মেক্সিকোর নিখোঁজ নাগরিক-এর মায়েদের অনশন ধর্মঘট

মা দিবস স্মরণে মেক্সিকোর একদল মা দেশটির রাজধানী মেক্সিকো সিটির অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের বাইরে অনশন ধর্মঘটে অংশ নেয়, যাদের দাবী ছিল [স্প্যানিশ ভাষায়] মেক্সিকো সরকার তাদের নিখোঁজ পুত্র ও কন্যাদের অনুসন্ধান অব্যহত রাখার প্রতিশ্রুতি [স্প্যানিশ ভাষায়] বজায় রাখবে।

সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফেলিপ কালদেরন-এর শাসনামল ১ ডিসেম্বর ২০০৬ থেকে ৩০ নভেম্বর,২০১২-এর মধ্যে মেক্সিকোতে ২৬,০০০ হাজার-এর বেশী মানুষের আর কোন খোঁজ পাওয়া যায় না।

এই সমস্ত মায়েরা ৯ মে ২০১৩ পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যায়।

দ্য ল্যাটিন আমেরিকানিস্টা ব্লগে এরোউইন সি অনশন ধর্মঘটে অংশ নেওয়া এক মায়ের কথা উদ্ধৃত করেছে :

অনশন ধর্মঘটে অংশ নেওয়া মার্গারিটা লোপেজ ঘোষণা প্রদান করে “যতক্ষণ না আমাদের দাবি মেনে নেয়া হয়, রাষ্ট্রপতি এসে আমাদের সাথে দেখা করে এবং কার্যকারী একদল কর্মীকে সাথে নিয়ে এসে আমাদের বলে যে কোথায় এবং কিভাবে তারা আমাদের হারিয়ে যাওয়া আপনজনদের খোঁজার কাজ শুরু করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই এলাকা ছাড়ব না”। লোপেজ বলে যে, তার হারিয়ে যাওয়া মেয়ে ইয়াহাইরা গোয়াদলুপ বাহেনাকে “সশস্ত্র ব্যাক্তিরা” দুই বছর আগে অপহরণ করে এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তার উপর নির্যাতন চালানো হয়। কর্তৃপক্ষের কাছে লোপেজ এক গণকবর উন্মোচনের আহ্বান জানান, তার অভিযোগ এখানে তার মেয়েকে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তার এই দাবী এখন পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ উপেক্ষা করে যাচ্ছে।

গত বছরের নভেম্বর-এ শুরু হওয়া এই অনশনে লোপেজ ছিল অন্যতম এক অংশগ্রহণকারী, যার পরিসমাপ্তি ঘটে আন্দোলনকারীর সাথে মেক্সিকো সিটি কর্তৃপক্ষের সাক্ষাতের মধ্যে দিয়ে ।

ডিজিটাল প্রকাশনা অ্যানিমেল পলিটিকোর প্যারিস মার্টিনেজ শুরু থেকে [স্প্যানিশ ভাষায়] এই অনশন ধর্মঘটের সংবাদ প্রদান করে আসছে। একটি পোস্টে [স্প্যানিশ ভাষায়] এই ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করা মা,যেমন ন্যান্সি রোসেটে সাথে পাঠকের পরিচয় করিয়ে দেন, যার পুত্র এলভিস এ্যাক্সেল টোরেস রোসেটে ২৯ ডিসেম্বর, ২০১০ থেকে নিখোঁজ:

Yo decidí participar en la huelga de hambre porque, como víctimas, no contamos con certeza sobre las acciones que realizan las autoridades. Han pasado ya más de dos años y, aun cuando hay supuestos avances en las investigaciones, nosotros no podemos verificarlos.

আমি অনশন ধর্মঘটে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম, কারণ ঘটনার শিকার একজন হিসেবে কর্তৃপক্ষ যে এই বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে আমাদের কাছে সে বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। দুই বছরের বেশী সময় পার হয়ে গিয়েছিলো, কিন্তু তারপরেও অভিযোগ রয়েছে যে তদন্তে কোন অগ্রগতি ঘটেনি। [তদন্তে অগ্রগতির] বিষয়ে আমরা কোনো যাচাই করতে পারিনি।

১৩ মে তারিখে অ্যানিম্যাল প্যালিটিকোতে মার্টিনেজ সংবাদ প্রদান করে “ডেপুটি এটর্নি জেনারেল রিকার্দো গারসিয়া সারভেন্তেস অনশনের শুরুর দিনে অনেক মন্তব্য করলেও, কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কেউ [আন্দোলনকারীদের] দাবি শুনতে বা সাধারণ কোন আলোচনা শুরু করেনি

১০ মে তারিখে মেক্সিকোর মা দিবসে নিখোঁজ ব্যক্তিদের মা এবং তাদের পরিবারবর্গ এক বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। মার্টিনেজ একটি ভিডিও প্রদর্শন করে [ স্প্যানিশ ভাষায়] যেখানে দেখা যাচ্ছে অনশনরত মায়েরা শ্লোগান দিচ্ছে “ তারা আমাদের সন্তানকে জীবন্ত ধরে নিয়ে গেছে, আমরা তাদের জীবিত অবস্থায় ফেরত চাই”! আর এখন তারা কোথায়? তারা কোথায়? আমাদের শিশুরা, তারা কোথায়? :

অন্য একটি ভিডিওতে অনশনের চতুর্থ দিনে মার্টিনেজ হারিয়ে যাওয়াদের মায়েদের ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সাক্ষাৎকার নেন। তাদের মধ্যে একজন মা একটি লেখা ধরেছিল “আজ অনশনের চতুর্থ দিন কিন্তু আমরা কোন জবাব পাচ্ছি না। আমরা আমাদের ছেলে এবং মেয়েদের উপস্থিতি চাই,আমরা সঠিক বিচার চাই”।!”

সে জানায় যে তারা খাদ্য সংকটে ভুগছে, রাতে তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে, এবং তারা নিরাপদ বোধ করছে না। এরিকা এর সাথে যোগ করেছে যে নাগরিকরা তাদের সাহায্য করছে।

অন্যান্য অনশনকারীরা নিশ্চিত করছে যে তারা অনশন ত্যাগ করবে নাঃ “আমরা এখানে শুধুমাত্র একজনের জন্য না, আমরা এখানে হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের খোঁজার মত এক সাধারণ উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছি”। :

১৫ই মে বুধবারে মার্টিনেজ সংবাদ প্রদান করেন যে অনশনকারীদের একটি গ্রুপ তাদের লিখিত দাবি রাষ্ট্রপতি এনরিকে পেনা নিওটোকে প্রদান করার জন্য মেক্সিকোর রাষ্ট্রপতি ভবন এবং দপ্তর লস পিনসে যাবে, “যাতে সে ছেলে এবং মেয়েদের খোঁজার বিষয়ে তৎপরতার অভাবের কথা বর্ণনা করতে পারে”।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .