- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

সৌদি আরবে “শুক্রবার বন্দীদের জন্য” প্রতিবাদে ব্যাপক পুলিশি নজরদারি

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., সৌদি আরব, নাগরিক মাধ্যম, প্রতিবাদ, মানবাধিকার

সৌদি আরবের স্বাধীন মানবাধিকার সংস্থা সৌদি সিভিল এ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস এসোসিয়েশনের (এসিপিআরএ) প্রধান সুলেইমান আল-রাশৌদির গ্রেপ্তারের [1] অল্পকাল পরে বেনামী স্বক্রিয় দল @ই৩টেকাল [2] [যার ইংরেজী অনুবাদ শাস্তি দেওয়া] ঘোষণা দিয়েছে যে, আজ ২১ ডিসেম্বর “বন্দীদের জন্য শুক্রবার” পালন এবং সারা দেশ জুড়ে অবস্থান কর্মসূচী করা হবে।

এক বক্তব্যে [3] দলটি বলেছে [আরবি]:

فإننا مجموعة من المشايخ والنشطاء المهتمين بقضية معتقلي الرأي ندعوا لاعتصامات في كل مناطق المملكة أمام مساجد محددة بعد صلاة الجمعة يوم 8 صفر 1434 الموافق 21 ديسمبر 2012 وقد دعانا للجوء للاعتصامات أن كل الوسائل الهادئة السرية لإطلاق سجناء الأي لن تكن مجدية.

আমরা এক দল যাজক ও সক্রিয় কর্মী, যারা নীতিবান বন্দীদের ব্যাপারে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। আমরা সারা দেশজুড়ে ২১ ডিসেম্বর, ২০১২ শুক্রবারের ধর্মীয় বক্তৃতার পর কিছু মসজিদের বাইরে অবস্থান কর্মসূচীর ডাক দিয়েছি। যে কারণটি আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচী ডাকতে বাধ্য করেছে তা হল রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্ত করার সব গোপন ও শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়েছে।

কর্মসূচীটির লোগো

সৌদি আরবের সরকার সকল ধরণের বিক্ষোভ প্রদর্শন ও অবস্থান কর্মসূচী কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। এর পরেও নিয়মবহির্ভূতভাবে বন্দীদশায় থাকা লোকেদের আত্নীয়-স্বজনেরা ও @ই৩টেকালের পেছনে থাকা স্বক্রিয় কর্মীরা এই নিয়মটির বিরুদ্ধে গত দুই বছর ধরে অনেকবার আপত্তি জানিয়েছেন। নিয়মবহির্ভুত গ্রেপ্তার হচ্ছে সৌদি আরবের বহুল আলোচিত মানবাধিকার ইস্যু। এসিপিআরএ- এর হিসেব অনুযায়ী নিয়মবহির্ভূতভাবে বন্দীর সংখ্যা ৩০ হাজারেরও বেশী [4]। তাদের বেশীরভাগই ৯/১১ পরবর্তি ভয়াবহ “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ” সময়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন [5]

বুধবার রাতে দলটি অবস্থান কর্মসূচীর পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনটি প্রধান মসজিদের নাম ঘোষণা [6] করেছে। মসজিদ তিনটি হলো রিয়াদ, জেদ্দাহ ও বুরাইদাহ। আজ প্রতিবাদের বিরুদ্ধে পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে এই মসজিদগুলোর বাইরে ব্যাপক পুলিশ উপস্থিত ছিল। প্রাক্তন রাজনৈতিক বন্দী থামের আল-খোধোর টুইট করেছেনঃ

من رأى جامع العميم في بريدة يعرف معنى الثكنه العسكرية

@থামের১৪৩৩৮ঃ [7] বুরাইদাহের আমিম মসজিদটি যারা দেখেছেন তারা জানেন যে “সামরিক ব্যাটেলিয়ন” কি।

শুধু মাত্র ঘোষণা দেওয়া মসজিদগুলোর চারপাশেই নয় বরং রিয়াদের অন্যান্য বড় মসজিদগুলোতেও ব্যাপক পুলিশ উপস্থিতি ছিল। সৌদি টুইটার ব্যাবহারকারি ইয়াসের আল-মেহলিব, রিয়াদের সবচেয়ে বড় মসজিদ আল–রাজি মসজিদ থেকে টুইট করেছেনঃ

الآن هيلوكبتر تحوم فوق جامع الراجحي ! أصلحوا ماأنتم خائفون منه

@ওয়াইয়েএসআরআরঃ [8] আল–রাজি মসজিদের উপর দিয়ে এখন একটি হেলিকপ্টার উড়ে যাচ্ছে! আপনি যে ভয়ে ছিলেন তাই হতে চলেছে!

সরকারি মানবাধিকার কমিশনের দালানটির চারপাশেও পুলিশি নজরদারির কথা টুইটার ব্যবহারকারিরা ব্যঙ্গ করে রিপোর্ট করেছেনঃ

تعزيزات أمنية الان عند مبنى هيئة حقوق الانسان وعند جامع الراجحي

@সালেহতারেগঃ [9] আল-রাজি মসজিদের মতো মানবাধিকার কমিশনের দালানের সামনেও চলছে পুলিশি নজরদারি।

@ই৩টেকাল দশজন তরুনের একটি ভিডিও প্রকাশ [10] করেছে যারা প্রতিবাদের জন্য একটি ভিন্ন জায়গা বেছে নিয়েছেঃ

আরবি ভাষায় এই সব গান যেন খুব পরিচিত সেই আরব বসন্তের কান্নারই প্রতিধ্বনি। এর সাথে রয়েছে সৌদির বিশেষ চাওয়া – জনগণ বন্দীদের মুক্তি চায়।

A banner held at today's protest which reads: Our captives are in danger; release them now [11]

আজকের প্রতিবাদে ধরে থাকা একটি ব্যানারে লেখা ছিলঃ আমাদের বন্দীরা বিপদে আছে; এখনই তাদের মুক্ত করুন। টুইটারে ছবিটি শেয়ার করেছেন @বাহিয়াআলরুশদি।  [12]

আল-রুশদির কন্যা বাহিয়াও একজন সক্রিয় কর্মী। তিনি তাদের কাছে থাকা নিদর্শনগুলোর ছবি [13] আপলোড ও টুইট করেছেনঃ

أسرة الرشودي مع عشرات النساء تجمعن وهتفن بالحرية للمعتقلين رغم الإستنفار الأمني وأدين الواجب والحمدالله

@বাহিয়াআলরুশদিঃ [14] আল-রুশদির পরিবারের সদস্যরা এবং দশজন মহিলা একত্রিত হয়েছেন এবং পুলিশের উপস্থিতি উপেক্ষা করে বন্দীদের মুক্তির জন্য চিৎকার করেছেন। আমাদের যা করা উচিৎ ছিল তা করতে পেরে আমরা পরম করুণাময়ের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ।

অবস্থান কর্মসূচীর হ্যাশট্যাগটি(#جمعة_المعتقلين [15]) [ বন্দীদের শুক্রবার ] অভিন্ন প্রো সরকার টুইটে ভরা ছিল, যার সবগুলোই নতুন করে তৈরী করা এ্যাকাউন্ট থেকে করা হয়েছে। সবগুলো টুইটের সমন্বয়ে তৈরী একটি স্ক্রিনশটের মূলকথাঃ “সৌদি আরবের নিরাপত্তা ও উন্নতির প্রতি মহান আল্লাহ তা’আলা সহায় হোন”:

@আমির_বাসের [16] মাধ্যমে

যখন একটি নতুন হ্যাশট্যাগ ঘোষণা করা হল, (#جمعة_الرعب, ভয়ের শুক্রবার) তখন নতুন করে তৈরী করা এ্যাকাউন্টগুলো হামাজা কাশগারির [17] মুক্তির দাবিতে করা টুইটে পূর্ণ হয়ে গেল। হামাজা কাশগারি খুবই বিতর্কিত একজন সৌদি কলাম লেখক, যিনি মহানবী হযরত মোহাম্মাদ (সঃ) কে অবমাননা করার দায়ে অভিযুক্ত।
[18]