মিশরে আর্মেনিয়ান গণহত্যার শতবার্ষিকী পালন

The Armenian community in Egypt marched to  commemorate the Armenian Genocide Centennial. Photograph shared on Facebook by Kegham Karsian

আর্মেনিয়ান গণহত্যার শতবার্ষিকী পালন উপলক্ষ্যে মিশরে বসবাসরত আর্মেনিয়ান সম্প্রদায় শোভাযাত্রা বের করে। কেগাম কারসিয়ান ছবিটি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।

গতকাল ২৪ এপ্রিল ২০১৫ সারাবিশ্বের লাখ লাখ মানুষের সাথে মিশরের আর্মেনিয়ান সম্প্রদায়ও আর্মেনিয়ান গণহত্যার শতবর্ষ স্মরণানুষ্ঠানে যোগ দেন।

ইতিহাসের এই দিনে তুরস্কের অটোমান কর্তৃপক্ষ প্রায় ২৫০ জন আর্মেনিয়ান বুদ্ধিজীবী এবং নেতাকে আটক করে হত্যা করে। শুধু তাই নয়, অটোমান শাসকরা ১৯১৫ সাল থেকে ১৯১৮ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এক থেকে দেড় মিলিয়ন আর্মেনিয়ানকে হত্যা করে।

মিশরের ব্লগার জেইনোবিয়া তার ইজিপ্টশিয়ান ক্রনিকলস ব্লগে মিশরের আর্মেনিয়ান সম্প্রদায়ের মানুষজনের দিবসটি উদযাপনের কথা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ওই সম্প্রদায়ের মানুষেরা শোভাযাত্রা করে নসর শহরের একটি ত্রিভুজাকৃতির স্মৃতিসৌধের সামনে আসেন। ছেলেমেয়েদের স্কাউটের একটি দল শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেয়।

মিশরের আর্মেনিয়ান সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। জেইনোবিয়া লিখেছেন:

মিশরে আর্মেনিয়ান সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের ইতিহাস রয়েছে। সেই মধ্য যুগে মামলুকদের শাসনের সময়কাল থেকে। ইতিহাসের অনেক সূত্র থেকে জানা যায়, মহারানী সুলতানা শাজার আল-দুরের শাসনকালেও মিশরে আর্মেনিয়ানদের অস্তিত্ব ছিল।

উনিশ শতকে আধুনিক মিশর গড়ে তুলতে মিশরের আর্মেনিয়ান সম্প্রদায়ের অবদানের কথা আমরা জানি। তাছাড়া এসময়ের রাষ্ট্রীয় পদে আর্মেনিয়ান সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও ছিলেন। এদের মধ্যে মিশরের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নূবার পাশাও রয়েছেন।

গণহত্যার পরে আর্মেনিয়ান সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক মানুষকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হয়। এদের অনেকেই মিশরে এসে নিরাপদ আশ্রয় পান।

আরো পড়ুন: সারা বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ আর্মেনিয়ান গণহত্যার শতবার্ষিকী পালন করেছেন।

জেইনোবিয়া আরো লিখেছেন:

১৯৫২ সালের পরে নাসের প্রশাসন জাতীয়তাবাদী নীতি গ্রহণ করেন। এ সময়ে অনেক মিশরীয় বংশোদ্ভূত আর্মেনিয়ান মিশর ত্যাগ করে ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।

যদিও বর্তমানে বিপুল সংখ্যক মিশরীয় বংশোদ্ভূত আর্মেনিয়ান মিশরে বসবাস করছেন।

মিশরের অনেকেই জানেন না, মিশরের আর্মেনিয়ান সম্প্রদায় দুটি দৈনিক পত্রিকা বের করেন। তাছাড়া সেই উনিশ শতক থেকে কায়রোতে আর্মেনিয়ানদের একটি স্কুল রয়েছে।

আমি ইতোমধ্যে কালোসিডান স্কুল থেকে পাস করেছি। এটি আর্মেনিয়ানদের পরিচালিত স্কুল। তাছাড়া এটি মিশরের সবচেয়ে প্রাচীন স্কুলগুলোর একটি। বাউলাকে এর অবস্থান।

মিশরে আর্মেনিয়ানরা যে দুটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করে থাকে, সেগুলো হলো হুসাপার এবং আরেভ। দুটি পত্রিকাই মিশরের সবচেয়ে পুরোনো পত্রিকাগুলোর মধ্যে অন্যতম।

মিশর আর্মেনিয়ান গণহত্যার স্বীকৃতি দেয়নি

এতদসত্ত্বেও মিশরের সরকার আর্মেনিয়ান গণহত্যার স্বীকৃতি দেয়নি। বিগ ফারাও মন্তব্য করেছেন:

বর্তমানে তুর্কি বিরোধী আবেগ ও নীতি থাকা সত্ত্বেও মিশর #আর্মেনিয়ানগণহত্যার স্বীকৃতি দেয়নি।

মিশরের নাগরিক আমরো আলি দু:খ করে বলেছেন:

সাক্ষ্য-প্রমাণ, ছবি, গণকবর, সংবাদ প্রতিবেদন, ১০০ বছরের ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও দু:খজনকভাবে #আর্মেনিয়ানগণহত্যাকে অস্বীকার করা হচ্ছে।

বিগ ফারাও কায়রোতে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের ছবি শেয়ার করেছেন:

মিশরের আর্মেনিয়ান সম্প্রদায় আর্মেনিয়ান গণহত্যার ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে কায়রোতে অবস্থিত একটি ত্রিভুজাকৃতির স্মৃতিসৌধের সামনে জড়ো হয়েছিলেন।

কেগাম কারসিয়ান অনুষ্ঠানের ছবির অ্যালবাম তার ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .