বিবাহ বর্হিভূত ভাবে একসাথে থাকা নিয়ে প্রবন্ধ প্রকাশের পর ইরানের প্রধান নারী বিষয়ক পত্রিকার প্রকাশনা স্থগিত করা হয়েছে

Shahla Sherkat hopes to convince the court to allow resumption of the Zanan-e Emrooz's monthly publication. Photo from ICHRI, and used with permission.

জানান-ই এমরোজের–এর সম্পাদিকা শাহালা শেরকাত আশা প্রকাশ করছেন যে মাসিক এই পত্রিকার প্রকাশনা পুনরায় চালু করার বিষয়টি আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হবেন। ছবি আইসিএইচআরআই, অনুমতিক্রমে প্রকাশিত।

এই লেখাটি প্রথম ইরানহিউম্যানরাইটস.অর্গে প্রকাশিত হয় এবং ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন ফর হিউম্যান রাইটস ইন ইরানের যৌথ উদ্যোগে এখানে পুনরায় প্রকাশ করা হয়েছে।

ইরানের প্রেস ওভারসাইট কমিটি (সংবাদপত্র বিষয়ক ত্রুটি পর্যবেক্ষণ পরিষদ) ইরানের প্রধান মহিলা বিষয়ক পত্রিকা জানান-ই এমরোজের (আজকের নারী) প্রকাশনা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং এই বিষয়ে আইনগত লড়াই–এর জন্য এটিকে ইরানের আদালতে হস্তান্তর করেছে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন ফর হিউম্যান রাইটস ইন ইরান (ইরানের মানবাধিকার জন্য আন্তর্জাতিক আন্দোলন) নামক সংস্থাকে প্রদান করা এক সাক্ষাৎকারে পত্রিকার সম্পাদিকা শাহালা শেরকাত বলেন যে তিনি আশা করেন মাসিক এই পত্রিকা পুনরায় প্রকাশের বিষয়টি তিনি আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হবেন।

প্রেস ওভারসাইট কমিটির এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি ঘোষণা করে মেহের নিউজ এজেন্সি, এতে তারা উদ্ধৃত করে যে এই নিষেধাজ্ঞার কারণ হচ্ছে হোয়াইট ম্যারিজ নামক বিবাহের বিষয়টি প্রচার করা এবং একে যৌক্তিক করে তোলা, এটি হচ্ছে এমন এক শব্দ যা দেশটির তরুণ তরুণীদের বিবাহ বর্হিভূত ভাবে একসাথে বসবাসের বিষয়টিকে বর্ণনা করার জন্য রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তারা ব্যবহার করে থাকে।

শেরকাত জানান, “ আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্তটি জানানো হয়নি। আমি সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে এই বিষয়ে জেনেছি, সাথে এই বিষয়টিও বিবেচনা করছি যে পত্রিকার লাইসেন্স প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়নি, এটা কেবল স্থগিত করে রাখা হয়েছে। আমি আশাবাদী আদালতকে আমার এই লেখার কারণ উপস্থাপন করে বিচারপতিদের এই বিষয়টি বোঝাতে এবং আবার আমাদের কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হব”।

জানান-এ ইমরোজ-এর প্রকাশনা শুরু হয় জুন ২০১৪-এ এবং এর ১১তম সংখ্যায় প্রকাশিত প্রবন্ধের প্রেক্ষিতে এটির প্রকাশনা স্থগিত হয়ে যায়। জানান –ই এমরোজের সম্পাদিকার দায়িত্ব পালন করার আগে শেরকাত ১৬ বছর ধরে ইরানের অন্যতম পত্রিকা জানান-এর সম্পাদিকার দায়িত্ব পালন করেন, যে পত্রিকাটি ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ সালে, এই ধরনের লেখা যেমন বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে নারীর সমনাধিকার, শিশুকে নিজের কাছে রাখার অধিকার, ইত্যাদি লেখার সাথে আরো কিছু লেখার কারণে অনেক রক্ষণশীলকে আহত করে নিষিদ্ধ হয়ে যায়। জানান পত্রিকাটি নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর শেরকাত আরেকটি মহিলা বিষয়ক পত্রিকার লাইসেন্স পান, যার ঠিক প্রায় সাত বছর পর তিনি অবশেষে জানান-ই এমরোজ প্রকাশের অনুমতি লাভ করেন।

মেহের নিউজ অনুসারে, দি প্রেস অভারসাইট কমিটি জানান-ই এমরোজের এই লেখাকে সংবাদ পত্র আইনের ৬ নাম্বার ধারা অনুসারে “সাধারণ মানুষের শুদ্ধতার বিরুদ্ধে” বলে অভিহিত করেছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন ফর হিউম্যান রাইটস ফর ইরানকে শেরকাত বলেন তার এই পত্রিকায় প্রকাশিত এই লেখার কারণে সরকারি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তিনি কোন ধরনের কোন নোটিশ পাননি।

শেরকাত, ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন ফর হিউম্যান রাইটস ইন ইরানকে বলেন, “আমি সংবাদে পাঠ করেছি যে এই নিষিদ্ধ ঘোষণার কারণ হচ্ছে “হোয়াইট ম্যারিজ” নামক প্রবন্ধ, যা একটি সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে। আদালতে শুনানী শুরু হওয়ার তারিখ পর্যন্ত আমাকে অপেক্ষা করতে হবে। আমি সবসময় আশাবাদী, আর এবারও আমি আশাবাদী থাকতে চাই যে সবকিছুর সমাধান হয়ে যাবে, যাতে আবার আমার আমাদের কাজ শুরু করতে পারব। এটি এই পত্রিকার পঞ্চম সংখ্যা, যা প্রায় ছয় মাস আগে প্রকাশিত হয়েছে, যে প্রবন্ধে বিয়ে ছাড়াই একত্রে বসবাস করার বিষয়ে এক ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছে”।

কঠোর রক্ষণশীল পত্রিকা ফার্স নিউজ এজেন্সি লিখেছে যে এই প্রকাশনা বন্ধ হওয়ার কারণ কেবল “ বিবাহ বর্হিভূত বাসবাস” নিয়ে লেখা নয়। ফার্স উদ্ধৃত করছে যে নারী অধিকার বিষয়ক সংখ্যা এবং খেলা দেখার জন্য স্টেডিয়ামে নারীদের প্রবেশাধিকার নিয়ে প্রকাশ করা সংখ্যা হচ্ছে এই পত্রিকা নিষিদ্ধ হওয়ার অন্যান্য কারণের মধ্যে অন্যতম।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .