সৌদি আরবের কোন নাগরিক দেশের বাইরে যুদ্ধ করলে অথবা কোন “ধর্মীয় ও চরমপন্থী দলের সদস্য” হলে, তাঁদের কারাগারে দণ্ডিত করা হবে বলে একটি রাজকীয় ফরমান জারি করেছেন সৌদি আরবের বাদশাহ আবদুল্লাহ। এই ডিক্রি সামাজিক মিডিয়া নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।
সৌদি আরবের কয়েক হাজার জনগণ সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। তাঁদের মধ্যে তরুণ যোদ্ধারাও রয়েছেন। এই ক্ষেত্রে কাকে দোষারোপ করা হবে তা নিয়ে সৌদি মিডিয়া বিতর্কে জড়িয়েছে। মিশর মুসলিম ব্রাদারহুডকে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ বলে ঘোষণা দেওয়ার পর পরই এই ডিক্রিটি জারি করা হল।
সরকারী সৌদি বার্তা সংস্থা রিপোর্ট করেছে:
আজ একটি রাজকীয় আদেশে বলা হয়েছে, কিংডমের বাইরে যারা যুদ্ধবিগ্রহে অংশগ্রহণ বা এর সাথে জড়িত আছেন অথবা মৌলবাদী ধর্মীয় ও বুদ্ধিজীবী গোষ্ঠী বা এরকম স্রোতে যোগদান করেছেন, তাঁদের ন্যূনতম তিন বছর এবং অনধিক বিশ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। তবে, সশস্ত্র বাহিনীর কোন সদস্য এরকম কাজে জড়িত থাকলে তাঁদের শাস্তির মেয়াদ ন্যূনতম পাঁচ বছর এবং সর্বোচ্চ ত্রিশ বছর বৃদ্ধি করা হবে।
আরব ফরমানে কিন্তু, “মৌলবাদী ধর্মীয় গ্রুপ” উল্লেখ করা হয়নি বরং “ধর্মীয় এবং চরম” শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করা হয়েছে। এই অস্পষ্ট ভাষা ব্যবহারের জন্য এর সমালোচনা শুরু হয়েছে। কিছু টুইটার ব্যবহারকারীরা এমনকি একটি হ্যাশট্যাগ শুরু করেছেন: “বাদশাহ আব্দুল্লাহ মুসলিম ব্রাদারহুড দলকে বহিষ্কার করেছেন।”
পলিটিকাল সায়েন্সের শিক্ষক খালিদ আল-দেখায়েল বলেছেন, এই ডিক্রি প্রকৃত অর্থেই মুসলিম ব্রাদারহুডকে আইন বিরুদ্ধ বলে ঘোষণা করেছেঃ
تحديد الأمر “للتيارات أو الجماعات … الدينية … أوالمصنفة كمنظمات إرهابية داخلياً أو إقليمياً أو دولياً” يشمل الإخوان بعد تصنيف مصر لهم.
— Khalid al-Dekhayel (@kdriyadh) February 3, 2014
“ধর্মীয় দল অথবা জাতীয়, আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যারা সন্ত্রাসী বলে ঘোষিত” তাঁদের নির্দিষ্ট করণের এই ঘোষণায় মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুডকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
সৌদি টুইটার ব্যবহারকারী সুলতান আল ফিফি লক্ষ করেছেন, ধর্মীয় গ্রুপগুলোকে অবৈধ ঘোষণার মধ্যে শরিয়া আইনের উদ্ধৃতির মধ্যে কূটাভাস রয়েছে:
انطلاقًا من “مقاصد الشريعة الإسلامية”، سنجرم كل من ينتمي إلى جماعة الإخوان المسلمين التي تتاجر بالدين لأهداف سياسية.
— سلطان الفيفي (@SultanAlfifi) February 3, 2014
ইসলামী শরিয়ার উদ্দেশ্যের ভিত্তিতে, যারা মুসলিম ব্রাদারহুডে যোগদান করবে আমরা তাঁদের অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করব। কারণ, তাঁরা রাজনৈতিক ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য ধর্ম ব্যবসা করে।
টুইটার ব্যবহারকারী আবদুল্লাহ আল আওলাহ ১৯৬০ সালের একটি সংবাদপত্রের শিরোনাম পোস্ট করেছেন, যখন সৌদি আরব মিশরে গামাল আবদেল নাসের এর জাতীয়তাবাদী শাসনের বিরুদ্ধে মুসলিম ব্রাদারহুডকে সমর্থন জানিয়েছিল। শিরোনামটিতে বলা হয়েছেঃ “প্রিন্স ফয়সাল: আল্লাহর ইচ্ছায় মুসলিম ব্রাদারহুড তাদের আত্মা এবং অর্থ দিয়ে লড়াই করছে।”
#أمر_ملكي_بعقوبات_أصحاب_التيارات_والأحزاب_والفتنة يعني إلّي يقول زي كذا حيعاقب: pic.twitter.com/o9ZveBVKnZ
— عبدالله يوسف العُولة (@Alawlah) February 3, 2014
এর অর্থ হচ্ছে, যারা এই কথা বলবে তাঁদের দণ্ডিত করা হবে।