অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আনীত নির্যাতনের অভিযোগ উপেক্ষা

Australian Prime Minister Tony Abbott visits the Sri Lanka Navy vessel Sayura in Colombo, Sri Lanka. Photo by Chamila Karunarathne, Copyright @Demotix (11/17/2013)

কলোম্বো, শ্রীলঙ্কায় দেশটির নৌবাহিনীর জাহাজ সায়ুরা পরিদর্শনে অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী টনি এ্যাবোট। ছবি চামিলা করুণারত্নের, কপিরাইট@ ডেমোটিক্স-এর (১১/১৭/২০১৩)

শ্রীলংকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দুজন রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রীর বৈপরিত্যে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকরা হতবাক, যাদের একজন হচ্ছেন তাদের নিজস্ব প্রধানমন্ত্রী, যার নাম টনি এ্যবোট এবং অপরজন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরোন।

ক্যামেরোন যুদ্ধপরাধের বিষয়ে শ্রীলঙ্কার মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করে। আর এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী এ্যাবোট ছিল আরো অনেক বেশী শান্ত :

অস্ট্রেলীয় সরকার যে কোন ধরনের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার। কখনো কখনো, কোন এক কঠিন পরিস্থিতিতে, জটিল কোন ঘটনা ঘটে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, জাতির ঘা শুকানোর জন্য দ্রুত প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করা দরকার।

অনেক অনলাইন ব্যবহারকারী এই সমস্ত মন্তব্য কলোম্বোয় অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথের রাষ্ট্রসমূহের এই সম্মেলন [চোজেম] অত্যাচারসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক কৌশলগত অনুমোদন হিসেবে দেখছে:

“সমালোচনাযোগ্য” এবং “কঠিন পরিস্থিতি” সমর্থক নয়, প্রধানমন্ত্রী এ্যাবোট। নির্যাতনের ঘটনাকে গুরুত্বহীন করে ফেলা লজ্জাজনক।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে টনি এ্যাবোট শ্রীলঙ্কায় নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের বলছে; ফালতু ঘটনা ঘটেছে।

নাৎসি [ গডউইন আইন]–এর অপরিহার্য সমান্তরাল ছিল এই বিষয়টি এবং এই নিয়ে করা হয়েছে বিভ্রান্তির উক্তি:

@চোজেমে-এর প্রদর্শনীতে হিটলারের প্রতি অস্ট্রেলিয়ার উত্তর। টনি এ্যাবোট নির্যাতন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনকে সমর্থন করল

অস্ট্রেলীয় সরকারের আয়োজক দেশকে দুটি টহলযান উপহার দেওয়ার মাধ্যমে টনি এ্যাবোটের বিতর্কিত উক্তিকে আরো জোরালো করে, যে টহলযান প্রদানের উদ্দেশ্য অন্য দেশে আশ্রয় খোঁজার জন্য দেশ থেকে পালিয়ে যাবার মত ঘটনাকে থামানো।

নির্যাতন এবং ধর্ষণের নিন্দা জানানোর বদলে, শরণার্থী হিসেবে পলায়নের কারণে এ্যাবোট নিপীড়নকারী সরকারকে সামরিক যান উপহার প্রদান করল।

এই বিষয়ে ব্লগাররা খুব ধীরে সাড়া প্রদান করেছে কিন্তু টার্নলেফট২০১৩ খুব দ্রুত সাড়া প্রদান করেছে। টনি এ্যাবোট নির্যাতনকে তেমন একটা গুরুত্ব প্রদান করেনি: মিউজিক এন্ড পলিটিক্স , ওয়ালেশ ব্যান্ড ম্যানিক স্ট্রিট প্রিচারের গাওয়া গান “ইফ ইউ টলারেট দিস ইয়োর সন উইল বি নেক্সট” (যদি আপনি এখন তা সহ্য করেন, তাহলে আপনার পরবর্তী শিকার হবে আপনার সন্তান) তুলে ধরেছে।

যদি আমরা অন্যের নির্যাতন সহ্য করি, তাহলে আমাদের সন্তানেরা হবে তাদের পরবর্তী লক্ষ্য।

এর নমুনা লিরিকস…

ভবিষ্যৎ আমাদের একাকী হতে শেখায়
বর্তমান ভীত এবং কিছু না করতে
আর যদি আমরা খরগোশকে গুলি করতে পারি
তাহলে আমরা ফ্যাসিস্টদেরও আঘাত করতে পারি…।

আর যদি আপনি বিষয়টা সহ্য করেন
তাহলে পরবর্তী লক্ষ্য হবে আপনার সন্তানেরা
আর যদি আপনি তা সহ্য করেন
তাহলে পরবর্তী লক্ষ্য হবে আপনার সন্তানেরা

উদারনৈতিক পত্রিকা ওভারল্যান্ডের -এর সম্পাদক জেফ স্প্যারো, অস্ট্রেলিয়ার গার্ডিয়ান পত্রিকায় মন্তব্যের জন্য উন্মুক্ত বিভাগে উদ্বাস্ত এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন: আমরা এমন ভাব করতে পারি না যে বিষয়টি সম্বন্ধে আমরা জানি না , শিরোনামে মন্তব্য আকারে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন:

…অস্ট্রেলিয়ার লজ্জাজনক শরণার্থী নীতির বিরোধিতা করার আমাদের এক দায়িত্ব, এটা কেবল আশ্রয়প্রার্থীদের মঙ্গলের জন্য নয়, যারা আমাদের আইনের হাতে ধরা পড়ে, কিন্তু অন্য কোথায় নির্যাতিত নাগরিকদের ঘটনা প্রভাবের কারণেও এর বিরোধিতা করা উচিত।

এশিয়ার মানবাধিকারে “প্রকৃত রাজনীতি”-এর মনোভাবের ক্ষেত্রে যুক্তি প্রদানের জন্য এই বিষয়ে কয়েকটি মন্তব্য করা হয়েছে। দিগ্রেটকিউকাম্বার যুক্তি প্রদান করেছে:

আমি এই বিষয়ে শঙ্কিত যে বৈশ্বিক মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ এখন একটা বিলাসিতায় পরিণত হয়েছে যা উন্নত বিশ্ব ক্রমশ গ্রহণ করতে অক্ষম। বিশ্বের গৃহহীন মানুষদের রক্ষা করার মত উদ্বেগ ব্যতীত, যুক্তরাজ্য আমাদের নাগরিকদের জন্য বর্তমান পর্যায়ের উন্নয়ন বাজায় রাখার জন্য যথেষ্ট সমস্যার মাঝে রয়েছে।

ট্রেভেঅফবিলিসিভিলি নামের আরেকজন টুইটারে প্রথমে প্রদান করা জবাবের সাথে একমত হয়ে সেই একই পোস্টে মন্তব্য করেছে :

এ্যাবোট, যথারীতি যার আগের মত মুখ সচল, মস্তিষ্ক নয়। স্লোগান, যা সে জানে। কি এক বিদঘুটে ব্যাপার!

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .