সিঙ্গাপুর: অনলাইন পোর্টালে মিথ্যা তথ্য

সিঙ্গাপুর প্রেস হোল্ডিং-এর নাগরিক সাংবাদিকতা বিষয়ক পোর্টাল এসটিওএমপি জনগণের একজন বেনামী সদস্য হিসেবে সাইটটিতে একজন বিষয়বস্তু প্রযোজকের মিথ্যা সংবাদ প্রদর্শন আবিষ্কৃত হওয়ার পর থেকে নিজেই একটি বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছে।

গত সপ্তাহে শুধু ‘ওয়াসাবি’ নামে চিহ্নিত একজন প্রদায়ক এসটিওএমপি-তে পুরোপুরি দরজা খোলা একটি দ্রুতগতির গণ পরিবহণ (এমআরটি) ট্রেনের একটি ছবি পোস্ট করেছেন। নিবন্ধটিতে অভিযোগ করা হয়েছে যে চলন্ত ট্রেনে খোলা দরজা – একটি গুরুতর নিরাপত্তা সমস্যা। তারপর এই গল্পটি লুফে নেয় ট্যাবলয়েড পত্রিকা দি নিউ পেপার।

এমআরটি পরিষেবা প্রদানকারী এসএমআরটি কোম্পানি সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাটির তদন্ত করে, যাতে তারা দাবি করে যে ট্রেনগুলো যে সব নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য নিয়ে এসেছে তা অনুসারে দরজা খোলা অবস্থায় এদের চলা অসম্ভব। প্রদায়ক ‘ওয়াসাবি’ এসটিওএমপি’র বিষয়বস্তু প্রযোজক মিজ সামান্থা ফ্রান্সিস হিসেবে আবিষ্কৃত হয়ার পর তাকে এসএমআরটি’র তদন্তে তাদের কর্মকর্তাদের সাহায্য করতে বলা হয়।

তবে এসএমআরটি এবং মিজ ফ্রান্সিসের ইজি-লিংক কার্ডের উভয় সিসিটিভি ফুটেজ নীরিক্ষণে দেখা যায় যে রাতে নির্দিষ্ট স্টেশনটিতে কথিত ছবিটি তোলা নেয়া হয়েছে তিনি সেখানে ছিলেন না। এই আবিষ্কার সিঙ্গাপুর প্রেস হোল্ডিংসকে নিজস্ব তদন্ত করতে অগ্রসর করে। অবশেষে মিজ ফ্রান্সিস স্বীকার করেন যে তিনি সে রাতে স্টেশনটিতে ছিলেন না এবং ছবিটি তিনি টুইটারে পেয়েছেন। এর মধ্যে মূল টুইট সরিয়ে ফেলা হয়।

এসপিএইচ এসএমআরটি’র কাছে ক্ষমা চায় এবং একই দিনে মিজ ফ্রান্সিসকে বরখাস্ত করা হয়।

এমআরটি দরজা

এই ছবিটি এসটিওএমপি’তে আপলোড করা হয় গত সপ্তাহে।

এসপিএইচ সব সময় এসটিওএমপি’কে নিয়ে বড় মুখ করে কথা বলেছে এবং এটিকে জনসাধারণের সদস্যদের অবদানে পরিচালিত এটি একটি “নাগরিক সাংবাদিকতা” মঞ্চ হিসেবে বাজারজাত করেছে। তবে সিঙ্গাপুরের অনেক অনলাইন সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট সদস্যরা এই সাইটটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এটি স্থানীয় বিভিন্ন সমস্যার তৃণমূল পর্যায়ের রিপোর্টের চেয়ে দম্পতিদের আবেগঘন ছবি প্রকাশের জন্যে বেশি পরিচিত।

লি কিন মুন উল্লেখ করেছেন যে এখানে একাধিক সমস্যা কাজ করছে:

আমি নিশ্চিত নই যে (শুধু) একটি জাল ছবি পোস্ট বা একজন বেনামী জনগণ হিসেবে অথবা উভয় হিসাবে এটি পোস্ট করার কারণে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এসপিএইচ কী তাদের কর্মীদের “স্টম্পারস” হিসেবে “স্কুপ” পোস্ট করার চর্চা অনুমোদন করে। আমি অবাক হই?

সরকারের বিকল্প মিডিয়াকে তীর্যক এবং অবিশ্বাসযোগ্য হিসাবে প্রতিভাত করার ধারাবাহিকভাবে চেষ্টার পর এই পর্বটি সরকার সংযুক্ত মূলধারার মিডিয়াতে সিঙ্গাপুরীদের বিশ্বাস স্থাপনের প্রচেষ্টাকে আরো ক্ষতিগ্রস্থ করেছে।

হা-করা রুটি’তে অ্যালেক্স এইউ লিখেছেন, এখন সরকারের মূলধারাপন্থী মিডিয়ার দাবিগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়েছে:

তাছাড়া শুধুমাত্র এসপিএইচ (এবং এর মতো সরকার-সংযুক্ত মিডিয়াকর্প)  দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা করে – তাদের এই দাবি পুণঃপরীক্ষা করার মতো করে সরকারী বৃত্তের মধ্যে এমন কেউ নেই। কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার সেটা হয়ে গিয়েছে। এখন থেকে  যে কোনো সময় সরকার নতুন মিডিয়াকে অবিশ্বাসযোগ্য রূপ দেয়ার চেষ্টায় রত, তারা এই ঘটনাটিকে তাদের দিকে ছূঁড়ে দেয়া অনেকগুলো ক্রিম পাইয়ের মতো গ্রহণ করবে। পিফ্ল্যাপএইচটিটি

তারপর তিনি একটি সম্ভাব্য দ্বৈতমানকে প্রশ্ন করেন:

ওহ, যাই হোক, আমরা কেন এর ক্ষতি সম্পর্কে কিছু শুনছি না?  কোন ব্লগার একই ঘটনা ঘটালে এসএমআরটি কিংবা সরকার-সংশ্লিষ্ট কোন সংস্থা কী দ্রুতই উকিল নোটিশ পাঠাতো না?

সাবেক সাংবাদিক বার্থা হেনসন মিজ ফ্রান্সিসের সমালোচনা করেছেন তার নৈতিকতা এবং পেশাদারিত্বের অভাবের কারণে:

কিন্তু ফাঁদে পড়েছে বর্তমান এসটিওএমপি মামলাটি। মহিলা (আমি তাকে সাংবাদিক বলবো না) বরখাস্ত হয়েছেন। তিনি তার সম্পাদককে ফাঁসিয়েছেন,  তার বক্তব্য অনুসারে ওয়াসাবি নামের একজন নেটনাগরিকের কাছ থেকে নেয়া একটি স্টেশনে খোলা দরজার একটি ছবি পোস্ট করে যেখানে তিনি ছিলেনই না। তারপর এসএমআরটি পরীক্ষা করতে এলে তিনি নির্লজ্জভাবে সেটাকেই সমর্থন করেন। শুনুন, দরজা খোলা/চলন্ত ট্রেন… কোন নিরাপত্তা সমস্যা নয়? এমনকি তার সম্পাদক তাকে এটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার পরও তিনি তার গল্পের পক্ষ নেন। এটি ছিল সবার মুখের উপর (পঁচা) ডিম।

টুইটার ব্যবহারকারীরাও এসটিওএমপি এবং মিজ ফ্রান্সিসের সমালোচনা করেছে:

@আকাবআর: হয়তো  ‪#এসপিএইচ’র ঠিক কাজটি করা উচিৎ করতে এবং ‪ #এসটিওএমপি’র ধারণা এবং উদ্দেশ্য পুনর্বিবেচনা করা দরকার।

@উনহিয়ান: শ্রীমতি সামান্থা ফ্রান্সিস, গর্তে পড়লে সেটা আরো না খূঁড়ে আপনাকে উঠার চেষ্টা করতে হবে। (আপনি তো জানেন, এসএমআরটি’র ছেলেরা সবসময় খারাপ নয়।)

@লিয়াংকিয়াজিন: সাধারণ জনগণের কাছে জমা না দিলে সেটা নাগরিক সাংবাদিকতা নয়।  কিন্তু আপনার বিষয়বস্তু প্রজোযকেরা অসংলগ্ল কথাবার্তাগুলো চুরি করে নিয়ে গিয়েছে এসটিওএমপি  #সত্যভাষণ

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .