চীনের প্রবৃদ্ধির গতি ধীর, অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে

চীনের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ২০১৪ সালের প্রথম চতুর্থাংশে বেড়ে দাঁড়িয়েছে শতকরা ৭.৪ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির এই হার ২০১২ সালের তৃতীয় চতুর্থাংশ থেকে এ পর্যন্ত সময়ে সবচেয়ে কম। এতেই বোঝা যাচ্ছে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি ধীরে ধীরে কমে নিচের দিকে নামছে।

এই প্রবৃদ্ধি আগের সকল পূর্বাভাসকে মিথ্যা প্রমাণ করেছে। তবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবৃদ্ধির হার শতকরা ৭.৭ ভাগ নিচে রয়েছে।

GDP

সাংঘাই শহরের দিগন্ত। ইউকু থেকে নেওয়া।

প্রকাশিত অন্যান্য তথ্য উপাত্ত থেকে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের মার্চ মাসের চেয়ে এ বছরের মার্চ মাসে শিল্প ক্ষেত্রে উৎপাদন শতকরা ৮.৮ ভাগ বেড়েছে। তবে এই হার প্রত্যাশ্যার চেয়ে কম। মার্চ মাসে খুচরা বিক্রয়ের প্রবৃদ্ধির হার নিবন্ধন করা হয়েছে শতকরা ১২.২ ভাগ। এই বৃদ্ধি দেশীয় পণ্য সামগ্রী ভোগের পরিমাণ বাড়াতে সরকারের প্রচেষ্টার একটি নিদর্শন।

চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, আগের তথ্য উপাত্তে চীনা অর্থনীতিতে দুর্দিনের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। বছরের প্রথম চতুর্থাংশে আমদানি এবং রপ্তানি উভয়ই কমে গেছে।

চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং ঘোষণা দিয়েছেন, দেশটি এই অর্থনৈতিক স্থবিরতার মুখে কোন রকমের প্রণোদনা পরিকল্পনা গ্রহণ করবে না। তাঁর এই ঘোষণা দেয়ার এক সপ্তাহ পরে ১৬ এপ্রিল, ২০১৪ তারিখে নতুন এই পরিসংখ্যান রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ২০০৯ সালে আর্থিক সংকটের সময়ে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি যখন বেশ ধীর হয়ে যায়, তখন চীন এতে গতি সঞ্চার করে। চীনা অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির হার অব্যাহত রাখতে তারা বিশাল পরিসরে দেশজ প্রণোদনার পরিকল্পনা চালু করে।

এখন যেহেতু ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে মন্দা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছে, তাই চীন কিছু অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে প্রবৃদ্ধিতে ধীর গতি থেকে শুরু করে অনিশ্চিত ছায়া ব্যাংকিং থেকে সৃষ্ট আর্থিক ঝুঁকিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

চীনা সরকার তাঁর বর্তমান নেতৃত্বের অধীনে ২০১৪ সালের জন্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৭.৫ শতাংশ।

টুইটারের মতো একটি মাইক্রো ব্লগ লেখার সাইট সিনা ওয়েইবো। এখানে “কান্ট ফাইন্ড অবজেক্ট” নামের একজন ব্যবহারকারী অর্থনীতির এই ধীরতার কিছু সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সাবধান করে দিয়ে বলেছেনঃ 

欧美人口基本稳定了,经济体系工业体系也稳定了。中国人口现在还在增长,而且经济体系也没全面转型到工业化现代化自动化,所以经济增长缓不得,一缓就是大量的就业压力和失业问题。但也不能太多,太多了就是虚高,或者是透支性成长

বাস্তবিক অর্থে ইউরোপ এবং আমেরিকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের মতো তাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও যথেষ্ট স্থির। চীনের জনসংখ্যা এখনও বাড়ছে। আর চীনের অর্থনীতি এখনও এমন একটি ধাপে পৌছাতে পারেনি, যেখানে শিল্প ক্ষেত্রে ব্যাপক হারে স্বয়ংক্রিয় এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। অতঃপর, আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কমিয়ে দেয়া যাবে না। কেননা, এতে করে বেকার সমস্যা বেড়ে যাবে। কিন্তু প্রবৃদ্ধির হার খুব উচ্চ হওয়া যাবে না। কারন এতে করে এটি এমন একটি প্রবৃদ্ধি মডেল দাঁড়াবে যেটি অন্য সবকিছুর মূল্যে অর্জন করতে হবে।

চীনা কর্মকর্তাদের প্রকাশিত পরিসংখ্যান সত্য কিনা তা নিয়ে ডানিয়া অভিযোগ করেছেনঃ

从不相信统计局发布的数据!假打。

আমি কখনও জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর দেয়া হিসাবে বিশ্বাস করি না। এগুলো বানোয়াট। 

আর্থিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ক গবেষক ডংডেং আশ্বস্ত করে বলেছেনঃ 

6%至8%的GDP增长率,将是我国未来30年的适度增长区间,这也是保证高质量经济增长的重要前提。地方政府切莫喜快贪功,不顾长远利益及经济增长质量,片面追求高速度,结果一定是透支后代、害人害己的。当务之急必须推行经济转型、产业升级战略。一季度GDP同比增7.4% 仍在合理区间。 

আগামী ৩০ বছরে প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশ থেকে ৮ শতাংশ হলেই তা চীনের উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট। উচ্চ-মানের উন্নয়নের জন্য এই হার একটি প্রতিজ্ঞাও বটে। স্থানীয় সরকারের উচিৎ ক্ষীণ দৃষ্টি বাদ দেওয়া এবং কেবলমাত্র প্রবৃদ্ধির হারের দিকে না তাকিয়ে থাকা। নতুবা এই আচরণ আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অনেক ক্ষতি করে ফেলবে। অর্থনীতির পুনর্গঠন এবং শিল্প খাতের উন্নয়ন সাধন করা আমাদের করনীয় বিষয়ের মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রবৃদ্ধির হার ৭.৪ শতাংশের অর্থ হল, এটি এখনও পরিমিত সীমার মধ্যেই রয়েছে। 

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .