সাব সাহারা অঞ্চলের কয়েকটি সম্প্রদায়ের অনলাইনে উপস্থিতি নেই। ‘কুমুশা টেকস উইকি’ পরিস্থিতির পরিবর্তনে সাহায্য করতে ইচ্ছুক

Photo republished with permission from Kumusha Takes Wiki

উইকিআফ্রিকা থেকে নেওয়া কুমুশা টেকস উইকি (সিসি-বাই-এসএ ৩.০)

অনলাইন প্রবেশের জন্য সাব সাহারা আফ্রিকার নাগরিকদের কঠিন এক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, সম্প্রতি প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম-এর সংবাদ অনুসারে, সেবা পাওয়ার জন্য উচ্চ মূল্য প্রদান এবং দুর্বল অবকাঠামোর জন্য ইন্টারনেট সংযোগের ক্ষেত্রে এই অঞ্চলে অনেক পিছিয়ে পড়ে আছে।

ডিজিটাল এই বিভক্তির মানে আফ্রিকার কিছু সম্প্রদায় ওয়েব সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সমৃদ্ধ অনলাইন সুবিধা না থাকার মানে তাদের সম্বন্ধে বিভ্রান্তি তুলনামূলক ভাবে খুব সহজে ছড়িয়ে পড়া।

কুমুশা টেকস উইকি প্রকল্প ওই সমস্ত সম্প্রদায়ের কণ্ঠস্বর প্রদান করতে চায়। আফ্রিকার জনগণ যাতে উইকিপিডিয়ায় নিজেদের সম্বন্ধে নিজেরাই তথ্যে প্রদান করতে পারে এই উদ্যোগ তার জন্য কাজ করে যাচ্ছে, যাতে আফ্রিকার স্থানীয় সকল সম্প্রদায় সম্বন্ধে–এবং আরো বৃহৎ পরিসরে মহাদেশ সম্বন্ধে বিদেশীদের ধারণার স্তর আরো শক্তিশালী করা সম্ভব হয়। কুমুশা শব্দটি জিম্বাবুয়ের সোহানা ভাষা থেকে গ্রহণ করা হয়েছে, এই প্রকল্প অনুসারে এই শব্দের মানে ‘এমন এক স্থান, যেখান থেকে কেউ এই পৃথিবীতে আসে” । ।

সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, প্রসিদ্ধ ব্যক্তিত্ব, ভৌগলিক এলাকা, এবং অন্যান্য বিষয়ে প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহের জন্য [কুমুশা টেকস উইকি] ‘সম্প্রদায় সাংবাদিকতার’ ব্যবহার করে থাকে। এটি প্রতিটি সম্প্রদায়কে অনলাইনে উপস্থিতির সুযোগ করে দেয়, যার স্বত্ব সম্প্রদায়ের নিজের […] এবং তা এই গ্রহের সকল মানবের জন্য আফ্রিকাকে উপলব্ধি করার অসংখ্য উপাদান যোগ করছে

স্থানীয় সম্প্রদায় সম্বন্ধে বিদ্যমান সহজলভ্য তথ্য কেবল মাত্র সুনিদিষ্ট কিছু ভাষা এবং উপভাষায় পাওয়া সম্ভব। যদিও সোয়াহেলি, ইরুবা, জুলু এবং আফ্রিকানাস ভাষা সহ বেশ কিছু স্থানীয় আফ্রিকান ভাষায় উইকিপিডিয়া সহজলভ্য, তারপরেও এই সমস্ত সংস্করণগুলো তেমন উন্নত নয়, যার কারণ প্রদায়কদের সংখ্যা খুব অল্প। এ কারণে সমগ্র মহাদেশের নতুন সম্প্রদায়ের মাঝে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং উৎসাহ প্রদান জরুরী।

এটি বৃহৎ উইকিআফ্রিকার এক অংশ, যা ব্যক্তি এবং সংগঠনকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়ায়, আফ্রিকা এবং আফ্রিকার ইতিহাস, নাগরিক, নবধারা এবং সমসাময়িক অনেক বাস্তবতা নিয়ে অনলাইনে লেখার উপাদান তৈরী, সেগুলোর বিস্তৃতি এবং বৃদ্ধিতে উৎসাহ প্রদান করছে।

কুমুশা টেকস উইকি সেন্টার সম্প্রদায়কে “সচল” করার ক্ষেত্রে, দুটি রাষ্ট্রকে সামনে রেখে তার প্রাথমিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, আর রাষ্ট্র দুটি হচ্ছে আইভরি কোস্ট এবং উগান্ডা। লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বেছে নেওয়া এই দুই রাষ্ট্রের উইকিপিডিয়ান ইন রেসিডেন্টরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করছে, যেমন জেলে এবং কৃষি, বিশ্ববিদ্যালয়, লেখক এবং সীমান্ত শহরের বসবাসরত সম্প্রদায়, যাদেরকে স্থানীয় পরিবেশ এবং ঐতিহ্য সম্বন্ধে লেখার ক্ষেত্রে অবদান রাখা এবং সম্পাদনা সম্বন্ধে শিক্ষা প্রদান করা হবে।

কুমুশা টেকস উইকির প্রকল্প ব্যবস্থাপকের নাম ইসলা হাড্ডওয়া ফ্লাড, যিনি তার জীবনের বেশীরভাগ সময় দক্ষিণ আফ্রিকায় কাটিয়েছেন। স্কাইপ-এর মাধ্যমে মাধ্যমে ভদ্রমহিলা আমাদের জানিয়েছেন যে যাতে সকলে লাভবান হতে পারে এমন তথ্যে প্রদানের লক্ষ্যে এই প্রকল্প কাজ করে যাবে। এখন পর্যন্ত এই কাজে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে মোবাইল ফোনের কাভারেজ এবং প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগের অভাব, এবং কখনো কখনো ভাষার সীমাবদ্ধতা।

KTWc-w

উইকি আফ্রিকা থেকে পাওয়া কুমুশা টেকস উইকির ছবি (সিসি-বাই-এসএ ৩.০)

এছাড়াও, ছড়াতে থাকা ভুল তথ্য সংশোধনের সাথে এই প্রকল্প যুক্ত। আফ্রিকা সেন্টার, যেখানে এই প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে, সেখানে “তথ্যের ভিত্তিকে পুনরায় সঞ্জীবিত করার জন্য” আরো কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করা হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে [কিন্তু এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়]:

  • বাদিলিশা পোয়েট্রি এক্সচেঞ্জ- (বাদিলিশা কবিতা বিনিময়) প্রকল্প হচ্ছে কবিতা পডকাস্ট-এর এক স্থাপনা, যা স্থানীয় এবং প্রবাসী আফ্রিকার ঐতিহাসিক এবং সমসাময়িক কাব্যিক কণ্ঠের আবিষ্কার, প্রকাশ এবং সংরক্ষণে নিবেদিত।
  • এভরিডে আফ্রিকান আরবানিজম-(আফ্রিকার প্রতিদিনের শহুরে জীবন) হচ্ছে গবেষণা এবং হস্তক্ষেপমূলক এক গবেষণাগার যা আফ্রিকার সবচেয়ে জরুরী সামাজিক চ্যালেঞ্জ উপলব্ধি এবং সেগুলোর মোকাবেলার উপায় অনুসন্ধান করে। সম্প্রতি গবেষণাগার দক্ষিণ আফ্রিকার শহরসমূহে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে মনোযোগ প্রদান করছে।
  • উইকি আফ্রিকার আরো কিছু কর্মসূচি, যার মধ্যে রয়েছে উইকিএন্ট্রারপ্রেনর, এক সামাজিক বাণিজ্য মডেল, যা উইকিপিডিয়ায় তথ্য প্রদানের জন্য আফ্রিকার যাদুঘর, লাইব্রেরি, গ্যালারি এবং পত্রিকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কাজ করছে এবং উইকিআফ্রিকা কালচার এন্ড নলেজ, যা আফ্রিকার সংস্কৃতির প্রসারে লেখক, বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ এবং বিভিন্ন সংরক্ষণকারী সংগঠন-এর সাথে কাজ করছে

যেমনটা তারা উইকি আফ্রিকায় বলছে, একসাথে, এই সকল প্রকল্পের মাধ্যমে আশা করা হচ্ছে, সারা বিশ্বে তারা “ নিজ সম্প্রদায়ের জ্ঞান এবং প্রবল উৎসাহ তুলে ধরছে”।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .