ইরানঃ এক নিখোঁজ ব্লগার এবং দুটি বেদনাদায়ক আত্মহত্যা

ইরানের মানবাধিকার সংস্থার আর্ন্তজাতিক প্রচারণা বিভাগ প্রাক্তন দুই বন্দী এবং কোহিইয়ার গোদরেজির সাথে সম্পৃক্ত নাগরিকের সম্প্রতি আত্মহত্যার বিষয়ে দ্রুত এক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। গোদরেজি এক মানবাধিকার কর্মী এবং ব্লগার। ইরানের গোয়েন্দা সংস্থার হাতে ৩১ জুলাই ২০১১-এ, গ্রেফতার হয়ে তেহরানের এভিন কারাগারে বন্দী হবার পর থেকে তার আর কোন খবর পাওয়া যাচ্ছে না।

নিরাপত্তা বাহিনী গোদরেজিকে গ্রেফতার করে, সে সময় তার বেশ কয়েকজন বন্ধুকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ৩১ জুলাই, ২০১১-এ, ২২ বছর বয়সী বেহনাম গানজিকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীকালে গোদরেজির আরেক বন্ধু ৩৭ বছর বয়সী নাহাল সাহাবীকে কর্তৃপক্ষ জিজ্ঞাসাবাদ করে। মুক্তি লাভের পর ১ সেপ্টেম্বর গানজি এবং ২৮ সেপ্টেম্বর নাহাল আত্মহত্যা করে।

যদিও, যে কেউ এই ঘটনায় একটা রোমান্টিকতার উপাদান খুঁজে পাবার বিরোধিতা করতে পারে, অথবা আত্মহত্যার এক ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করতে পারে, তবে অনেক ব্লগার বিশ্বাস করে যে কারাগারে গানজি যে যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছিল, তার ফলে সে তার জীবনের ইতি টেনেছে। বিশ্বাস করা হয় যে, এই জুটির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং তাদের কাহিনী জনপ্রিয় হয়ে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল।

ব্লগার জাহানজানান এই ঘটনা বর্ণনা করার ক্ষেত্রে তার পোস্টের শিরোনাম “ প্রেমিক প্রেমিকার মৃত্য” বেছে নিয়েছেন [ফার্সী ভাষায়]। এই ব্লগে মাশিহ আলিনজিয়াদের একটি লেখা পুনরায় প্রকাশিত হয়েছে। মাশিহ এক মহিলা সাংবাদিক:

“আজ বৃহস্পতিবার। নাহাল নামের একটি মেয়ে এক বালককে ভালবাসত, যার নাম বেহনাম গানজি। বেহনাম ছিল মানবাধিকার কর্মী এবং প্রতিবাদকারী কোহইয়ার –এর এক বন্ধু। যাকে কোহইয়ার-এর সাথে গ্রেফতার করে হয়, প্রচার মাধ্যম এই সংবাদ প্রকাশ করেনি। মুক্তির পর বেহনাম আত্মহত্যা করে… আর এখন নাহাল তার জীবনের ইতি টানল……এমন অনেকে আছে যারা “মেয়ে বন্ধু” শব্দটি শুনলে বিরক্তি হয়…। কিন্তু আমি আজকের কিছু পত্রিকার সংবাদে দেখলাম তারা লিখেছে, “ বেনহামের পর, তার মেয়ে বন্ধু নিজে নিজেকে হত্যা করল”…..। ঘুমাও সুন্দরী বালিকা…।

গানজির মৃত্যুর পর, নাহাল তার ব্লগে একটি কবিতা লিখেছিল [ফার্সী ভাষায়] এবং সেখানে ইউটিউবের একটি ভিডিও যুক্ত করেছিল: এটি এলেনী কারাইন্দারুজ-এর ওয়েডিং ওয়াল্টজ

এনসিলোস বলছে:

কোহইয়ার এর বিরুদ্ধে স্বীকারোক্তি প্রদান করার জন্য বেনহামের উপর ভয়ানক চাপ প্রদান করা হয়। কোহইয়ার এখনো কারাগারে। বেনহাম এবং নাহালের মৃত্যুর জন্য আমি ইসলামিক প্রজাতন্ত্রকে দায়ী করছি।

ক্রেজি ফ্রিডম ফাইটার বলছে:

আমাদের অনেককে জাগিয়ে দিয়ে, নেহাল ঘুমিয়ে গেছে। সে আমাদের বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসার মূল্যকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে গেছে।

গোদরেজি এখনো জেলে, কিন্তু সে কথায় এবং কি অবস্থায় আছে তা এখনো অজানা। ২০০৯ সালে তার শেষ পোস্টে গোদরেজি নিজে জেলে থাকা একটিভিস্টদের মুক্তি প্রদানের আহ্বান জানান [ফার্সী ভাষায়]।

আত্মহত্যা প্রতিরোধযোগ্য এবং যদি কারো মনে আত্মহত্যা করার ইচ্ছা জাগে, তাহলে অবশ্যই সে সাহায্যের জন্য অনুসন্ধান করতে পারে। বিশ্বে যে সব ব্যক্তির আত্মহত্যা করার ইচ্ছা জাগে এবং যারা মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত, তাদের জন্য সুইসাইড.অর্গ এবং বিফ্রেন্ড ওয়ার্ল্ডওয়াইড গোপনীয়তা বজায় রেখে সাহায্য করে থাকে।

আলোচনায় যোগ দিন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .