হংকং এ পূর্বসূরীদের জন্য হতাশার কারণ হচ্ছে সম্পত্তির দাম

Hong Kong is one of the world most expensive city because of its sky high property price. Photo from Flickr user Christopher Lance CC: AT-NC-SA

পৃথিবীর অন্যতম ব্যয়বহুল শহর হচ্ছে হংকং। উচ্চ সম্পত্তির মূল্য এর প্রধান কারণ। ছবিটি ফ্লিকার ব্যবহারকারী Christopher Lance CC: AT-NC-SA এর কাছ থেকে পাওয়া। 

বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় হংকং শীর্ষ স্থান দখল করার একটি বিশেষ কারন রয়েছে। রাজধানী এই শহরে সম্পত্তির দাম আকাশচুম্বী। এখানে ১,১০২ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ৭০ লক্ষেরও বেশি লোক বসবাস করে। কেননা, শহরটিকে আরও বিস্তৃত করার মতো যথেষ্ট জমি চারপাশে নেই।

শহরটিতে জীবন যাত্রার মান খুব উন্নত এবং কাজের প্রচুর সুযোগ আছে বলে পূর্বসূরীরা দলে দলে এখানে এসে ভিড় করে। কিন্তু অনেকেই বলেন, গড়পড়তা শ্রমিকদের জন্য বাড়ি ভাড়া এখানে খুব বেশি।

বেনেটলিয়াং জীবন যাত্রার উচ্চ মূল্য নিয়ে এশিয়া এক্সপাট ফোরামে তাঁর দুর্দশার কথা বর্ণনা করেছেনঃ 

হংকং দ্বীপের পাশে সবচেয়ে কম মূল্যের ৩০০ ফিট এপার্টমেন্টের ভাড়া কমপক্ষে ৬-৭ হাজার সিঙ্গাপুর ডলার, যা আপনার বেতনের অর্ধেক। দ্বিতীয় আরেকটি উপায় হচ্ছে, মাদকদ্রব্য আসক্ত লোকজন এবং পতিতা, অর্থাৎ সমাজের বঞ্চিত শ্রেণীর মানুষের বসবাস রয়েছে এমন কোন এলাকার পাশে বাস করা। সেখানে সব ভাড়াটিয়া একই শৌচাগার ব্যবহার করে। সেখানে ঘর ভাড়া নেমে আসবে ২৫০০ সিঙ্গাপুর ডলারে। বাস্তবতা জানুন, হংকং এ সম্পত্তির দাম অত্যন্ত বেশি। 

হংকং এ বিত্তবান পাড়ার আশেপাশে একটি শোবার কক্ষ আছে এমন মধ্যম মানের অর্থাৎ প্রায় ৪৫০ থেকে ৬০০ বর্গ ফুট জায়গা বিশিষ্ট একটি ফ্ল্যাটে গড়পড়তা একজন শ্রমিককে একা বাস করতে হলে মাসিক ১২,০০০ থেকে ১৬,০০০ হং কং ডলার ভাড়া পরিশোধ করতে হবে, যা ১,৫৪৮ থেকে ২,০৬৪ মার্কিন ডলারের সমতুল্য। এর চেয়ে বড় বাসা ভাড়া নিতে হলে মাসিক ২০,০০০ থেকে ৪৫,০০০ হংকং ডলার (অর্থাৎ ৩,৮৭০ থেকে ৬,৪৪৯ মার্কিন ডলার) পরিশোধ করতে হবে। শুধু স্বামী স্ত্রী অথবা একটি বাচ্চা সহ কোন দম্পতিযাদের আরও বড় ফ্ল্যাটের প্রয়োজন হবে তাদেরকে আরও বেশি ভাড়া পরিশোধ করতে হবে।

অবশ্য পূর্বসূরীরা যদি বাণিজ্যিক এলাকাগুলো থেকে একটু দূরে বসবাস করতে চান, যেমন লানতাউ দ্বীপের মতো প্রত্যন্ত এলাকা, তবে বাণিজ্যিক এলাকার চেয়ে অর্ধেক ভাড়ায় থাকতে পারবেন। কেন্দ্রীয় এসব জেলায় ফেরীতে বা রেলপথে যেতে প্রায় ৬০ মিনিট সময় লাগে। বস্তুত বেশিরভাগ পূর্বসূরী যারা তাদের কর্মস্থল থেকে বাসস্থান ভাতা পান না, তারা এসব প্রত্যন্ত দ্বীপ এবং নতুন কর্মক্ষেত্রগুলোতে বসবাস করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

হংকং এ জীবন যাত্রার কিছু ইতিবাচক দিকও আছে। যেমন, এখানে বিদ্যুৎ, পানি বা গ্যাসের দাম খুব কম, মোবাইলের বিল কম, ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ এবং যাতায়াত খরচ খুব কম। উদাহরণ স্বরূপ এএক্সপিটিগাই৩৮ খরচগুলোকে মূল্যায়ন করেছেনঃ 

হ্যাঁ, হংকং এ বাড়ি ভাড়া খুব বেশি। তবে এখানে ট্যাক্সের হার খুব কম, গণ পরিবহন, পোশাক পরিচ্ছদ এবং খাবারের খরচ খুব কম। 

আবাসন বাজার শান্ত করতে সরকার কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এর ফলে আবাসিক সম্পত্তির মূল্য ধীরে ধীরে কমে আসবে। তাছাড়া শাম শুই পো এবং ইন মা অন শানের মতো লাভজনক এলাকাগুলোতে সরকার বৃহত্তর পরিসরে আবাসন ব্যবস্থা উন্নত করছে। তাই এসব এলাকার স্থানীয় অধিবাসীদের কাছে স্বল্প মূল্যে আবাসিক ফ্ল্যাটগুলো বিক্রি করা হবে। এতে করে বিনিয়োগকারীরা তাদের সম্পত্তি ভাড়াটেদের কাছে ভাড়া দিতে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।

স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য স্বল্প মূল্যের আবাসন ব্যবস্থা আজ একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। যদিও আশা করা যাচ্ছে, সম্পত্তির মূল্য ২০১৫ সাল নাগাদ শতকরা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমে যাবে। কিন্তু যেহেতু ২০০৮ সাল থেকে ২০১২ সালে হংকং এ সম্পত্তির মূল্য দ্রুত বেড়ে শতকরা ১১৭.২ শতাংশে পৌঁছেছে, তাই স্থানীয় মধ্যবিত্ত শ্রেনীর কাছে সম্পত্তির মূল্য এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে। পূর্বসূরীদেরকে অনিবার্যভাবে শহরের জীবন যাত্রার উচ্চ মূল্যের সাথে ক্রমাগতভাবে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। 

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .