হাজার হাজার মানুষ মালালা দিবস উদযাপন এবং নোবেল শান্তি পুরস্কারের আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছে

গত ১২ অক্টোবর ২০১২ তারিখে পাকিস্তানের তালিবান জঙ্গীরা ১৫ বছর বয়সী মালালা ইউসুফজাইকে গুলি করে। মালালার অপরাধ সে সোয়াতে নারী শিক্ষার জন্য নির্ভীকভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল। মালালা এখন আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠছে। তবে পুরোপুরি আশংকামুক্ত হয়নি। পুরো সুস্থ হতে আরো কিছু সময় লাগবে।

নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য আবেদন

মালালা ইউসুফজাইকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়ার জন্য আবেদন পেশ করেছেন যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে বসবাসকারী পাকিস্তানি-ব্রিটিশ বংশদ্ভুত নারী সাঈদা চৌধুরী। মালালা নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হলে জাতীয় রাজনীতিবিদরা আগ্রহী হবে। সাঈদা চৌধুরী এই আবেদনপত্রটি উইলিয়াম হেগ, ডেভিড ক্যামেরন, নিক ক্লেগ এবং এড মিলিব্যান্ডের কাছে পাঠাতে চান, যাতে কাজটা আরো এগিয়ে যায়।

তার আবেদনপত্রে ইতোমধ্যে হাজার হাজার মানুষ স্বাক্ষর করেছে। সবাই স্বাক্ষর করছে যেন মালালার নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার শুরু এখান থেকেই হয়:

মালালা নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলে সবার কাছে একটা পরিষ্কার বার্তা যাবে যে, বিশ্ববাসী সবকিছু দেখছে, যারা লিঙ্গবৈষম্য, মানবাধিকারসহ নারী শিক্ষা নিয়ে কাজ করছে পৃথিবীর সবাই তাদের পাশে আছে।

Tটুইটারে মালালা হ্যাশট্যাগ (#) ইতোমধ্যে ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ শেয়ার করেছে। আর গত ৯ দিনে মালালার জন্য নোবেল [মালালাফরনোবেল] হ্যাশট্যাগ প্রায় ৯ শত মানুষ শেয়ার করেছে।

আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করার কারণ ব্যাখ্যা করে ফারিনা আলম লিখেছেন:

… মালালা আমাকে আশা দিয়েছে।

স্টিফেন ফারলং মন্তব্য করেছেন:

এরকম কচি বয়সে এই সাহস এবং বিশ্বাসকে স্বীকৃতি দেয়া দরকার। সে সারাবিশ্বের নতুন থেকে বৃদ্ধ সবার অনুপ্রেরণা এবং আশার আলোকবর্তিকা।

মালালা দিবস উদযাপন

১০ নভেম্বর, শনিবার জাতিসংঘ মালালা দিবস উদযাপনের ঘোষণা দেয়। ৩ কোটি ২০ লক্ষ মেয়ে যারা স্কুলে যেতে পারে না, মালালাকে তাদের আলোকবর্তিকা ধরে বিশ্ববাসী দিবসটি পালন করে। মালালার সমর্থনে এদিন পাকিস্তানের ইসলামাবাদ, লাহোর এবং করাচিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। তাছাড়া সারাবিশ্বের ১০০টি দেশে দিবসটি উদযাপিত হয়।

তবে মালালার নিজ শহরে জঙ্গী হামলার ভয়ে খোলা ময়দানে কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হয় নি

জাতিসংঘের বিশ্বব্যাপী শিক্ষা সম্প্রসারণের বিশেষ দূত গর্ডন ব্রাউন গত ৯ নভেম্বর, শুক্রবারে নারী শিক্ষার ভবিষ্যত নিয়ে আলোচনা করতে পাকিস্তানে যান। তিনি এএফপিকে বলেন, একটি দেশ শিক্ষা খাতে বাজেটের মাত্র ২ শতাংশ বরাদ্দ দিয়ে এগিয়ে যেতে পারে না।

এমকিউএম (মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট) নামের একটি রাজনৈতিক দল তাদের করাচির প্রধান কার্যালয়ের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে মালালা দিবস পালন করে:

MQM celebrating Malala Day

এমকিউএম মালালা দিবস উদযাপন করছে। ছবি টুইটার ব্যবহারকারী @সাহিলএমকিউএম এর সৌজন্যে।

কায়নাত নামের মালালার এক বন্ধু মালালার ওপর আক্রমণের সময় ঘটনাস্থলে ছিল সে বলেছে, ওইদিনের ঘটনার কথা মনে হলেই তার কান্না পায়, আতংক চেপে ধরে। দুর্ভাগ্য, মৌলবাদী হামলার ভয়ে সোয়াত উপত্যকার কোথাও দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে না।

মালালার প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে ১১ বছর বয়সী বুশরা সিদ্দিকী তার ব্লগে লিখেছে:

আমার কথা হলো, মালালা পাকিস্তানের জন্য আলোকবর্তিকা আর আশাবাদের প্রতীক। আল্লাহ তাকে রক্ষা করুন।

টুইটারে প্রতিক্রিয়া

সালমান আহমেদ টুইট করেছেন:

@সুফিসাল: মন ও হৃদয়ের সংযোগ ছাড়া কোনো শিক্ষাই পরিপূর্ণ নয়- এরিস্টটল। #মালালা দিবস

সমুয়া সিং টুইট করেছেন:

@সমুয়াসিং: #পাকিস্তান মালালা দিবস পালন করলো। #দরিদ্র ছেলেমেয়েরা স্কুলে গেলে টাকা পাবে… আশা করি তারা স্কুলে যাবে এবং কিছু #শিখবে

আলী সালমান আলভি মন্তব্য করেছেন যে, মৌলবাদীদের প্রতি সহানুভূতিশীলরা মালালার সাহসিকতা খর্ব করার চেষ্টা করছে:

@আলীসালমানআলভি: সামাজিক মিডিয়ায় মালালা দিবসটি ছিল মালালা ভার্সেস আল কায়েদা ও তার সহযোগীদের (সহানুভূতিশীল) যুদ্ধক্ষেত্র। #পাকিস্তান

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .