ইরান: আফগানদের বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্যের প্রেক্ষাপটে একটি পাতার সূচনা

Source: Facebook.com/Humanrightsreporters

ইরানের নগরী ইস্পাহানে বাস করা বেশ কয়েকজন আফগান নাগরিককে, ১ এপ্রিল, ২০১২ তারিখে, নববর্ষ উদযাপন উৎসব নওরোজের তৃতীয় দিনে কর্তৃপক্ষ পার্কে প্রবেশ করতে বাধা প্রদান করে, ইরানের বেশ কয়েকজন ব্লগার এই সংবাদে তাদের বিরক্তি প্রকাশ করেছে। এই দিনগুলোতে বাইরে বনভোজন করে কাটানো এই অঞ্চলের একটা প্রথা। যদিও ইস্পাহানের এক সরকারি কর্মকর্তা এই ঘটনার কথা অস্বীকার করেছে [ফারসী ভাষায়] যে আফগানরা এ রকম কোন নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তু ছিল না, এই ঘটনার পর ইরানী নাগরিকদের বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উৎসাহ প্রদানের জন্য ফেসবুকে একটি পাতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এই পাতার যে লোগো, তাতে বলা হয়েছে, “ আমরা সকলে আফগানী”। প্রায় ৪০০০ নাগরিক এ প্রচারণাকে সমর্থন করেছে।

বেশ কিছু সংবাদ অনুসারে,
অনেক বৈধ অভিবাসী এবং উদ্বাস্তু ছাড়াও, ইরানে অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ আফগানী নাগরিক বাস করে।

ইরানী ব্লগার সেপিড এন্ড সিয়াহ (যার মানে হচ্ছে সাদা এবং কালো) বলছে [ফারসী ভাষায়]:

আমার আফগান ভ্রাতা এবং ভগ্নি, আমি লজ্জিত। আমি লজ্জিত এই কারণে যে আমার স্বদেশ, যেখানে আপনারা উদ্বাস্তু, সে দেশটি আপনাদের প্রতি তেমন অতিথিপরায়ণ নয়…কিন্তু ক্ষমতাসীন কিছু মানুষের কাছ থেকে আমি কি আশা করতে পারি, যারা বছরের পর বছর আপনাদের অপমান করে আসছে, যারা কিনা যথারীতি ইরানী নাগরিকদেরও অপমান করে থাকে। কিন্তু আমি লজ্জিত এই কারণে যে আমার স্বদেশের নাগরিকরা আপনাদের উপলব্ধি করতে পারছে না।

খোরশিদনেশান লিখেছে [ফারসী ভাষায়]:

বর্ণবাদ ইরানী নাগরিকদের অন্যতম এক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। সমস্যা কেবল ইসলামিক প্রজাতন্ত্র বা ইস্পাহানের নির্বোধ কর্মকর্তাদের মাঝে বিরাজ করছে না, যারা পার্কে আফগান নাগরিকদের জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে, সমস্যা আমাদের মাঝেও [ইরানী নাগরিক] রয়েছে, কারণ আমরা এটিকে সমর্থন করি এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি না…। আফগান নাগরিকদের বিরুদ্ধে বৈষম্য নতুন কিছু নয়। এমনকি দীর্ঘ সময় ধরে ইরানে বাস করার কিংবা ইরানী নাগরিককে বিয়ে করার পরেও, একজন আফগান নাগরিকের জন্য ইরানের পরিচয়পত্র পাওয়া খুব কঠিন অথবা অসম্ভব বিষয়।

শাহিন শার ব্লগ বলছে [ফারসী ভাষায়], আসুন আজ থেকে ইরানে আফগানী নাগরিকদের বিরুদ্ধে প্রচলিত বর্ণবাদের ইতি টানি। ব্লগার বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করেছে, যার মধ্যে একটিতে দেখা যাচ্ছে যে, কি ভাবে আফগানিদের এক সুইমিং পুলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ইরানের প্রচন্ড সেন্সরশিপের কারণে আমরা কখনোই জানতে পারব না সেদিন পার্কে আসলে কি ঘটেছিল। তবে আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে, অনেক ইরানী জানে যে ইরানে ক্রমাগত আফগানদের বিরুদ্ধে বৈষম্য বজায় রাখা হচ্ছে এবং তারা একটি নতুন পাতা চালু করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .