- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

গতকাল আমি আসাদের বাহিনী ত্যাগ করেছি

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., সিরিয়া, নাগরিক মাধ্যম, যুদ্ধ এবং সংঘর্ষ, রাজনীতি

আমরা সিরিয়া ডিপলি (গভীরভাবে সিরিয়া) [1]র সঙ্গে আমাদের সহযোগিতার অংশ হিসেবে নিবন্ধের একটি ধারাবাহিক ক্রস পোস্ট করছি যাতে বিশ্বজুড়ে লেখকদের সংঘাত সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গিসহ ক্রসফায়ারে মধ্যে পড়া অসামরিক জনগণের কণ্ঠস্বর ধরা পড়েছে।

নীচে নিউজ ডিপলি এবং সিরিয়ার সেনাবাহিনীর সুলাস সামরিক ঘাঁটি ত্যাগ করে বিদ্রোহীদের পক্ষে যোগদান করা ২০ বছর বয়েসী একজন মানুষের একটি কথোপকথন প্রদত্ত হলো। তার অনুরোধে আমরা এই নিবন্ধে তার নামটি ব্যবহার করবো না।

লাতাকিয়া প্রদেশে জেবেল তুর্কমান পর্বতমালার গহীনে এফএসএ (মুক্ত সিরীয় সেনাবাহিনী) ব্যবহৃত একটি ঘরে আমরা মিলিত হয়েছিলাম। জানালায় বোমার ধুমধাম শব্দ স্বত্ত্বেও তিনি বাশার আল-আসাদের অনেক সৈন্যের ভাগাভাগি করা জটিল মানসিকতার উপর আলোকপাত করেছেন। যুবকদের জোরপূর্বক বাধ্যতামূলক সামরিক দায়িত্ব পালন করানো হচ্ছে এবং তারা নিদারুণভাবে বিরোধী পক্ষে যোগদান করতে চাইছে।

“প্রথমবার আমি কোন একজন সাংবাদিক বা মার্কিনীকে দেখলাম,” লজ্জিতভাবে তিনি বলেছেন। “একবছর ধরে আমি সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে দেখেছি। প্রথমবার যোগদানের পর থেকে, যখনি আমি এফএসএ গড়ে উঠতে দেখেছি, আমি দলত্যাগ করতে চেয়েছি। যোগদানের আগে আমি মনে করেছি বিপ্লব শেষ হয়ে যাবে, আর আসাদ জিতে যাবে।”

তিনি বলেছেন প্রতিটি নতুন সৈনিককে একজন করে সাবিহা [শাসকগোষ্ঠীর চর] পন্থীর তত্ত্বাবধানে রাখা হয় যাতে তার দলত্যাগ না করতে পারে। এটা দৃশ্যতঃ সেনাবাহিনীর আস্থা কাঁপিয়ে দেওয়া সাম্প্রতিক একটি দলত্যাগের ঢেউয়ের পরে ঘটেছে।

“সৈন্যরা এফএসএ’র ভয়ে ভীত। তাদের অনেকেই হয়তো দলত্যাগ করতো, কিন্তু সাবিহারা আমাদের সঙ্গে থাকে, নিরাপত্তা মতো তারা আমাদের পাহারাদেয়, আমরা যেন চলে না যাই।”

দামেস্কের দুমা ধ্বংস। সৌজন্যে শাম সংবাদ নেটওয়ার্ক

তরুণ সৈন্যরা নিজেদের মধ্যে এ বিষয়ে খুব কমই কথা বলে।

“আমি এই সম্পর্কে শুধুমাত্র আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলবো। আমি এটা নিয়ে অন্য কারো সঙ্গে কথা বলবো না, যদিও আমরা সবাই ছেড়ে চলে যেতে চাই। আমার পরিবার দামেস্কে এবং তারা সবাই বিপ্লবের পক্ষে। আমি সেনাবাহিনী ত্যাগ করায় তারা খুশি।”

তিনি কখনোই গোপনে তার সমর্থিত বিদ্রোহীদের হত্যা করতে চাননি এবং বলেছেন সেনাবাহিনীর কিছু কিছু সৈন্য গুরুতর ক্ষতি এড়ানোর মতো কৌশল আবিষ্কার করেছে।

“আমি এটা [হত্যার জন্যে গুলি] কখনো করতাম না… আমি বাতাসে গুলি করতাম, যোদ্ধাদের ছাড়া আর সবকিছু গুলি করতাম। অনেকেই তা করতো না – নজরদারি করা লোকেরা তা খেয়াল করতে পারতো না।

“কর্মকর্তাদের ক্ষমতা আছে এবং তারা বলে চলছে, ‘আমরা সফল হয়ে আমাদের বাড়ি-ঘরে ফিরে যাবো [যদি আমরা একবার জয়ী হই] ।’ কিন্তু যোদ্ধারা জানে এটা গুটিয়ে আসছে।”

তিনি তার সেনাবাহিনীর অধিকাংশ মেয়াদ ইদলিবে কাটিয়েছেন এবং শেষ দু’মাস লাতকিয়া পর্বতমালায় নিযুক্ত ছিলেন। ঐ সময়ে, যেমন তিনি বলেছেন, “আমার কোন ছুটি ছিল না। আমি কখনো শহরে যাইনি।”

আমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের জন্যে তাকে নিয়ে আসার আগে আমি তার সঙ্গে কথা বলার সময় আমার নিরাপত্তা বিষয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম। এফএসএ ব্যাটালিয়ন নেতা কিভাবে আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে তার নতুন যোদ্ধা আসলে শাসকগোষ্ঠীকে আমাদের সম্পর্কে তথ্য জানিয়ে দেওয়ার একজন দ্বিমুখী চর নন? “আমি দামেস্কে তার পিতার সঙ্গে কথা বলে ছিলাম,” দলনেতাটি আমাকে জানিয়েছেন। আমাকে আশ্বাস দানের চেষ্টা করে তিনি বলেছেন যে শাসকগোষ্ঠীর ঘাঁটিগুলোতে নিরাপত্তা (প্রহরা) এবং ভূখণ্ডের বাহ্যিকতার কারণে শুধুমাত্র সবচেয়ে বিশ্বস্ত লোকেরাই পালাতে সক্ষম হয়। তিনি বলেছেন, “দলত্যাগ করা খুব, খুবই কঠিন।”