বাংলাদেশ: আদিবাসীদের উপর হামলায় অশান্ত হয়ে উঠছে চট্টগ্রাম

এই প্রবন্ধটি আদিবাসী অধিকার বিষয়ে আমাদের বিশেষ কাভারেজে অংশ।

আদিবাসীদের উপর সংঘঠিত পর পর বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনায় বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল অশান্ত হয়ে উঠেছে। গত সপ্তাহে রাঙ্গামাটিতে আদিবাসীদের উপর হামলা এবং তাদের পাল্টা আক্রমণের প্রতিরোধের ঘটনায় এক তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় ৪০ জন আদিবাসী ছাত্র, একজন সরকারি শিক্ষক, ইউনিয়ন পরিষদের ১২ জন চেয়ারম্যান এবং ৫ জন বাঙ্গালী ছাত্র আহত হয়েছে।

মুক্তমনা ব্লগে জয় লিখেছেন [বাংলা ভাষায়]:

বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যর শহর রাঙামাটিতে বসবাসরত পাহাড়ীদের ওপর পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয় । গত সেপ্টেম্বারের ২২ তারিখ হতে পাহাড়ীরা নিদ্রাহীন রাত অতিবাহিত করছে । চলছে মনভারী করার মতো মারো- ধরো, সেটেলারদের উল্লাস । চারদিকে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনায় আকাশ অনেক ভারী । প্রশাসনের ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকাস্বত্তেও গত ২৩ তারিখের রাতে সেটেলারের উগ্রপন্থীরা পৃথক পৃথকভাবে ট্রাইবেল আদাম, রাজমনি পাড়া এবং ভেদভেদিতে আক্রমন চালানোর চেষ্টা করে ।

রাঙ্গামাটিতে আদিবাসীদের বিরুদ্ধে সংগঠিত হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় এক বিক্ষোভ র‍্যালীতে আদিবাসী ছাত্রদের হাতে ধরা প্ল্যাকার্ড। ছবি ফিরোজ আহমেদের, কপিরাইট ডেমোটিক্সের (২৪/০৯/২০১২)।

সুনয়ন চাকমা একটি পোস্টে মন্তব্য করেছেন[বাংলা ভাষায়]:

যারা দূর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন জাতিগত সমস্যা হলে বলে “শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান” দরকার তাদের কাছে আমার একটাই প্রশ্ন আপনার জায়গা জমি কেউ জোড় করে বেদখল করার পর তার সাথে কি আপনারা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করতে পারবেন?

আদিবাসী বাংলা ব্লগে তন্দ্রা চাকমা অভিযোগ করছেন [বাংলা ভাষায়]:

পুরো ঘটনাতে প্রশাসন সেই আগের মতই সেটেলারদের পক্ষ নিল। কেন এমন হবে? তারা কেন একটু ও বিশ্বাস স্থাপন করার চেষ্টা করলো না যে, তারা কারও পক্ষ নেবে না, কঠোর হাতে তারা দুষ্টের দমন করবে!!

সিএইচটি নিউজ আপডেট (সতর্কতা: মর্মস্পর্শী চিত্র) এই ঘটনার ছবি পোস্ট করেছে। আলাল ও দুলাল ব্লগ, এই ঘটনার উপর প্রকাশিত কয়েকটি সংবাদ একত্রিত করেছে।

গত শনিবারে ( ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২), একদল উন্মত্ত জনতা কক্সবাজারের রামু এলাকার বৌদ্ধদের গ্রামে আগুন দেয় এবং ধ্বংস করে ফেলে। ফেসবুকে কোরআন অবমাননার এক কথিত অভিযোগ থেকে এই ঘটনার সূত্রপাত। সংবাদে জানা গেছে যে, রাতের বেলা শুরু হওয়া এই ঘটনা যা ভোর পর্যন্ত চলে, তাতে ৭টি বৌদ্ধ মন্দির এবং ৩০টির মত বাড়ি ও দোকান ভস্মিভূত হয়। সেদিন প্রায় ১০০টির মত ঘর এবং দোকানে হামলা চালানো হয় ও লুঠপাট করা হয়। ধ্বংস হয়ে যাওয়া বৌদ্ধ মূর্তি এবং জ্বলন্ত প্যাগোডার ছবি, অনেককে ক্ষুদ্ধ করেছে, যার মধ্যে অনেক ব্লগারও রয়েছে।

আলাল ও দুলাল ব্লগ, লজ্জায় আর্তনাদ করে উঠছে:

এই বাংলাদেশ কি আমরা চেয়েছিলাম? এর জন্য কি ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণ দিয়েছিল? স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে বৌদ্ধ মন্দির জ্বলে যাওয়ার দৃশ্যও আমাদের অবলোকন করতে হল…

ব্লগার প্রলয় হাসান তার ফেসবুকের নোটে বিবৃতি প্রদান করেছেন [বাংলা ভাষায়] :

এটা বিছিন্ন কোন ঘটনা নয় বরং একটা ধারাবাহিক সিরিজ তান্ডব বলা যেতে পারে। [..] বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যতবার সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে, বরাবরই তা ছিলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক এবং সংশ্লিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের জন্য উস্কানিমূলক। মানে হলো, ধর্মকে ইস্যু হিসেবে দেখানো হলেও [মাঝে মাঝে এ ইস্যুগুলোও হয় অত্যন্ত ঠুনকো। যেমন: এবার দেখানো হলো ফেসবুকে এক যুবক কোরআন অবমাননা করেছে তাই হামলা হয়েছে। কিছুদিন আগে ইউটিউব যেহেতু একই ধরনের কারনে বন্ধ হয়েছে, সেহেতু এটা একটা কার্যকরী ইস্যু বটে!] সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কখনই শ্রেফ ধর্মের কারনে হয়নি। অথচ কিছু নির্বোধ দুনিয়ার তাবত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্য ধর্ম, বিশেষ করে ইসলাম ধর্মকে দায়ী করে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে প্রদত্ত এক ভাষণে নির্দেশ করেছেন যে, ২০০১- ২০০৬ সালে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা এখন বিরোধী দলে থেকে এই সমস্ত সাম্প্রদায়িক হামলা চালাচ্ছে, ব্লগারের মতে এটা একটা প্রতিশোধ মুলক চাল। বিশেষ করে যখন জাতি সংঘের মহাসচিব নিজে বৌদ্ধ ধর্মের এক নাগরিক, তখন এ রকম অভিযোগ বাস্তবিক পক্ষে অনেকের জন্য জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে:

অনেকেই হয়তো জানেন, জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব বান কি মুন ব্যক্তিগতভাবে একজন কট্টর বুদ্ধিস্ট। তাছাড়া তার জন্মভূমি কোরিয়ার জাতীয় ধর্মও তাই। [..]

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার খবর আমাদের মিডিয়া যতটা না প্রচার করে, বিশ্বমিডিয়ায় তা প্রচারিত হয় শতগুণ বেশী।

ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ র‍্যালীতে অংশ গ্রহণ করা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নাগরিকরা। ছবি ফিরোজ আহমেদের। কপিরাইট ডেমোটিক্সের (৩০/৯/২০১২০)।

ব্লগার ও লেখক আরিফ জেবতিক [বাংলা ভাষায়] তার ফেসবুকে উল্লেখ করেছেন:

গত কয়েকমাসে উপর্যুপরি কয়েকটি ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, এসব হামলার কিছু নির্দিষ্ট প্যাটার্ন আছে। যেসব স্থানে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন করা হচ্ছে, সেসব এলাকায় জামায়াত-শিবির, হিযবুত তাহরীর সহ বর্তমানে চাপে থাকা ধর্মীয় গোষ্ঠিগুলোর রাজনৈতিক যোগাযোগ ও শক্তি তুলনামূলক ভাবে বেশি। এবং আশ্চর্যজনক ভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রশাসন এগিয়ে এসেছে ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে। কিন্তু সরকার বিষয়টি কখনোই খতিয়ে দেখেনি যে মাঠ পর্যায়ের যেসব কর্মকর্তা ধর্মীয় অসহিষ্ণু ঘটনাগুলো নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছেন, তাঁদের নিয়োগ এবং পূর্বতন সময়ে কোনো রাজনৈতিক যোগাযোগ ছিল কী না। আমার বিশ্বাস যদি খতিয়ে দেখা যায়, তাহলে এসব কর্মকর্তাদের অনেকের রাজনৈতিক যোগাযোগ দেখে হতভম্ব হতে হবে।

‘রামুতে পুলিশ কোথায়’? শিরোনামে উন্মোচন ব্লগে কল্লোল মোস্তাফা লিখেছেন [বাংলা ভাষায়]

স্রেফ জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও ঠেকাতে জাতীয় কমিটির কর্মীদের দিকে ব্যারিকেড, লাঠিচার্জ আর টিয়ারশেল সহ পুলিশ লেলিয়ে দিতে প্রশাসনের উৎসাহের কখনও কোন কমতি হয় না। অথচ সারারাত ধরে কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অসংখ্যা ঘরবাড়ি, দোকানপাটসহ সাত সাতটি মন্দির ভাঙচুর চললো, আগুন দেয়া হলো, লুটপাট করা হলো- সারা রাত ধরে একটাও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করা হলো না, কোন মন্দিরের সামনে একটা ব্যারিকেডও পড়লো না- সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়ার পর সকালে এসে ১৪৪ ধারা জারি করে দায় সারা হলো- একটুও কি অদ্ভুত লাগে না?

রামুর এই হামলার ঘটনার পরেরদিন, রোববারে, উখিয়া উপজেলায় পাঁচটি বৌদ্ধ মন্দিরেও হামলা চালানো হয়। রামুর এই হামলার ঘটনায় পুলিশ ৩৫ জন নাগরিককে গ্রেফতার করেছে [বাংলা ভাষায়]। কিন্তু নাগরিকরা ভাবছেন যে এই ধরনের হামলার সমাপ্তি হবে কবে।

এই প্রবন্ধটি আদিবাসী অধিকার বিষয়ে আমাদের বিশেষ কাভারেজে অংশ।

3 টি মন্তব্য

  • […] recent times the indigenous people from Chittagong Hill Tracts have been subjected to attacks. But the incident of Ramu is different than those. Blogger Biplob Rahman has mentioned [bn] that the […]

  • […] recent times the indigenous people from Chittagong Hill Tracts have been subjected to attacks. But the incident of Ramu is different than those. Blogger Biplob Rahman has mentioned [bn] that the […]

  • monsur

    উপজাতিরা (কথিত আদিবাসীরা) মূলত স্বাধীনতা বিরোধী, দেশদ্রোহী, রিফিউজি তথা নৃতাত্ত্বিক ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী।
    তিন পার্বত্যাঞ্চলকে নিয়ে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের নীলনকশা উপজাতি পাহাড়ি, খ্রিস্টান মিশনারী ও আন্তর্জাতিক চক্রের!
    স্বাধীনতা বিরোধী পাহাড়ি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী কর্তৃক আর কত বাঙালি খুন হলে সরকারের টনক নড়বে? সরকারের নিষ্ক্রিয়তাই এদেরকে আরো বেপরোয়া করে তুলছে!
    সরকারের উচিত তিন পার্বত্যাঞ্চল রক্ষায় উপজাতিদের (কথিত আদিবাসীদের) সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সেখানে বাঙালিদের স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করা। (পর্ব-৭)
    -মুহম্মদ আজীজুর রহমান।

    ইন্দোনেশিয়ার জন্য কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল পূর্ব-তিমুর। এটি পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম দেশ। এ মুসলমান দেশের উপস্থিতি মাত্র তিন কোটি অমুসলিমের দেশ অস্ট্রেলিয়া হুমকি মনে করে। কারণ অস্ট্রেলিয়ার উত্তরেই হলো ইন্দোনেশিয়া। আর অস্ট্রেলিয়ার নিকটতম দ্বীপ হলো তিমুর। অস্ট্রেলিয়া জিও পলিটিকসের মাধ্যমে এখাকার জনগণকে সংগঠিত করে বিদ্রোহকে উস্কে দিয়ে জাতিসংঘের ব্যানারে খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করে ইউরোপের খ্রিস্টান রাষ্ট্রগুলোর সাহায্যে পূর্ব-তিমুর নামে স্বাধীন খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। এখন সে রাষ্ট্র পাহারা দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান সেনাবাহিনী।
    ঠিক একইভাবে সুদান বহুজাতি তাত্ত্বিক দেশ। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ আফ্রিকার একটি বড় দেশ। সেটার দারফুর অংশে উপজাতির ভিত্তিতে মুসলমানদের বিভাজন সৃষ্টি করেছে। তারপর সবচেয়ে সম্পদসমৃদ্ধ দক্ষিণ সুদান- যেখানে রয়েছে তেলসমৃদ্ধ অ্যাবে অঞ্চল। এ অঞ্চলে আমেরিকার সিআইএ ও ইসরাইল অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছে। আশপাশের খ্রিস্টান রাষ্ট্রগুলো জনবল ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে বিচ্ছিন্নতাবাদকে উস্কে দিয়ে গণভোটের নাটক মঞ্চস্থ করে স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরির নামে সুদানকে খ–বিখ- করে দিয়েছে।
    আর সে ধারাবাহিকতায় বর্তমানে উপজাতি সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনীর সদস্যরা ভারতে ট্রেনিং নিচ্ছে এবং সেখান থেকে অস্ত্রশস্ত্র পাচ্ছে। উপজাতি সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনীর সদস্যরা ভারত থেকে এসে পুনর্বাসিত হয়েছে এবং হচ্ছে। তাদের হাতেও হাজার হাজার বাঙালি মারা যাচ্ছে। আগে ষড়যন্ত্র হয়েছে, এখনো হচ্ছে। উপজাতি সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনীর নেতা সন্তু লারমা এখনো বিচ্ছিন্নতাবাদ চাচ্ছে। এদের উস্কে দিচ্ছে বিদেশীরা। কারণ এখানে খ্রিস্টান মিশনারীদের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে চলছে। খ্রিস্টান মিশনারীরা হাসপাতাল, চার্চ প্রতিষ্ঠা করেছে। এখন জাতিসংঘের ইউএনডিপি’র ছদ্মাবরণে পাশ্চাত্য খ্রিস্টান এনজিওগুলো ধর্মান্তরের কাজ করছে। ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করছে। ভারতের মিজোরাম, মণিপুর ও নাগাল্যান্ডে ৮০ থেকে ৯০ ভাগ খ্রিস্টান। বাংলাদেশের এ অঞ্চলের ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীর অভিবাসীদের খ্রিস্টান করে এখানে এরা একটা খ্রিস্টান রাষ্ট্র করার পরিকল্পনা করছে।
    প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ব্রিটিশের ১৮৯৯ অথবা ১৯০০ সালের একটি অ্যাক্ট ছিল যে চট্টগ্রাম পাবর্ত্য অঞ্চলকে আলাদা গুরুত্ব দেয়া হবে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকরা তাদের শাসন কাজের সুবিধার জন্য এ এ্যাক্ট জারি করেছিল। আমাদের স্বাধীন দেশে আমরা বাংলাদেশের সকল নাগরিক সমান মর্যাদার অধিকারী। যারা সেই অ্যাক্টের আলোকে দেশের কোনো অঞ্চলের অথবা অধিবাসীর আলাদা গুরুত্বের কথা বলে তারা ঔপনিবেশিক মানসিকতা লালন করে।
    সুতরাং এটার কোনো ভিত্তি নেই। স্বাধীন দেশ চলবে তার সংবিধান অনুযায়ী। ঐ অ্যাক্টের দোহাই দিয়ে তাদের আলাদা স্ট্যাটাস দেয়া যায় না। বাংলাদেশ পৃথিবীর ঘন জনবসতিপূর্ণ দেশ। চট্টগ্রাম পার্বত্য এলাকা দেশের এক দশমাংশ অর্থাৎ ১৩ হাজার বর্গ কিলোমিটার বা ৫ হাজার বর্গ মাইল। এখানে মাত্র ১৩ থেকে ১৫ লাখ মানুষ বসবাস করে। দেশের জনসংখ্যা অনুসারে সেখানে দুই কোটি মানুষ বসবাস করতে পারে।
    প্রসঙ্গত আরো উল্লেখ্য, উপজাতি পাহাড়িদের সম্পর্কে জাতিসংঘের রেজুলেশন প্রসঙ্গে বলা যায়, বাংলাদেশের জন্য এটা প্রযোজ্য নয়। কারণ এখানে কোন আদিবাসী নেই। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা, ভারত, নিউজিল্যান্ডসহ যেসব দেশে আদিবাসী আছে তাদের জন্য জাতিসংঘের এ রেজুলেশন। তবে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা নয়, আলাদা স্ট্যাটাস দেয়ার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীরা আদিবাসী হিসেবে কোথাও স্বীকৃত নয়। আর বর্তমান সরকারও তাদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকার করে না। এদেশের কোনো সরকারই তাদেরকে আদিবাসী হিসেবে স্বীকার করেনি। বাংলাদেশে বাঙালি ও বাংলা ভাষাভাষীরাÑ যারা প্রোটো-অ্যাস্ট্রোলয়েড (proto Astroloid) নামের আদি জনধারার অংশ বাংলাদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর তারাই একমাত্র আদিবাসী এবং Son of the Soil বলে দাবি করতে পারে। তাছাড়া আর কেউ আদিবাসী নয়। সুতরাং জাতিসংঘের এ রেজুলেশন আমাদের জন্য কখনোই প্রযোজ্য নয়।
    ২০১১ সালে জাতিসংঘের একজন রিপোর্টার এদেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী সম্পর্কে অনির্ভরযোগ্য কোনো উৎসসূত্র থেকে ইতিহাস-ঐতিহ্য, রাজনীতি, নৃতাত্ত্বিক বিষয় না জেনে যে রিপোর্ট দিয়েছে তা নিতান্তই পক্ষপাতদুষ্ট, অজ্ঞানতা প্রসূত এবং ভুল। উক্ত রিপোর্টার বেশ কিছু বিদেশী মদদপুষ্ট এনজিও’র দ্বারা প্রকাশিত বই ও বিভিন্ন সোর্স থেকে ভুল তথ্যের পক্ষে সাফাই করে এ রিপোর্ট দিয়েছে। যাদের তারা আদিবাসী বলছে আসলে তারা সেটেলার। তৎকালীন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী এর প্রতিবাদ করে বলেছে, ‘বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই’।
    ঐতিহাসিক তথ্য উপাত্তের নিরীখে আমরাও বলতে চাই, বাংলাদেশে কথিত আদিবাসীরা মূলত অভিবাসী তথা ক্ষুদ্রজনগোষ্ঠী। কিছুতেই জাতিসংঘ ঘোষিত বাড়তি সুবিধা এদেশের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী পেতে পারে না। কারণ তারা আদিবাসী নয়, অর্থাৎ অভিবাসী বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন সময়ে এ দেশে অনুপ্রবেশ করেছে।
    অতএব, সরকারের উচিত হবে- এসব রাজাকার, দেশ ও জাতির শত্রু, নৃ-তাত্ত্বিক ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী, মিশনারী এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে তিন পার্বত্য অঞ্চলকে রক্ষার নিমিত্তে অনতিবিলম্বে উপজাতিদের (কথিত আদিবাসীদের) বিভিন্ন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া। অর্থাৎ তাদেরকে কোনো অবস্থাতেই পার্বত্য অঞ্চলে সংঘবদ্ধ হয়ে ষড়যন্ত্র করার সুযোগ না দেয়া। পাশাপাশি ঐ অঞ্চলের স্থানীয় ও সারাদেশের ভূমিহীন বাঙালিদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাপকভাবে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে তিন পার্বত্যাঞ্চলে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করা। (ইনশাআল্লাহ চলবে)

আলোচনায় যোগ দিন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .