আয়তজিনাপা হত্যাকাণ্ড নিয়ে মেক্সিকোর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ধর্মঘট

Ayotzinapa en la UNAM 1 foto TRC

“তাদের জীবিত নেওয়া হয়েছে, তাদের আমরা জীবিত ফেরত চাই!” মেক্সিকোর আয়াতজিনাপাতে জাতীয় স্বায়ত্তশাসিত ইউনিভারসিটিতে। ছবিঃ লেখক, যে টাডেও। 

দক্ষিণ-পশ্চিম মেক্সিকোর গুয়েরেরো শহরের আয়তজিনাপাতে অবস্থিত রাউল ইসিদ্র বুরজস গ্রামীণ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হত্যার ঘটনায় মেক্সিকান সরকারকে ক্রমাগতভাবে চাপের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। নিখোঁজ শিক্ষার্থী যারা ২৬ দিনেরও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ তাদের জীবিত ফিরিয়ে আনতে হবে, জনগণের পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হচ্ছে।

অক্টোবর মাসের শুরুতে শিক্ষার্থীদের ফিরে পাওয়ার দাবিতে মেক্সিকানরা রাজপথে নেমে এসেছেন। একই উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পেশার জনগণ একত্রিত হয়েছেন। দেশটির শিক্ষার্থীরা এরপর ৪৮ ঘন্টার দীর্ঘ এক ধর্মঘটের ডাক দেয়।

মেক্সিকোর জাতীয় স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি অনুষদ এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। উল্লেখ্য এটি উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে দেশটির সবচেয়ে বড় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। তার সাথে সাথে মেট্রোপলিটন স্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ও এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। সংবাদ প্রচার এবং বিশ্লেষণকারী ওয়েবসাইট এনিমেল পলিটিকো ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন বিদ্যালয় এবং কলেজের নাম সম্বলিত একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।

Comunicado de las acciones a emprender por la Facultad de Derecho con motivo del paro nacional. Foto cortesía de http://juantadeo.wordpress.com/

জাতীয় এই আন্দলনের সময় স্কুল অব ল পদক্ষেপগুলো গ্রহন করবে। ছবিঃ  http://juantadeo.wordpress.com/

ওয়েবসাইট সোপিটাস বলছে, সাময়িকভাবে সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের এই জাতীয় পর্যায়ের আন্দোলনে ৭০ টিরও বেশি সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।

মারকো জাভালা নিচের ছবিটি শেয়ার করেছেনঃ

মৌলিক অধিকারের জন্য লড়াই করতে জাতীয় এই ধর্মঘটে আইন অনুষদ যোগ দিয়েছে!

আনা লিলিয়া মাতা বলেছেন, মোরেলস প্রদেশের স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য্য এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেনঃ 

আয়তজিনাপা শিক্ষকদের পক্ষাবলম্বন করে ইউএইএমের সভাপতি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

সানজুয়ানা মারটিনেজ প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনাকে এ সন্ত্রাসী ঘটনায় আক্রান্তদের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছেনঃ

এনরিক পেনা নিয়েতো সরকার কি ভাবছে, আয়তজিনাপা ট্র্যাজেডিতে আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের আর কতদিন লুকিয়ে রাখা হতে পারে? ৪৩টি পরিবারকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। #ইপিএনতাদেরফিরিয়েআনুন 

তবুও সবাই এই ধর্মঘটের পক্ষে ছিলেন না। টুইটার ব্যবহারকারী জোয়াকুইন এই আন্দোলন সম্পর্কে নিজের অবস্থানকে নিম্নোক্তভাবে ব্যক্ত করেছেনঃ 

জাতীয় পর্যায়ে আন্দোলন করে কোন ঘটনার উন্নয়ন ঘটানো যায়, এটা ভেবে নেয়ার অর্থ হচ্ছে মাঝারি মানের চিন্তার পরিচয় দেয়া। এ ধরনের চিন্তাচেতনাই এই দেশকে সামনে এগিয়ে যেতে দিচ্ছে না।

ব্যাপকভাবে বিস্তৃত এই অসন্তোষের ফলে সৃষ্টি হওয়া রাজনৈতিক অগ্নি ঝড়কে খাটো করে দেখা যাবে না। সাংবাদিক সিরো গোমেজ লেইভা বলেছেন, ২০১৪ সালের ২২ অক্টোবর দিনটি গুয়েরেরোর গভর্নরের জন্য অত্যন্ত শুভ একটি দিন ছিল। কেননা “তার মেয়াদের অবশিষ্ট দিনগুলোতে মেক্সিকোর ভেতরে এবং বাইরে ইগুয়ালার রাতটি তাকে তাড়া করে ফিরবে।” এর ফলে একটি ব্যাখ্যা প্রস্তুত করা শুরু করতে এবং গুয়েরেরো থেকে পদত্যাগ করতে তিনি একটি অজুহাত পাবেন। ইগুয়ালার রাতটিই সেই রাত যে রাতে নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে। যে ঘটনাটি আজকের এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে।

ধর্মঘটের রাজনৈতিক এবং আইনি ফলাফল ছাড়িয়ে যদি কোন সর্বনাশা ঘটনা ঘটে থাকে তা হচ্ছে মানবিক ট্র্যাজেডি এবং শিক্ষার্থীদের পরিবার পরিজনের দুঃখ বেদনা। যেসব শিক্ষার্থী তাদের জীবন হারিয়েছেন এবং যাদের হদিস এখনও অজানা তাদের পরিবার পরিজনের এই বেদনার প্রতি আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে।

মেক্সিকোর নিখোঁজ হওয়া #আয়তজিনাপা শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনুন শিরোনামে আমাদের বিস্তারিত সংবাদ কভারেজটি অনুসরণ করুন

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .