বাংলাদেশে ডুবে গেছে অতিরিক্ত যাত্রীবাহী ফেরি; ২ জনের মৃত্যু, ১০০ জনেরও বেশি নিখোঁজ

Bangladeshi rescue workers search the waters where an overloaded ferry capsized in the Padma River in Munshiganj, some 30 kilometres (20 miles) south of the capital Dhaka. Image by Fahad Kaizer. Copyright Demotix (4/8/2014)

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিনে মুন্সিগঞ্জের কাছে পদ্মা নদীতে অতিরিক্ত যাত্রীবাহী ফেরি ডুবির স্থানে উদ্ধারকর্মীরা পানিতে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন। ছবিঃ ফাহাদ কাইজার। কপিরাইট ডেমোটিক্স (৪/৮/২০১৪)

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে মাওয়া নৌপথে পদ্মা নদীতে একটি যাত্রীবাহী ফেরি ডুবে গেছে। গত সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১১ টায় প্রবল স্রোতে পড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ফেরিটি ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছিল। ডুবে যাবার সময় সেখানে কমপক্ষে ২৫০ জন যাত্রী ছিল।

নদী থেকে যাত্রী উদ্ধারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। দুর্ঘটনায় অন্তত দুই জনের মৃত্যু হয়েছে এবং সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, আরো ১০০ জনের মতো নিখোঁজ রয়েছে

ফেরি ডুবে যাবার মুহূর্তটি এক অজানা ব্যক্তি কাছাকাছি একটি নৌযান থেকে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। ভিডিওটি রাইজিংবিডির মতো অনেক ব্যবহারকারী ইউটিউব এবং ফেসবুকে আপলোড করে এবং এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। 

পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোত এবং বড় বড় ঢেউের কারণে উদ্ধার অভিযানটি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। উদ্ধারকর্মীরা এখনো নিমজ্জিত ফেরির সঠিক অবস্থান চিহ্নিত করতে কাজ করছে।  

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশে এই ধরণের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এর কারণ, দেশের নৌপথে চলাচলকারী প্রায় ১০,০০০ নৌযানের দুর্বল নকশা ও মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা। বিশেষ করে, বিভিন্ন উত্সবের (ঈদ) সময়।

প্রবাসী ব্লগার হাসিব মাহমুদ এই দুর্ঘটনার কথা শোনার পর ফেসবুকে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন:

লঞ্চ ডুবি হইছে। শত শত লোক ডুবে মারার খবর কিছুক্ষণের মধ্যেই আসতে শুরু করবে।

যেটা হবে,
– সীমিত সম্পদ নিয়ে একটা উদ্ধার অভিযান
– ফেইসবুকে ঈদ পরবর্তি নতুন ইস্যু। স্ট্যাটাস, ইভেন্ট, ফান্ড কালেকশন।
– প্রচুর ক্যামেরা সহযোগে শাহবাগে মানববন্ধন

যেটা হবে না,
– ব্যাটারি রিক্সা থেকে শুরু করে বিমান পর্যন্ত যানবাহনের একটা কার্যকর কন্ট্রোলিং বা মান নিয়ন্ত্রন সিস্টেম গড়ে তোলা। এবং এই সিস্টেম যাতে গড়ে ওঠে সেটার জন্য একটা দীর্ঘমেয়াদি নাগরিক আন্দোলন (এঞ্জিওদের ফান্ড কালেকশন দৌঁড়ঝাপ বা বছরে একটা সংবাদ সম্মেলনকে আন্দোলন বলা হচ্ছে না এখানে) চালিয়ে যাওয়া।
– বিভিন্ন কাজে হাজার হাজার কোটি টাকার গল্প কদিন পর পর শোনা গেলেও যাত্রাপথের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য কোন টেকাটুকা বরাদ্দের খবর পাওয়া যাবে না।
– মৃতদের বহু লাশ খুঁজে পাওয়া যাবে না। জানাও যাবে না তারা কে ছিলো, তাদের নাম কী।
– এতোগুলো মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কোন বিচার হবে না।

Bangladeshi onlookers gather near the scene where an overloaded ferry capsized in the Padma river in Munshiganj

মুন্সিগঞ্জের পদ্মা নদীতে অতিরিক্ত যাত্রীবাহী ফেরি ডুবির কাছাকাছি স্থানে বাংলাদেশি দর্শক জড়ো হয়েছেন। ছবিঃ ফাহাদ কাইজার। কপিরাইট ডেমোটক্স (৪/৮/২০১৪)

টুইটার ব্যবহারকারী আ মুসে ডি ইরাতো দর্শক সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য লঞ্চ ডুবে যাওয়ার ভিডিওটি বার বার প্রচার করার জন্য স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলোকে অভিযুক্ত করেছেন:

তারা বলছে, গাজায় ইসরাইল মানবতাকে হত্যা করছে, আবার  টিআরপি বৃদ্ধির জন্য পদ্মায় লঞ্চ ডুবির ভিডিওটি তাঁরা বার বার দেখাচ্ছে #বাংলাদেশ 

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .