সিরিয়ার বিপন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো সংরক্ষণ করুন

এই পোস্টটি আমাদের সিরিয়ার বিক্ষোভ ২০১১ সংক্রান্ত বিশেষ কাভারেজের অংশ।

মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি সিরিয়ার ঐতিহ্যের বিরুদ্ধেও একটি গণহত্যা চলছে। এই সমস্যাটি সম্পর্কে মূলধারার এবং সামাজিক উভয় মিডিয়াতেই সামান্যই বলা হচ্ছে।

উদাহরণস্বরূপ, আপনি কি জানেন যে এই দেশের ছয়টি সাইট ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ (বিশ্ব ঐতিহ্য) তালিকাভুক্ত? সেগুলো হলো প্রাচীন নগরী আলেপ্পো, প্রাচীন নগরী বসরা, প্রাচীন নগরী দামেস্ক, উত্তর সিরিয়া প্রাচীন কিছু গ্রাম, ক্র্যাক দে শ্যাভেলিয়ে এবং পালমিরার কাল'আত সালাহ এল-দিন। এছাড়াও আরো ১২টি ঐতিহাসিক স্থান একটি সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছে।

৩০শে মার্চ, ২০১২ তারিখ থেকে ইউনেস্কো বিশ্বের কাছে সিরিয়ার পুরাকীর্তি সংরক্ষণের আবেদন করেছে। ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা বলেছেন:

“দেশের ঐতিহ্যের ক্ষতি মানে দেশটির মানুষের আত্মা এবং তাদের পরিচয়ের ক্ষতি।”

বিশেষ করে বিদ্রোহী ও শাসকগোষ্ঠীর সেনাবাহিনী ক্রসফায়ারের মধ্যে পড়ে গিয়েছে আলেপ্পো নগরী। এটাই আরো একবার জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান এবং এর অধীনস্থ ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির সতর্কীকরণে উৎসাহিত করেছে।

ধ্বংস, লুটতরাজ, লুণ্ঠন এবং অবৈধ পাচার… হাজার হাজার বছর ধরে টিকে থাকা ধনসম্পদের এটাই ভাগ্য।

সিরিয়ার ইতিহাসের ক্ষতি নথিবদ্ধ করতে ‘হুমকির মুখে সিরিয়ার প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য’ শিরোনামে একটি ফেসবুক পৃষ্ঠা এবং ইউটিউব অ্যাকাউন্ট তৈরী করা হয়েছে যেখানে আরবি, ফরাসি, ইংরেজি এবং স্প্যানিশ ভাষায় তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

সেই পৃষ্ঠাটির পিছনের কারো আসল পরিচয় দেয়া হয়নি। তবে মনে হয় তারা সেই দেশে কাজ করা সিরিয়ার বা অভিবাসিত প্রত্নতাত্ত্বিকদের একটি গোষ্ঠী।

কোন একটি নোটের এই আবেদনটি আমরা পড়তে পারি:

শান্তির জন্যে আমাদের সবচেয়ে আন্তরিক শুভেচ্ছা পাঠানো ছাড়া তাদেরকে এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে আমাদের সাহায্য করার তেমন কিছু নেই। তবে আমরা কিছু একটা করতে পারি। সিরীয়রা দেখছে তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কেমন বিপদের মধ্যে আছে কীভাবে এগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতি হচ্ছে। তাদের সমষ্টিগত সাংস্কৃতিক ঐশ্বর্যের একটি অংশ নাটকীয়ভাবে হারিয়ে যেতে পারে। এই ঐতিহ্য রক্ষা প্রচেষ্টায় অবদান রাখতে আমরা যা করতে পারি তা হলো: আমরা মাটি খূঁড়ে পাওয়া আমাদের সব প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান স্থানীয় জাদুঘরে পাঠিয়ে দিয়েছি অথবা আমাদের মিশন ঘরে রেখে এসেছি। দেশের অনেক অঞ্চলে বিদ্যমান অনিশ্চিত পরিস্থিতির কারণে এইসব উপাদানের বেশিরভাগ হারিয়ে যেতে পারে। তাই প্রিয় সহকর্মীবৃন্দ, আসুন হারিয়ে যেতে পারে এমন উপাদানগুলোর আমাদের আর্কাইভ তালিকা এবং ক্যাটালগগুলো প্রস্তুত করে রাখি। সময় হলে এই কাজটি সমস্যার পূর্ববর্তী পরিস্থিতিতে খুঁড়ে বের করা প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানসমূহের আরো ভাল রূপরেখা প্রণয়নে অবদান রাখবে।

উদাহরণস্বরূপ এটি হোমসের বাব আল দ্রেইবের ঐতিহাসিক এলাকাতে ধ্বংসের একটি উদাহরণ:

ধ্বংস করা হোমস নগরের বাব আল দ্রেইবের ঐতিহাসিক এলাকা

 

এটি হোমসের বাব আল তুর্কমান:

হোমস ধ্বংসের আগের আরেকটি ঐতিহাসিক অংশ

এবং এটি বিখ্যাত আলেপ্পো  দূর্গ আগে  এবং পরে::

একসময়ের খুব বিখ্যাত আলেপ্পো দূর্গটি

একটি পাথরের ব্লক।  বিখ্যাত আলেপ্পো দূর্গ এরকম হয়ে উঠছে

মিদান এলাকার প্রাচীন বাজারটিও  ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে:

দামেস্কের মিদান এলাকার পুরানো বাজারের দশা এরকম হয়েছে

ইউটিউবে কিছু সংখ্যক ভিডিও ঐতিহাসিক স্থানের  সাইটের ক্ষতির পরিমাণ প্রদর্শন করছে। এখানে একটি নমুনা দেয়া হলো:

এটি বোমা বর্ষিত তেল বিসি’র এটি আবু উবাইদাহ আল জাররাহ মসজিদ:

প্রাচীন নগরী আলেপ্পোর অবস্থা

একটি শেলের আঘাতপ্রাপ্ত সাইদানিয়ার মঠ:

কালা’ত আল মাদিকে বোমাবর্ষণ- আপামে দূর্গ

সিরিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ করার জন্যে একটি পিটিশন  আভা’জ-এ পাওয়া যাচ্ছে।

দ্রষ্টব্য: সমস্ত ছবি “সিরিয়ার বিপন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য” ফেসবুক পৃষ্ঠা অথবা ইউটিউব থেকে নেয়া

এই পোস্টটি আমাদের সিরিয়ার বিক্ষোভ ২০১১ সংক্রান্ত বিশেষ কাভারেজের অংশ।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .