আর্মেনিয়ান গণহত্যার স্মৃতিচারণের মাধ্যমে লেবাননের আর্মেনিয়ান ঐতিহ্য উদযাপন

Source: Derian Armenological Library of Haigazian University

সূত্রঃ হাইগাজিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেরিয়ান আর্মেনলজিক্যাল পাঠাগার

আগামী ২৪ এপ্রিল তারিখ আর্মেনিয়ান গণহত্যার শতবার্ষিকী পূর্ণ হবে। সারাবিশ্ব যখন সেই স্মৃতিচারণের জন্য আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভানের দিকে তাকিয়ে আছে, অন্যদিকে আরেকটি জাতি, লেবানন তখন তাদের সমৃদ্ধ আর্মেনিয়ান ঐতিহ্য উদযাপন করছে।

লেবানন হচ্ছে সেই সব জাতিগুলোর একটি, যারা ১৯১৫ সালে চালানো গণহত্যার কারণে পালিয়ে আসা আর্মেনিয়ান শরনার্থীদের স্বাগত জানায়। তারপর পেড়িয়েছে অনেক সময়। আর্মেনিয়ান বংশোদ্ভূত লেবানিজরা গত ১০০ বছর ধরে শিল্প-সাহিত্য এবং বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে লেবানিজ সংস্কৃতিতে নেতৃত্বস্থানীয় ভুমিকায় রয়েছেন। বর্তমানে আর্মেনিয়ান বংশোদ্ভূত লেবানিজরা মূলত বেইরুতের আশেপাশে বসবাস করছেন। তারা বিশেষকরে বোর্জ হামুদে বাস করেন। গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া আর্মেনিয়ানরা এখানে বসতি গড়ে তুলেছেন। অন্যান্য স্থানে ছোট ছোট দলে বিভিন্ন বসতি গড়ে উঠেছে। আর্মেনিয়ার বাইরে একমাত্র লেবাননেই একটি আর্মেনিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম হাইগাজিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৬০ সালে পরিচালিত স্থান কার্যক্রম নামক একটি অবিশ্বাস্য কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বেইরুত থেকে প্রধান প্রধান তিনটি আর্মেনিয়ান দৈনিক প্রকাশিত হয়। লেবানিজ সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী তিনটি আর্মেনিয়ান রাজনৈতিক দলের পক্ষ নিয়ে মূলত এই তিনটি দৈনিক তাদের সংবাদ প্রকাশ করে থাকে।

Lebanese Stamp featuring the Armenian Genocide Monument in Bikfaya, Lebanon. Source: Armenians in Lebanon

লেবাননের বিকফায়াতে নির্মিত আর্মেনিয়ান গণহত্যার স্মৃতিস্তম্ভটির লেবানিজ ডাকটিকিট ছাপানো হয়েছে। ছবি সূত্রঃ লেবাননে বসবাসকারী আর্মেনিয়ানরা

আর্মেনিয়ান বংশোদ্ভূত লেবানিজদের অবদান উদযাপন করতে অডিও কুলটুর বিশেষ আয়োজন হাতে নিয়েছে। “এখনও এখানে রক্তক্ষরণ” শিরোনামে তারা একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র মুক্তি দিয়েছে। “৫ জন আর্মেনিয়ান বংশোদ্ভূত লেবানিজের কাছ থেকে পাওয়া সত্যিকার রক্তে ছাপানো একটি ম্যাগাজিন” এই চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছে। আর্মেনিয়ান জনগণ যে রক্ত ঢেলে দিয়েছেন তাঁর স্মরণে প্রতীকী ইঙ্গিত হিসেবে এই ৫ আর্মেনিয়ান বংশোদ্ভূত লেবানিজ স্বেচ্ছায় রক্ত প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যে পাঁচজন রক্ত দান করেছেন, তাদের মধ্যে দুইজন ডিজাইনার, একজন আলোকচিত্রী, লেবানিজ সঙ্গীতপ্রিয় অর্কেষ্ট্রার একজন পরিচালক এবং একজন শিল্পী তথা গীতিকার রয়েছেন।

তাঁর সাথে সাথে তারা আর্মেনিয়ান বংশোদ্ভূত লেবানিজ রেকর্ডিং শিল্পী ইলিন খাচাদুরিয়ানকেও বিশেষভাবে তুলে ধরেছেন। এছাড়াও রয়েছে আঞ্জারের অটোমান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রখ্যাত আর্মেনিয়ান প্রতিরোধ, বোর্জ হামুদকে তুলে ধরে একটি নগর গাইড প্রকাশ, নির্বাচিত কিছু আর্মেনিয়ান গানের একটি প্লেলিস্ট তৈরির পাশাপাশি দেখার জন্য নির্বাচিত কিছু আর্মেনিয়ান চলচ্চিত্রের একটি তালিকা প্রকাশ। এ সপ্তাহের রবিবারে অর্থাৎ ২৬ এপ্রিল তারিখে ডোনের সাং কম্পিউটার নামক একটি রক্ত দান কাজে নিয়োজিত এনজিও এ উপলক্ষ্যে একটি স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীরও আয়োজন করেছে। পাশাপাশি “মনে রাখতে যাত্রা” শিরোনামে একটি সাইকেল র‍্যালিরও আয়োজন করা হয়েছে।

বোর্জ হামুদ শহরে আর্মেনিয়ান বংশোদ্ভূত লেবানিজ এবং অন্যান্য লেবানিজরা #সকলগণহত্যারবিরুদ্ধে হ্যাশট্যাগটির অধীনে গত ১৯ এপ্রিল রাতে ফানুশ উড়িয়ে গণহত্যার শিকার সবাইকে স্মরণ করেছেন।

লেবাননে গত রাতের ঘটনা।

#সকলগণহত্যারবিরুদ্ধে অনুষ্ঠানে বৈরুতের আকাশে ৫০০ ফানুশ ওড়ানো হয়েছে।

আলিন ডেমিরজিয়ানের টুইটার একাউন্ট থেকে এই ছবিটি নেয়া হয়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .