১৫ গ্রাম হিরোইন পাচারের দায়ে মৃত্যুদণ্ড? সিঙ্গাপুরের মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে আর নয়

Screenshot from the campaign video of The Online Citizen.

দি অনলাইন সিটিজেনের প্রচারণা ভিডিওর স্ক্রিনশট

২০১১ সালে সিঙ্গাপুরে হিরোইন পাচারের ক্ষেত্রে আবশ্যিক শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড প্রদান স্থগিত করা হয়, কিন্তু তা গত বছর পুনরায় মৃত্যুদণ্ড প্রদান শুরু করা হয়। মানবাধিকার দলগুলো এই সিদ্ধান্ত পুনরায় বিবেচনা এবং বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানায়েছে যারা এই চরম শাস্তির বিলুপ্তি ঘটিয়েছে।

সেকেন্ড চান্স (দ্বিতীয় সুযোগ) নামক সংস্থা ২০০৯ সালের এক গবেষণা উদ্ধৃত করে সিঙ্গাপুর এবং হংকং-এ খুনের হারের তুলনা করে দেখিয়েছে যে বিকল্প ধরনের শাস্তির চেয়ে এটা এখন আর তেমন কার্যকরী নয়”। এই গবেষণা একই সাথে উল্লেখ করা হয়েছ যে “আর্থসামাজিক উপাদান এবং ধরা পড়ে যাওয়ার মত বিষয় ভয়াবহ শাস্তির চেয়ে অনেক বেশী প্রভাব শালী”। এই দলটি কর্তৃপক্ষের এই দাবীর বিরোধীতা করছে যে মৃত্যুদণ্ড অপরাধ করার ক্ষেত্রে এক কার্যকারী প্রতিবন্ধক, তারা এই বিষয়টি নির্দেশ করে যে কি ভাবে চরম শাস্তি এমন কি সামান্য অপরাধকে জীবন ও মৃত্যুর বিষয়ে পরিণত করে, যা অপরাধীকে আরো নির্মম হতে উৎসাহ যোগায়।

সিঙ্গাপুরে গড় মৃত্যুদণ্ডের হার
১৯৮১-১৯৮৯ =২ জন,
১৯৯০- ১৯৯৯=৩২.২ জন,
২০০০-২০০৯=১৩.১ জন,
২০১০-২০১৩=১ জন

পূর্বের উদাহরণ থেকে বলা যায়, যদি আপনি এক ব্যাংক ডাকাতি করেন এবং আকাশে গুলি করেন, তাহলে ইতোমধ্যে আপনি শাস্তি হিসেবে অবশ্যই মৃত্যুদণ্ড পেতে যাচ্ছেন।

সেকেন্ড চান্স প্রতিষ্ঠানের পরিচালক প্রসিলিয়া চিয়া যুক্তি প্রদান করেন যে অপরাধীদের শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে বিকল্প শাস্তি প্রয়োগ করা যেতে পারে:

যখন আইন সামাজিক মূল্যবোধ প্রকাশের এক উপায়, সেখানে রাষ্ট্রীয় ভাবে খুনের অনুমোদন, হত্যা এবং মাদক পাচারের ক্ষেত্রে কেবল একমাত্র নৈতিক ক্ষোভ প্রকাশের মাধ্যম নয়। এটা যাবজ্জীবনের মত বিকল্প শাস্তির মাধ্যমে সমান ভাবে প্রকাশ করা সম্ভব।

মৃত্যুদণ্ডের মত শাস্তি প্রদানের বিরোধীতাকারী জোট দি সিঙ্গাপুর ওয়ার্কিং গ্রুপ মৃত্যুদণ্ড বিষয়ে তার অবস্থান বর্ণনা করছে:

এর প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে শক্ত প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত সিঙ্গাপুরের পুনরায় শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড চালু করা উচিত নয়, বিশেষ করে যখন এর বিকল্প ধরনের শাস্তিও একই প্রভাব তৈরী করতে পারে। বিদ্যমান পদ্ধতির মাঝে মানব ভুলের যে অবশ্যম্ভাবিতা রয়েছে তা একই ভাবে ভুলক্রমে জীবন হরণের শাস্তির সম্ভাবনা তৈরী, যা ন্যায়বিচার সাধনের ক্ষেত্রে চরম শাস্তি প্রদানের ব্যবহারে আমাদের চরম মূল্য প্রদান করতে হয়।

সরকারের দিক থেকে সে বলছে যে, মৃত্যুদণ্ড অপরাধকে নিরুৎসাহিত করে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .