নেপাল এয়ারলাইনসের বিমান দূর্ঘটনায় ১৮ জন আরোহীর সবাই নিহত

Image from Wikimedia Commons by Wolfgang Soshin Drechsler. CC BY-SA 3.0

নেপাল এয়ারলাইন্সের একটি ডি হাভিল্লান্ড কানাডা ডিএইচসি-৬ টুইন ওটার বিমান, যেটি দুর্ঘটনা কবলিত বিমানটির অনুরুপ। ছবিটি অলফাং সশিন এর তোলা। উইকিমিডিয়া কমনস এর সৌজন্যে ব্যবহৃত। CC BY-SA 3.0

দুর্ভাগ্যবশত একটি টুইন ওটার বিমান ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ তারিখে মধ্য-পশ্চিম নেপালের ম্যাসিন বনাঞ্চলে দূর্ঘটনায় পতিত হওয়ায় ১৮ জন আরোহীর সবাই মারা গেছে।

রবিবার নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর ১ টার পর রাষ্ট্রীয়-মালিকানাধীন নেপাল এয়ারলাইনস কর্পোরেশনের বিমানটির সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয় কিছু যুবা সোমবার সকালে বিমানটির ধ্বংস প্রাপ্ত অংশগুলো খুঁজে পায়। তাঁরা সেখানে তুষার নিয়ে খেলছিল। তারাই নেপালি অনলাইন পত্রিকা সেতোপাতিকে বিমানটির বিষয়ে জানায়। বিমানটি হয়তো কোন পর্বতের গায়ে ধাক্কা খেয়েছে, যার ফলে এই দূর্ঘটনা ঘটেছে।

এনএসি’র ৯এন-এবিবি বিমান দূর্ঘটনার স্থল। মধ্য-পশ্চিম নেপালের আরঘাখানছি জেলার সুপাডেউরালি মন্দিরের ২ কিলোমিটার পশ্চিমে এই ঘটনাস্থলটি অবস্থিত।   

ইন্সটিটিউট অব মেডিসিন (আইওএম) থেকে মেডিকো নামের একজন চিকিৎসক টুইট করেছেনঃ 

দুঃসংবাদ। আর কি বা হতে পারতো। একই খবর জানতে পারলাম। নেপাল এয়ারলাইনসের বিমানটির ১৮ জন বিমানযাত্রীর সবাই মারা গেছেন। 

সাংবাদিক ভবসাগর ঘিমিরে বিমানটির আগের একটি ছবি টুইট করেছেনঃ  

বিমানটি ২৪ এপ্রিল, ২০১০ তারিখে একজন রোগীকে জুমলা বিমানবন্দর থেকে নেপালগঞ্জে নিয়ে গেছে।  

ব্লগ মাইসানসার রিপোর্ট করেছে, বিমানটি ৪৩ বছরের পুরনো ছিল। এটি ১৫ জন যাত্রী এবং ৩ জন ক্রু বহন করছিল। যাত্রীদের মাঝে একজন ডেনমার্কের অধিবাসী ছিলেন এবং সেখানে একটি শিশু ছিল। তালিকা অনুযায়ী ২০১৪ সালে বিমানটিকে কর্মবিরতিতে নেয়ার কথা ছিল।

জার্মানি থেকে রজন ভট্টরাই টুইট করেছেনঃ 

নেপালে আরেকটি বিমান দূর্ঘটনার কথা শুনে খুব দুঃখবোধ করছি। এনএসি’র ৪৩ বছরের পুরনো বিমান – ঘটনাটির মূল কারণ হলেও খারাপ আবহাওয়া এবং বিমান চালকের উপর দোষ চাপানো হবে। 

যেদিন ঘটনাটি ঘটেছে, সেদিন সারা দেশ জুড়ে আবহাওয়া খুব খারাপ ছিলঃ 

যাদের অনুমতিতে এই খারাপ আবহাওয়াতেও বিমানটি চালানো হয়েছে, তাদেরকে শাস্তি দেয়া উচিৎ।   

মাইসানসার আরও রিপোর্ট করেছে যে, যদিও বিমানটি বেশ পুরনো ছিল, তথাপি বিমানটি ২৫ জুন ১৯৯২ তারিখে কেবল একবারই দূর্ঘটনায় পতিত হয়। সে ঘটনায় বিমানটি জুমলা বিমানবন্দরের রানওয়েতে পিছলে পড়ে। কংগ্রেস কর্মীরা ৩০ লাখ ভারতীয় রুপি (প্রায় ৪,৮০০ মার্কিন ডলার) লুণ্ঠনের জন্য ৪০ বছর আগে বিমানটি ছিনতাইও করেছিল। কেননা বিমানটিতে টাকাগুলো বহন করা হচ্ছিল।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নেপালের বিমান চালনা শিল্পে বেশ কতগুলো দূর্ঘটনা ঘটে গেছে। ২০১০ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত, এই তিন বছর সময়ের মধ্যে প্রতি বছরেই দু’টি করে ভয়াবহ বিমান দূর্ঘটনা ঘটে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেপাল থেকে ইউরোপের ২৮ টি দেশে বিমান চালনা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। 

১৯৪৯ সাল থেকে বিমান দূর্ঘটনায় প্রায় ৭০০ জনেরও বেশি লোক মারা গেছেন।  

বিমান দূর্ঘটনা সম্পর্কিত খবরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবল আন্দোলনের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই গভীর সমবেদনা জানিয়ে অনেক বার্তা পাঠাচ্ছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই টুইট করেছেনঃ 

এনএসি বিমান দূর্ঘটনা এবং ১৮ টি তাজা মূল্যবান প্রাণের মৃত্যুতে আমি বিস্মিত। সেসব শোকাহত পরিবারের প্রতি রইলো আমার হৃদয় নিংড়ানো সমবেদনা! 

পিয়াসি টুইট করেছেনঃ 

[তারা বলেছে] এভারেস্ট পর্বতে আরোহণ করতে হলে প্রচন্ড সাহস থাকা দরকার। তবে নেপালি বিমানে ভ্রমণ করতে হলে তাঁর চেয়েও হাজার গুন বেশি সাহস থাকতে হয়। 

অবশ্যই, সাম্প্রতিক সময়ের বিমান দূর্ঘটনার ফলে নেপালের আকাশে বিমানে ভ্রমণ করাটা আরও বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে বলে মনে হচ্ছে।  

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .