জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিশ্বের বৃহত্তম কয়লা বন্দর অবরোধের পরিকল্পনা প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপবাসীর

Pacific Climate Warriors Vanuatu canoe launch. Photo credit: 350.org

ভানুয়াতুর প্রশান্ত মহাসাগরীয় জলবায়ু যোদ্ধাদের ডিঙ্গি নৌকার উদ্বোধন। ছবিঃ 350.org

৩৫০ ডট ওআরজির জন্য প্রবন্ধটি লিখেছেন এ্যারন প্যাকার্ড। এটি বিশ্বের জলবায়ু আন্দোলন পরিচালনাকারী একটি প্রতিষ্ঠান। প্রচার সূচী শেয়ার করা চুক্তির একটি অংশ হিসেবে প্রবন্ধটি গ্লোবাল ভয়েসেসে পুনরায় প্রকাশ করা হল।

এ বছরের অক্টোবর মাসে ১২ টি ভিন্ন ভিন্ন দ্বীপ থেকে আসা ৩০ জন প্রশান্ত মহাসাগরীয় জলবায়ু যোদ্ধা কয়লা এবং গ্যাস শিল্প রুখতে অস্ট্রেলিয়ার উপকূলে পৌঁছাবেন। নিজেদের হাতে তৈরি ডিঙ্গি নৌকাগুলো চালিয়ে তারা পৌঁছাবেন বিশ্বের বৃহত্তম কয়লা বন্দর – নিউক্যাসল– পোতাশ্রয়ে। এই কর্মসূচী পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে একদিনের জন্য কয়লা রপ্তানি বন্ধ রাখা।  

নিউক্যাসল বন্দরটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ জুড়ে নজিরবিহীন মাত্রায় পরিবেশের জন্য ধ্বংস রপ্তানি করে যাচ্ছে। এই পরিকল্পনা আরও বিস্তৃত করার প্রক্রিয়া চলছে। যদি বন্দরটিই একটি দেশ বলে বিবেচিত হত, তবে এটি কার্বন নিঃসরণকারীর তালিকাতে বিশ্বের নবম দেশ হিসেবে স্থান দখল করে নিত। জীবাশ্ম জ্বালানী শিল্পের উপর নির্ভরশীলতা থেকে যদি সরে আসা না যায়, তবে অনেকগুলো প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ সব প্রাকৃতিক সম্পদ হারিয়ে ফেলবে।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপবাসীরা এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের সাথে সমঝোতায় আসতে ২০ বছর পার করেছে। অস্ট্রেলিয়াকে তাদের কার্বন নিঃসরণ বন্ধ এবং তাদের জীবাশ্ম জ্বালানী উত্তোলন বন্ধ করতে কাকুতি মিনতি জানিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির হাত থেকে তাদের মাতৃভূমি এবং সংস্কৃতি রক্ষা করতে তারা এ চেষ্টা চালিয়ে আসছে। তবে কয়লা এবং গ্যাস শিল্প এখনও তাদের কথার বিপরীতে কাজ করে যাচ্ছে। তারা নজিরবিহীন হারে তাদের সম্পদ উত্তোলন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এভাবে তারা নবায়নযোগ্য জ্বালানী শিল্পকে ক্রমাগতভাবে আঘাত করছে। এটি আমাদের মাতৃভূমি এবং আমাদের সংস্কৃতির উপর এক মারাত্মক আঘাত।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় জলবায়ু যোদ্ধারা তাদের সংস্কৃতি এবং দ্বীপের ভবিষ্যতের জন্য এসব ঘটতে দেখে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারেন না। তাই সমগ্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে আসা দ্বীপবাসীরা অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং এ ভ্রমণের জন্য তারা তাদের এ অঞ্চলে প্রচলিত ঐতিহ্যবাহী ডিঙ্গি নৌকা তৈরি করছেন। বেশিরভাগ জলবায়ু যোদ্ধা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার এই যুদ্ধে অংশ গ্রহণের মাধ্যমে এই প্রথমবারের মতো তাদের সংস্কৃতির সাথে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করেছেন।

আগামী মাসে এই ঐতিহ্যবাহী ডিঙ্গি নৌকাগুলোতে চড়ে তাদের দ্বীপ ধ্বংস করা বন্ধ করতে ধ্বংসের উৎস বলে বিবেচিত স্থান অস্ট্রেলিয়াতে যাবে।

এটি একটি অবিশ্বাস্য, অবিস্মরণীয় পদক্ষেপ হতে যাচ্ছে। এ কর্মসূচীর মাধ্যমে একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠানো সম্ভব হবে যেঃ কয়লা শিল্প প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলোর ভবিষ্যৎ ডুবিয়ে দিবে আর আমরা চুপ করে বসে থাকব না। এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল একটি পদক্ষেপ। আর তাই আমাদের প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভিন্ন দল ডিঙ্গি নৌকাগুলো তৈরি করতে এবং এই ভ্রমণ সফল করতে স্থানীয়ভাবে তহবিল সংগ্রহের কাজ করে যাচ্ছে। এই খরচ বহনে প্রদত্ত যেকোন অনুদান যথার্থভাবে মূল্যায়ন করা হবে।

আপনি যদি অস্ট্রেলিয়াতে থেকে থাকেন বা কাছাকাছি থাকেন তবে আসুন আমাদের সাথে অংশ নিন। যত বেশি লোক আমাদের সাথে অংশগ্রহণ করবেন আমাদের বার্তাটি ততো বড় এবং ভালভাবে পৌঁছানো সম্ভব হবে। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এখানে রেজিস্ট্রেশন করুন। আর যারা অস্ট্রেলিয়ার বাইরে আছেন তারা ওয়েবসাইটটিতে ভিজিট করে দেখুন কীভাবে আপনি প্রশান্ত মহাসাগরীয় জলবায়ু যোদ্ধাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে পারেন।   

এরপর সবশেষে যা করতে পারেন তা হচ্ছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় জলবায়ু যোদ্ধাদের গল্পগুলো আপনি সারা পৃথিবীর সাথে শেয়ার করতে পারেন! 

Tokelau school-kids with canoe and banner which reads: "We Are Not Drowning We Are Fighting." Photo credit: 350.org

টোকেলাউ স্কুলের বাচ্চারা একটি ডিঙ্গি নৌকা এবং ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে লিখা আছেঃ “আমরা ডুবে যাচ্ছি না, আমরা যুদ্ধ করছি।” ছবি: 350.org

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .