#রাসুলেরজন্যবইঃ কারাবন্দী আজারবাইজানি মানবাধিকার কর্মীর কোনটি সবচেয়ে বেশি দরকার? বই।

Cover image of the #BooksForRasul Facebook page.

#রাসুলেরজন্যবই ফেসবুক পাতার কভার ছবি। 

আজারবাইজানের মানবাধিকার সক্রিয় কর্মী রাসুল জাফারভকে ২০১৪ সালের জুলাই মাসের শেষ দিকে লাগাতার কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় হাজির করা হয়েছে। পরবর্তীকালে ২ আগস্ট তারিখে বাকু থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজারবাইজানের নাসিমি জেলা আদালত জাফারভকে বিচার পূর্ব তিনমাসের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা বিতর্কিত অপরাধী অভিযোগের ক্ষেত্রে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। এই তরুণ সক্রিয় কর্মীকে আগামী ১৭ আগস্ট তারিখে তাঁর ৩০ তম জন্মদিন কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থাতেই কাটাতে হবে।

জাফারভ আজারবাইজানের একজন সুপরিচিত মানবাধিকার কর্মী। তিনি নিজে রাজনৈতিক বন্দী হওয়ার আগ পর্যন্ত “রাজনৈতিক বন্দীদের জন্য কাজ করেছেন”। তিনি মানবাধিকার ক্লাবের (এইচআরসি) প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি। ২০১০ সালে তিনি একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করেছেন। এনজিও’টির মূল লক্ষ্য হচ্ছে, আজারবাইজানের রাজনৈতিক বন্দীদের সম্বন্ধে নানা তথ্য উপাত্ত নথিভুক্ত করে রাখা। এইচআরসি প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি অনেক প্রশংসিত হয়েছেন। রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে শৃঙ্খলামূলক শাস্তি প্রদানের মাত্রা কতোটা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছিল তা আজারবাইজানে ২০১৩ সালের নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে ফাঁস হয়ে যায়। “গণতন্ত্রের জন্য গান গাও” (বর্তমানে এটি “গণতন্ত্রের জন্য শিল্প” নাম দেয়া হয়েছে) প্রচারাভিযানেও জাফারভ অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। প্রচারাভিযানের গানগুলো বাকস্বাধীনতা রুদ্ধকারীদের প্রতি আঘাত হেনেছে। গানগুলোতে ভিন্নমত প্রকাশকারী শিল্পীদের কথা তুলে ধরা হয়েছে, যারা তাদের রাজনৈতিক মতদ্বৈধের কারণে শাস্তির শিকার হয়েছেন।

জাফারভকে গ্রেপ্তার এবং তাকে শাস্তি প্রদানের জন্য বেশ কয়েকটি  আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাঁর পাশাপাশি তারা দেশটির মানবাধিকার সক্রিয় কর্মীদের উপর সরকারের চলমান শৃঙ্খলামূলক শাস্তি প্রদানের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছে। আরমেনিয়ান একটি সংবাদ প্রচারকারী ওয়েবসাইট প্যানোরামা ব্যাখ্যা করেছে, আজারবাইজানি সরকারের শৃঙ্খলামূলক শাস্তি প্রদানের পেছনে যে অস্বস্তিকর কারনগুলো কাজ করছে তা হলঃ 

অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে বলেছে, মানবাধিকার ক্লাবের (এইচআরসি) প্রতিষ্ঠাতা এবং আজারবাইজান কর্তৃক আয়োজিত ২০১২ সালের ইউরোভিসন সংগীত প্রতিযোগিতায় মানবাধিকার প্রচারণার পরিচালক রাসুল জাফারভের গ্রেপ্তার কেবলমাত্র একজন মানবাধিকারের রক্ষক হিসেবে তাঁর কাজের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে একটি পাল্টা দুর্ব্যবহার। বাকস্বাধীনতা এবং সাহচর্যের অধিকার চর্চা করার জন্য রাসুল জাফারভের প্রচেষ্টার যে যোগাযোগ তা থেকে তাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে আজারবাইজানে স্বাধীন মানবাধিকার এবং গনতন্ত্র পন্থী সংস্থাগুলো বহু দিন ধরেই বিভিন্ন হয়রানি এবং বাঁধা নিষেধের শিকার হয়ে আসছে। সরকার এনজিওগুলোর নিবন্ধন বাতিল করে দিয়েছে। ফলে এসব এনজিও’র নেতারা অত্যন্ত কঠোর এসব বৈধ কর্মকাঠামোর বাইরে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। এসব কার্যক্রমকেই কর্তৃপক্ষ পরে তাদের বিরুদ্ধে অপরাধী অভিযোগ আনতে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। গত চার মাসে যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সন্ত্রাসী অভিযোগের অজুহাত দেখিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাসুল জাফারভ তাদের মাঝে পঞ্চম।   

গত ৭ আগস্ট তারিখে একটি ফেসবুক ইভেন্ট শুরু করা হয়েছে। এতে জাফারভকে জন্মদিনের উপহার হিসেবে বই পাঠাতে লোকজনকে আমন্ত্রণ জানান হয়েছেঃ  

আমাদের ৩০ তম জন্মদিন আমরা কীভাবে পালন করতে চাই (বা চাইতাম) সে সম্পর্কে আমাদের সবারই কিছু কল্পনা এবং পরিকল্পনা থাকে। আমাদের মাঝে কেউই নিশ্চয় কারাগারে [একজন] রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে ৩০ বছরে পদার্পণ করতে চাইবো না।

এমিন মিলি হচ্ছেন একজন আজারি লেখক, ব্লগার এবং সক্রিয় কর্মী। তিনিও ২০০৯ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে কারাগারে ছিলেন। তিনি রাসুলকে […] বই পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এমিন বলেছেন, “বই কারাগারকে বই পড়ার স্বর্গে পরিণত করতে পারে”।  

এ বিষয়ে [আজারবাইজানি, ইংরেজী] আরও আপডেট জানতে ‘রাসুল জাফারভকে মুক্তি দাও!’ শিরোনামের ফেসবুক পেজটি আপনি অনুসরণ করতে পারেন। 

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .