিকায় অভিবাসন প্রসঙ্গে আইওএম-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর-জেনারেল লরা থমসন বলেছেন, “সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপ এবং লাতিন আমেরিকার মধ্যে অভিবাসন আমাদেরকে আর্থ-সামাজিক অস্থিরতার চিত্র তুলে ধরে। পাশাপাশি তারা অর্থনৈতিক মন্দাকে কীভাবে মোকাবেলা করছে, এর সাথে নিজেদেরকে কীভাবে সমন্বয় করে নিচ্ছে তা দেখায়।“

Study shows that more Europeans have migrated to Latin America than Latin Americans to Europe. Credit: Divulgação

গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বেশি সংখ্যক ইউরোপিয়ান লাতিন আমেরিকায় অভিবাসন নিয়েছেন। ছবি: আইওএম

তিনি উল্লেখ করেছেন, এই সমন্বয়টা হচ্ছে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে অভিবাসনের মাধ্যমে। ২০১৩ সালে আর্জেন্টিনায় সবচে’ বেশি সংখ্যক অভিবাসী এসেছে- ২৩৮,৭০০ জন। যা মোট অভিবাসীর ২৮ শতাংশ। এর পরেই আছে ভেনেজুয়েলা, কোস্টারিকা এবং ডমিনিকান রিপাবলিক।

ব্রাজিলের কী অবস্থা?

ব্রাজিলে অভিবাসী ইস্যু’র গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটি অভিবাসনের ক্ষেত্রে ট্রানজিট এবং গন্তব্য হিসেবে গন্য হয়ে থাকে। আইওএমের গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রাজিলিয়ানরা নিজেরাও অন্যান্য দেশে অভিবাসন নিচ্ছেন।

আইওএমের তথ্য মতে, লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিল থেকেই সবচে’ বেশি সংখ্যক মানুষ ইউরোপে অভিবাসী হন। এরপরের দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে কলম্বিয়া, পেরু এবং ইকুয়েডর। তাছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রাজিলই সবচে’ বেশি পরিমাণ রেমিটেন্স পেয়ে থাকে (১.৫৯৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)। যা লাতিন আমেরিকার মোট রেমিটেন্সের ২২ শতাংশ (২০১২ সালের তথ্য)।

গবেষণা প্রতিবেদনটি ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন (স্প্যানিশ ভাষায়)। .

এই পোস্টের জন্য আইওএম, রেডিও মাইগ্রান্টিসএল পায়াস থেকে তথ্য নেয়া হয়েছে। .

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .