হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভ রঙিন ছাতা সমুদ্রে রূপ নিলো

Protesters used umbrellas to shield tear gas. Photo from Facebook group: Hong Kong Demo Now,

কাঁদানো গ্যাস থেকে বাঁচতে বিক্ষোভকারীরা ঢাল হিসেবে ছাতা ব্যবহার করছেন। ছবি তুলেছেন ফি ইয়াং।

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে ছাতা কি কখনো অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হতে পারে? আলবৎ পারে। হংকংয়ে শান্তিপ্রিয় গণতন্ত্রপন্থীরা সেটাই দেখিয়ে দিয়েছে। প্রকৃত গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দাবি আদায়ের বিক্ষোভে তারা মরিচের গুঁড়া, কাঁদানো গ্যাস এবং জলকামানের আক্রমণ থেকে বাঁচতে ছাতাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন।

২৮ সেপ্টেম্বরে সরকারের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ চলার সময়ে একটি ছবি নেয়া হয়েছে। সেখানে পুলিশের কাঁদানো গ্যাস থেকে বাঁচতে বিক্ষোভকারীদের নানা রঙে রঙিন ছাতা ব্যবহার করতে দেখা গেছে।

Carol Chan designed the poster for the "umbrella movement" in Hong Kong.

হংকংয়ের ছাতা আন্দোলন-এর লোগো ডিজাইন করেছেন ক্যারল চ্যান। এটাতে বলা হয়েছে, “তাইওয়ানে সূর্যমুখী আন্দোলন হয়েছে, আর হংকংয়ে হচ্ছে ছাতা আন্দোলন।”

বিদেশী মিডিয়া এই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচীকে “ছাতা বিপ্লব” হিসেবে অভিহিত করেছে। তবে “হংকং ডেমোক্রেসি নাউ” ফেসবুক পেজ বিদেশী মিডিয়ার অভিধা'র একটু সংশোধনী এনেছে। তারা একে “ছাতা আন্দোলন” নাম দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, ছাতা আন্দোলন বললেই এই কর্মসূচীর চরিত্রের সাথে ভালোভাবে যায়:

বিদেশি মিডিয়া এই আন্দোলনের নাম দিয়েছে “ছাতা বিপ্লব”। তবে একে ছাতা বিপ্লব বলা ঠিক হবে না। “ছাতা আন্দোলন” বললেই এটি আন্দোলনের চরিত্রের সাথে ভালোভাবে যায়।

আমাদের একমাত্র অস্ত্র হলো ছাতা। হটাৎ বৃষ্টি কিংবা রোদ থেকে বাঁচতে আমরা সবসময়ই ব্যাগে ছাতা রাখি। হংকংয়ের মানুষ স্বস্তি ছাড়া কিছুই চান না। আমরা যেমন মেঘাচ্ছন্ন আকাশ দেখতে চাই না, তেমনি চাই না আমাদের ওপর হঠাৎ করে কোনো ঝড় নেমে আসুক।
“ছাতা আন্দোলন” একটি সুনির্দিষ্ট প্রচারণার প্রতিনিধিত্ব করে। প্রবল বাতাস কিংবা ঝড়ের মুখে আমরা ফেরত যাবো না।

আন্দোলনকারীরা হংকংয়ের কেন্দ্রস্থল দখলের ডাক দিয়েছে। তাদের দাবি, ২০১৭ সালে হংকংয়ে যে প্রধান কর্মকর্তা নির্বাচন হবে, সেখানে বেইজিং যেন তাদের মনোনীত প্রার্থী দেয়ার বিষয়টি প্রত্যাহার করে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন দেয়। বিক্ষোভকারীদের কর্মসূচী অর্থনৈতিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত অ্যাডমিরালটি হয়ে বাণিজ্যিক এলাকা ক্রসওয়ে বে এবং মংককেও ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলন এতো তীব্র ছিল যে, ২৯ সেপ্টেম্বরে হংকংজুড়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল।

২৮ সেপ্টেম্বরে বেইজিংয়ের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত গ্লোবাল টাইম অকুপাই সেন্ট্রাল বা কেন্দ্রস্থল দখলের ওপরে একটি মন্তব্য প্রতিবেদন ছেপেছে। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, আন্দোলনকারীরা হংকংয়ের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ন করছেন। ছাতা সমাবেশ না পুলিশের কাঁদানো গ্যাস, জলকামান হংকংয়ের ভাবমুর্তি বেশি ক্ষুণ্ন করছে?

Screen capture from local Television - TVB.

স্থানীয় টেলিভিশন টিভিবি-এর স্ক্রিনশট।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .