উত্তর কোরিয়ার ব্যর্থ রকেট উৎক্ষেপণ প্রসঙ্গে বিভিন্ন মত

উত্তর কোরিয়া আরো বিচ্ছিন্নতা এবং আন্তর্জাতিক নিন্দার হুমকি সত্ত্বেও ১২ই এপ্রিল ২০১২ তারিখে একটি রকেট উৎক্ষেপণ করে।  তবে একে বিব্রত করে দিয়ে রকেটটি উৎক্ষেপণের পরপরই ভেঙ্গে পড়ে এবং এর অবশিষ্টাংশগুলো সমুদ্রের মধ্যে গিয়ে পড়ে। এই ঘটনাটি দক্ষিণ কোরিয়ার ইন্টারনেটে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।

রকেট উৎক্ষেপণটি্র ব্যর্থতার সংবাদটির একটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াতে বিস্ময়কর পরিমাণ অর্থের অপচয় নিয়ে আফসোস করা হচ্ছিলো যা দিয়ে লক্ষ লক্ষ অনাহারী উত্তর কোরীয়দের খাওয়ানো যেত। কিম সান-জুনের একটি মন্তব্য এমন ছিল [কোরীয় ভাষায়]:

1년치 옥수수를 다 태워 버렸네.

তারা এক বছরের সমপরিমাণ ভুট্টার (যা দিয়ে উত্তর কোরীয়দের খাওয়ানো যেতে পারতো) [টাকা] জ্বালিয়ে দিলো [উল্লেখ্য: ভুট্টা মূলতঃ একটি সম্পূরক ফসল হলেও কয়েক দশক ধরে দেশে চালের গুরুতর ঘাটতির কারণে উত্তর কোরিয়া অন্যতম প্রধান একটি ফসল হয়ে উঠে]
যৌথ নিরাপত্তা এলাকায় - অসামরিকীকৃত কোরীয় এলাকায় দায়িত্ব পালন করার সময় উত্তর কোরীয় সৈন্যরা দক্ষিণ দিকে তাকিয়ে আছে। পাবলিক ডোমেইনের ছবি

যৌথ নিরাপত্তা এলাকায় – অসামরিকীকৃত কোরীয় এলাকায় – দায়িত্ব পালন করার সময় উত্তর কোরীয় সৈন্যরা দক্ষিণ দিকে তাকিয়ে আছে। পাবলিক ডোমেইনের ছবি, উইকিপিডিয়ার মাধ্যম হয়ে।

কিম কোয়াং সু অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উত্তর কোরীয় বিশ্লেষক, ইউন জায়ে-ওন (@ওয়াইজেডাব্লিউ২৩_কেসেরি) ছয়টি টুইট করেছেন যা অন্যান্য ব্যবহারকারীরা বহুবার পূণঃটুইট করেছেন। উত্তর কোরিয়ার রকেট উৎক্ষেপণকে একটি ‘নিন্দনীয় কর্ম’ হিসেবে নিন্দা জানিয়ে [কোরীয় ভাষায়] যা ধীরে ধীরে অগ্রগতির দিকে যাওয়া বর্তমান ছয়-দলীয় আলোচনাটিকে নষ্ট করে দিতে পারে। ইউন তখন আন্তর্জাতিক অবরোধের কার্যকারিতার প্রকাশ্য বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করেন  [কোরীয় ভাষায়]:

그런데 북한을 어떻게 다룰 것인가 하는 것은 현실적인 측면을 고려할 필요가 있습니다. 유엔안보리를 통해 북한을 비난하는 것은 자연스러운 반응이지만, 북한에 강경대응으로만 일관했을 때 더 큰 문제를 불러일으킬 수 있기 때문입니다.

তবে উত্তর কোরিয়াকে সামলানোর ব্যাপারে বাস্তবমুখী হতে হবে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে শুধুমাত্র উত্তরকে দোষারোপ করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এধরনের শ্যেন দৃষ্টিভঙ্গী এবং এই ধরনের পদক্ষেপের এক হাতে ব্যবহার বুমেরাং হতে পারে এবং ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যা ডেকে আনতে পারে।

ইউন আরো [কোরীয় ভাষায়] ব্যাখ্যা করেছেন:

제재로 일관하는 것은 국제사회에서 북한을 더욱 고립시킴으로써 오히려 김정은 체제의 내부결속을 다지는 결과를 초래하게 될 것입니다. 이런 상황일수록 이명박정부가 상황을 관리하고 북한을 고립시키지 않음으로써 개혁개방으로 유도하는 것이 중요합니다.

এক এবং একমাত্র [কূটনৈতিক কৌশল] হিসাবে আন্তর্জাতিক অবরোধের ব্যবহার উত্তর কোরিয়াকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে আরো বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে। এবং এটি কিম জং-উনকে [দেশটির বর্তমান নেতা] তার নামের পিছনে জনগণকে বেশি করে শ্রেণীবদ্ধ করে তাকে ক্ষমতায় আরো সংহত করতে পারে। উত্তর কোরিয়াকে বিপ্লব এবং খোলা বাজারের দিকে ধাবিত করার জন্যে, লি মিউং-বাক [দক্ষিণ কোরিয়া বর্তমান প্রেসিডেন্ট] প্রশাসনের এই পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়া এবং তাদেরকে আরো দূরে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা না করা উচিৎ।

দাউম আগোরা ফোরাম ব্যবহারকারী এসটিকেটি উত্তর কোরিয়ার রকেট উৎক্ষেপণ বর্ণনা করতে  ‘ব্যর্থ’ শব্দটি ব্যবহার করতে [কোরীয় ভাষায়] রাজি নন, কারণ বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বিশেষ করে মহাকাশ উন্নয়ন কর্মসূচীর ক্ষেত্রে ব্যর্থতা বলে কিছু নেই:

로켓발사는 애당초 실패라는 개념이 일반적인 실험과 다르다.일반적인 무기실험과 달리 로케트는 발사를 해봐야 실험 데이타를 얻는다. 로켓발사 실험에 있어서는 실패와 성공의 기준은 무엇이 잘못되었는지를 확인할 수 있는 실험 데이타와 노하우를 얻었는지의 여부인 것이지 기체의 발사결과 자체가 아닌 것이다.

সাধারণ পরীক্ষামূলক পরিস্থিতিতে বহুল ব্যবহৃত ‘ব্যর্থতা’ পদটি রকেট উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। নিয়মিত অস্ত্র পরীক্ষাগুলো থেকে এটা আলাদা কারণ (রকেট পরীক্ষার ক্ষেত্রে) তথ্য পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো সত্যিকার অর্থেই একটি রকেট উৎক্ষেপণ করা। এখানে গুরুত্বপূর্ণ হলো পরীক্ষা সময় তারা অর্থপূর্ণ উপাত্ত (ডাটা) বের করতে সফল হয়েছে কিনা এবং তারা একটি শিক্ষা লাভ করেছে কিনা, রকেটটি নিজে ঠিকমতো হয়েছে কিনা তা নয়

দাউম আগোরা ব্যবহারকারী সিজার্স২১ একটি মজার দৃষ্টিকোণ ব্যবহার করেন  [কোরীয় ভাষায়]:

북한의 로켓 발사가 실패했다는 소식이 반가우면서도  한편으로는 로켓 발사와 관련된 북한사람 중에 얼마나  많은 사람들의  목이 달아날까도 생각해 봤습니다.핵심 기술을 가진 과학자야 빳다 맞고 목숨은 건지겠지만 누군가는 책임지고 수용소에 끌려가거나  죽는 사람이 생길지도 모른다는 생각하니 씁쓸하네요. […]우리나라 사람중에서도 고초를 겪는 사람이 있습니다.다름아닌 주식투자자입니다. 며칠전 북한의 로켓 발사가 임박했다는 소식이 전해지자 방위산업 관련주들이 테마주에 편입되면서 급등했습니다.

যদিও আমি উত্তর কোরিয়ার ব্যর্থ রকেট উৎক্ষেপণের সংবাদটিকে স্বাগত জানাই, একইসাথে আমি রকেট উৎক্ষেপণ কর্মসূচীর সাথে যুক্ত উত্তর কোরীয়দের বিপদপূর্ণ জীবন সম্পর্কে উদ্বিগ্ন। কর্মসূচীটি সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান থাকার জন্যে [এই জ্ঞানের কারণে] এসব বৈজ্ঞানিকরা [সরকারের] পিটুনি খাওয়ার পরও জীবনে বেঁচে যেতে পারেন, কিন্তু আমি [সাধারণ] বিজ্ঞানীদের ব্যাপারে সত্যিই দুঃখিত যাদের ব্যর্থতার জন্যে বন্দী ক্যাম্পে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে।[…] এবং এই উৎক্ষেপণ ব্যর্থতার ভুক্তভোগীদের মধ্যে দক্ষিণ কোরীয় রয়েছে: যারা এর স্টকে বিনিয়োগ করেছিল। গত কয়েকদিনে উত্তর কোরিয়ার আসন্ন রকেট উৎক্ষেপণ ব্যর্থতার খবরটি ছড়িয়ে পড়ার আগে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা শিল্পে স্টক অন্তর্ভুক্ত দলবদ্ধ স্টক প্যাকেজের মূল্য তুঙ্গে ছিল।

দাউম আগর ব্যবহারকারী 이건좀아니다 উত্তর কোরীয় বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরী করে দরকষাকষির কৌশল সম্পর্কে ব্যাখ্যা করে অভিযোগ করেন [কোরীয় ভাষায়] যে যেহেতু এর হুমকির ধরন গুলো কয়েক দশক ধরে পরিবর্তিত হয়নি, এরকম একটি ভয়ানক অবস্থা সামলানোর জন্যে কার্যকর কৌশল নিয়ে এখন দক্ষিণ কোরিয়া সরকারেরই এগিয়ে আসার পালা।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .