সৌদির এক লোক একজন বিদেশী কর্মচারীকে অপমান এবং মারধর করছেন, এমন একটি ভিডিও অনলাইনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওটিতে একজন সৌদি অধিবাসীকে বার বার তাঁর কর্মচারীটিকে চড় মারতে দেখা যাচ্ছে। কর্মচারীটি একজন দক্ষিণ এশীয় নাগরিক। কর্মচারীটির বিরুদ্ধে সৌদি লোকটি তাঁর স্ত্রীর সাথে কথা বলার অভিযোগ করেছে। ভিডিওটিতে সে তাঁর কর্মচারীটিকে থুথু ছিটিয়ে পশু ও কুকুরের বাচ্চা বলে গালি দিচ্ছে। এরপর সে কর্মচারীটিকে লাথি মারতে এবং চাবুক মারতে শুরু করে। কর্মচারীটিকে এ সময় যন্ত্রনায় আর্তনাদ করতে শোনা যায়।
নেটিজেনরা টুইটারে এই প্রকাশ্য অত্যাচারের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
আহমাদ সাবরি লিখেছেনঃ
Violence against expat workers in Saudi isn't just isolated cases. The sponsoring system “opens the door to violence” http://t.co/dm8TOXPiJj
— Ahmad Sabri (@radicalahmad) November 1, 2013
সৌদিতে বহিরাগত কর্মীদের প্রতি সহিংসতা কোন ভিন্ন বিষয় নয়। স্পনসর করার ব্যবস্থাটিই “সহিংসতার দরজা খুলে দেয়”।
লাইলা রুয়াস লক্ষ্য করেছেনঃ
Watched footage of Saudi Man beating worker. Absolutely horrific. Calls worker an animal in Arabic. I think he should look at himself 1st
— Laila Rouass (@lailarouass) October 29, 2013
সৌদি লোকের কর্মচারীকে মারার ফুটেজটি দেখেছি। একেবারেই ভয়াবহ। আরবিতে কর্মচারীকে পশু বলে গালি দিয়েছে। আমি মনে করি, প্রথমেই তাঁর নিজের দিকে দেখা উচিৎ।
এবং আরি আকেরমানস বলেছেন, অন্যান্য দেশের তাঁদের নাগরিকদের সৌদি আরবে কাজ করতে আসতে দেয়া উচিৎ নয়:
That video of Saudi beating the foreign worker is just so so so horrifying. Countries shouldn't allow their citizens to go there…
— Arie Amaya-Akkermans (@Dilmunite) April 6, 2012
সৌদি লোকের বিদেশী কর্মীকে প্রহারের ভিডিওটি একেবারে খুবই ভয়ংকর। অন্যান্য দেশের, তাঁদের নাগরিকদের এখানে কাজ করতে আসতে অনুমতি দেয়া উচিৎ নয়…
এ অঞ্চলে এ ধরনের ঘটনা নতুন নয়। সেখানে বিদেশ থেকে আগত কর্মীরা প্রতিনিয়ত নিগৃহীত এবং মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।
একজন বাংলাদেশি কর্মীকে সৌদি লোকের চড় মারা এবং মারধরের এই ভিডিওটি আগেই ভাইরাসের মতো দ্রুত ছড়িয়ে গেছে।
সৌদি লোকটি বাংলাদেশি কর্মীটিকে চড় মারতে এবং অপমান করতে দেখা যাচ্ছে। তাঁকে, সে একটি “পশু” বলে গালিও দিচ্ছে।
এ সময়েই আরেকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, প্রতিবেশী সংযুক্ত আরব আমিরাতের একজন স্থানীয় লোক বাইরের দেশ থেকে কাজ করতে আসা একজন গাড়ি চালককে মারধর করছে। একটি সড়কে ট্রাফিক দূর্ঘটনার শিকার হলে তাঁরা তাঁকে মারধর করে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পথচারীরা তাঁকে থামানোর চেষ্টা করছেঃ
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, যেখানে মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলো গৃহকর্মীর উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, সেখানে এটি তাঁদেরকে সুরক্ষিত রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে।
একটি সাম্প্রতিক রিপোর্টে লেখা হয়েছেঃ
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, দ্যা আইডিডব্লিউএন এবং দ্যা আইটিইউসি মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্মীদের নথিভুক্ত করেছে। তাঁদের বেশিরভাগই এশিয়া এবং আফ্রিকা থেকে আসে। তাঁরা ব্যাপকভাবে নিগৃহীত হয়। এসব নিপীড়নের মধ্যে আছে বেতন না পাওয়া, তাঁরা যেখানে কাজ করে সেখান থেকে চলে আসতে না পারা এবং বিশ্রামের জন্য কোন দিন ধার্য না করে অতিরিক্ত কর্মঘন্টা কাজ করিয়ে নেওয়া। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ মানসিক, শারীরিক বা যৌন নির্যাতনেরও শিকার হয়। অনেক সময় তাঁরা পাচারকারীদের হাতে পরা সহ জোরপূর্বক কাজ করানোর মতো পরিস্থিতির ফাঁদেও আটকে যেতে পারে।
রিপোর্টটিতে আরো বলা হয়েছেঃ
মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি দেশেই শ্রম আইনের সুরক্ষা থেকে গৃহকর্মীদের বঞ্চিত করা হয়। যদিও সীমাবদ্ধ অভিবাসন আইন, “স্পন্সরশীপ” বা কাফালা ব্যবস্থার অধীনে তাঁদের নিয়োগ কর্তারাই অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা পেয়ে থাকে এবং এটিই মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।