মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: অভিবাসী সংস্কৃতি বিরুদ্ধে আরেকটি আঘাত

১৯৯৮ সালে আরিজোনার টাকসনে পাবলিক স্কুলের পাঠ্যক্রম থেকে মেক্সিকান-আমেরিকান শিক্ষা কর্মসূচী বাদ দেয়ায় বিক্ষুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। অনেকের কাছে, এই কর্মসূচীটি বাদ দেয়া এবং একটি বিপুল সংখ্যক বই বাজেয়াপ্ত করা অতি রক্ষণশীল পরিকল্পনার জীবন্ত উদাহরণ যা এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক বিস্তারকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

গত জানুয়ারিতে টাকসনের স্বাধীন স্কুল জেলার অধীক্ষক জন হাপেথাল এই সিদ্ধান্তটিকে অনুমোদন দিয়েছেন এইচবি ২২৮১ আইনের এআরএস-১৫-১১২ সংবিধির উপর ভিত্তি করে। জেসমিন ভিলা ল্যাটিনিটাসম্যাগাজিনে যেমন ব্যাখ্যা করেছেন এই আইন যে সমস্ত কোর্স বা ক্লাস নিষিদ্ধ করে যেগুলো:

  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে উৎখাতে উৎসাহ যোগায়।
  • মানুষের একটি জাতি বা গোষ্ঠীর প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টিতে উৎসাহ যোগায়।
  • মূলতঃ একটি বিশেষ নৃ-জাতিগোষ্ঠীর ছাত্রদের জন্য প্রস্তুত করা।
  • ছাত্রদের ব্যক্তি হিসাবে বিবেচনার পরিবর্তে নৃ-জাতিগোষ্ঠীর প্রতি সংহতি প্রচার করে।

এখানে বাজেয়াপ্ত কিছু বইয়ের একটি তালিকা দেয়া হল:

  • লেসলি সিলকোর “পুনর্বিবেচনায় কলম্বাস: পরবর্তী ৫০০ বছর”
  • “উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের “দি টেম্পেস্ট”
  • পাওলো ফ্রেইরির “অত্যাচারিতের শিক্ষণ বিজ্ঞান”
  • রুডলফো অ্যাকিউনিয়ার “অধিকৃত আমেরিকা: চিকানোদের একটি ইতিহাস”
  • আরতুরো রোজালেসের “চিকানো: মেক্সিকান-আমেরিকান নাগরিক অধিকার আন্দোলনের ইতিহাস”
  • ইসাবেল মার্তিনেজের “ছবিতে চিকানোদের ৫০০ বছরের ইতিহাস”

সম্পূর্ণ তালিকাটি পড়ার জন্যে এখানে ক্লিক করুন।

এখানে টাকসনে নৃ-জাতিগোষ্ঠী শিক্ষা নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ছাত্র ও শিক্ষকদের প্রতিবাদের একটি ভিডিও:

প্রত্যাশিতভাবেই রাষ্ট্র যে সংহতি নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছে তা শুধুমাত্র টাকসনে নয় বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চল জুড়ে অনুভূত হয়েছে। শিক্ষা, সাহিত্য এবং মতামত প্রকাশের স্বাধীনতায় নিবেদিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য লেখকদের পাশাপাশি জুনোৎ দিয়াজ, লরা এস্কুইভেল, আনা কাস্তিলো এই অসাংবিধানিক পদক্ষেপটি প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

মেক্সিকান-আমেরিকান শিক্ষা পাঠ্যক্রম পুনরায় চালুর সমর্থনে বিভিন্ন অনলাইন পিটিশনের পাশাপাশি ব্লগ নির্মিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ইতিহাস নিষিদ্ধকরণ, নিষিদ্ধ বইগুলোর অংশবিশেষ পাঠ করছে, গাইছে বা প্রদর্শন করছে এমন ভিডিও গ্রহণ করছে।

দর্শনের পুনর্বিবেচনা সঙ্গে যৌথভাবে সক্রিয় শিক্ষক দল, টিএজি সচেতনতা বাড়াতে “কোন ইতিহাসই বেআইনী নয়: আমাদের গল্প সংরক্ষণের একটি প্রচারাভিযান” নামক একটি প্রচারণা চালু করে। তারা অবশ্য কথা বলার স্বাধীনতা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বিষয়ক বিভিন্ন পাঠসহযোগে নিষিদ্ধ কর্মসূচির পাঠ্যক্রমভিত্তিক একটি বর্ধিত পাঠ্যসূচি প্রস্তুত করেন।

নিশ্চিতভাবেই সংহতির এই তরঙ্গ আরো শক্তিশালী হবে কারণ এটি ক্ষমতার অপব্যবহার, ভয় এবং বর্ণবাদের খুব কার্যকর একটি প্রতিষেধক। মার্চে লিব্রোত্রাফিকান্তে ক্যারাভান টেক্সাসের হাউস্টন থেকে আরিজোনার টাকসনে পৌঁছাবে নিষিদ্ধ বইগুলো বিতরণের জন্যে।

এখানে লেখক টনি ডিয়াজ আয়োজিত ক্যারাভান প্রজেক্টের একটি ভিডিও।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .