রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে জুলাই মাসে থাইল্যান্ডে নতুন নির্বাচন

Anti-government protesters gather at a rally showing their loyalty to King Bhumibol Adulyadej. Protesters are demanding the resignation of the Prime Minister. Photo by Sanji Dee, Copyright @Demotix (5/5/2014)

সরকারবিরোধীরা সমাবেশ করে রাজা ভুমিবল আদুলিয়াজের প্রতি আনুগত্য জানাচ্ছেন। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার পদত্যাগ দাবি করছেন। ছবি তুলেছেন সন্জি দে। স্বত্ত্ব: ডেমোটিক্স (৫/৫২০১৪)।


খুব বেশিদিন হয়নি, পিপলস ডেমোক্রেটিক রিফর্ম কমিটি'র (পিডিআরসি) নেতৃত্বে সরকারবিরোধীরা নির্বাচন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল। তবে নির্বাচন বন্ধ করা যায়নি। ফেব্রুয়ারিতে থাইল্যান্ডে সেই নির্বাচন হয়ে গেছে। তবে নির্বাচনের পরে হলেও শেষ হাসি হেসেছে কিন্তু সরকারবিরোধীরা। কারণ, আগামী ২০ জুলাই নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রাকে স্বল্প সময়ের জন্য ক্ষমতার স্বাদ নিতে দিলেন অবরোধকারীরা। তবে ইংলাকের বিরুদ্ধে দুটি গুরুতুর দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে।

আগামীকাল ৭ মে ২০১৪-এ ইংলাকের বিরুদ্ধে অভিযোগের রায় দেয়া হবে। দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে ইংলাককে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ করা হতে পারে।

তাহলে কি থাইল্যান্ডের অধিবাসীরা ছয়মাসের কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় দফা ভোট দিতে যাচ্ছেন?

একের পর এক নির্বাচনের ফলে থাইল্যান্ডের সাধারণ মানুষ আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ভীত রয়েছেন। তবে বেশিরভাগ মানুষ বিশ্বাস করেন, এই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে প্রায় দশকব্যাপী রাজনৈতিক সংকটের সমাধান হবে। উল্লেখ্য, এই কয় বছরে থাইল্যান্ড ৬ জন প্রধানমন্ত্রী, ৫টি সরকার, ৩টি নির্বাচন এবং একটি সামরিক অভ্যুত্থান দেখেছে। নতুন এই নির্বাচনের জন্য ব্যয় হবে ১২৭ মিলিয়ন মার্কিন, যা করদাতাদের ওপরে চাপ ফেলবে। এই করদাতাদের অনেকেই পিডিআরসি'র সমর্থক। এরা এর আগের নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। এবারের নির্বাচনও যদি বাতিল বা রদ হয় তাহলে প্রত্যেকের টাকা, সময়, সম্পদের অপব্যয় হবে।

বিরোধীরা গত ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। তাদের বক্তব্য ছিল, প্রধানমন্ত্রীর পরিবারকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে না। তারা নির্বাচন বাতিলের দাবিতে তিন মাসের বেশি সময় ধরে রাজপথ অবরোধ করে রেখেছিলেন।
থাইল্যান্ডের অনলাইন জগতের মানুষজনের আলোচনা দেখে মনে হচ্ছে, ভোটাররা নির্বাচন নিয়ে দু:খভারাক্রান্ত:

পানটিপ ওয়েব বোর্ডে চাইচল এমসিএফসি লিখেছেন:

আমি মনে করি না নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এটা সরকারের কারণে না। এটা সুথেপ ও তার সহযোগীদের কারণে হবে না। সে বলেছিল, সে গত মাসে দেশের সংস্কার করবে। কিন্তু সে কিছুই করতে পারে নাই। বরং রাস্তায় রাস্তায় টাকার জন্য ভিক্ষা করেছে।

১২০৪৯৬২ আরেকটি অভ্যুত্থানের দরকার বলে মন্তব্য করেছেন:

আমরা ইতোমধ্যে ঘর ভেঙ্গে দিয়েছি। ক্ষমতা জনগণের কাছে আবার ফিরে এসেছে। তাহলে সংকট সমাধানে আমরা আর কি করতে পারি। শুধুমাত্র আরেকটা অভ্যুত্থান দরকার।

পিআরডিসি'র সমর্থকরা জনগণের কাছে গিয়ে নির্বাচন বানচালের আহবান জানাচ্ছেন।

পিডিআরসি'র নেতা সুথেপের ফেসবুক পেজে ‘নির্বাচনের আগে সংস্কার নয়'এর পক্ষে সমর্থন জানিয়ে স্রোতের ন্যায় হাজারো মন্তব্য আসছে। ম্যাক্স চাকরিট লিখেছেন:

থাইল্যান্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন কাজে আসে না। কেন না, বেশিরভাগ মানুষ হলেন স্বল্প শিক্ষিত (অন্যান্য দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন ভালো)। এই জন্য থাই অধিবাসীদেরকে সহজেই উদ্দেশ্যসাধনের কাজে লাগানো যায়…

পর্ন প্রামুলসাপ মন্তব্য করেছেন:

দেশ কে চালাচ্ছে, সেটা ব্যাপার না। সবচে’ বড়ো কথা হলো তারা কৃষকের সাথে প্রতারণা করতে পারবে না।

সামনের কয়েক সপ্তাহ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ে নির্বাচন নিয়ে যাবতীয় পরিকল্পনা করা হবে। এখানে দুটি প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। একটি ইংলাক সিনাওয়াত্রা স্বয়ং। তার বিরুদ্ধে দুটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তিনি সেটা থেকে রক্ষা পাবেন কি না তা কেউ জানে না। আরেকটি হচ্ছে মে মাসের ২৫ তারিখে প্রার্থী নিবন্ধন প্রক্রিয়া। এটাকে খুব দক্ষতার সাথে করতে হবে। প্রার্থী নিবন্ধন প্রক্রিয়া যদি সফলভাবে হয়, তাহলে ভালোভাবে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা জাগবে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .