ফিলিপাইনসঃ রাষ্ট্রপতির ভালবাসা শূন্য জীবন

ফিলিপাইনসের অবিবাহিত রাষ্ট্রপতি নোয়নোয় একুইনো তার জীবনে ভালবাসার ঘটনার তুলনা করতে গিয়ে, তাকে একটি কোমল পানীয়ের সাথে তুলনা করেছেন। তিনি পাঁচ দিনের এক রাষ্ট্রীয় সফরে চিন ভ্রমণের সময় এই কথা বলেন, যা কেবল অনলাইনে হাস্যরসেরই নয়, সমালোচনারও সৃষ্টি করেছে।

“May nagtanong ho kasi sa akin, sabi niya, ‘kamusta love life mo?’ Eh ang sabi ko po sa kanya, parang Coca-Cola. Noong araw, ‘regular.’ Naging ‘light.’ Ngayon, ‘zero,'” said the president.

একজন আমাকে জিজ্ঞেস করছে, এখন আপনার জীবনে প্রেমের ঘনঘটার কি অবস্থা সম্বন্ধে জানান? একুইনো বলেছে, “আমি উত্তর দিলাম এটা এখন কোকাকোলার মত। অন্য সময়ে তা নিয়মিত, একটা সময় ক্রমশ হালকা হয়ে আসে, এখন তা শূন্যের কোঠায়।

রাষ্ট্রপতি প্রচার মাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, গত বছর, বান্ধবী সোলেদাদ সালানির সাথে সম্পর্ক ভেঙ্গে যাবার পর থেকে তিনি ভিন্ন ভিন্ন বেশ কয়েকজন নারীর সাথে ডেট (সম্পর্কে যাবার আগে জানাশোনা) করছেন। চিনে তার এই রাষ্ট্রীয় সফরের উদ্দেশ্য ছিল ফিলিপাইনে, চিনা বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করা।

রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্য দ্রুত মানুষের মধ্যে এক ব্যাপক বিনোদন প্রদান এবং ধারণার সৃষ্টি করে যে এর পর রাষ্ট্রপতি কার প্রেমে পড়বেন।

যদি তার ভালবাসার জীবন এখন শূন্যের কোঠায় অবস্থান করছে, তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, তার পরবর্তী ভালবাসার জনটি কে? এবং কখন দেশবাসী রাষ্ট্রপতি প্রসাদে এক বিশাল এক বিবাহ অনুষ্ঠানের দৃশ্য প্রত্যক্ষ করবে?

তবে অনেকে এই মন্তব্যে ততটা মজা পাননি, নট অফলাইন দেশের অবিবাহিত রাষ্ট্রপতির ভালবাসা কেন জাতীয় আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে, সেই বিষয়ে ব্লগ করেছে।

আমি স্মরণ করতে পারি, প্রচার মাধ্যম তার ব্যক্তিগত জীবনের সীমা পার করে প্রবেশ করায় তিনি যে বিরক্ত হয়েছিলেন, যার ফলে এমন ধারণা হয়েছিল যে প্রচার মাধ্যমের এই বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানো উচিত নয়। আর তার পরের দিন। তিনি নিজেই এই বিষয়ে মুখ খুললেন।

মানবাধিকার শূন্যের কোঠায়

এদিকে মানবাধিকার রক্ষায় সোচ্চার নাগরিকরা রাষ্ট্রপতির এই ভালবাসা শূন্য জীবনকে মানাবাধিকার পরিস্থিতি রক্ষায় তার যে প্রতিশ্রুতি, তা পুরণের ব্যর্থতার সাথে তুলনা করেছে

দি মোকং পারসপেকটিভ দীর্ঘ দিন ধডি সেই দিনের অপেক্ষায় রয়েছে যে দিন থেকে দেশটিতে আর কোন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটবে না।

Sana someday when asked “Kamusta human rights violations sa inyo?” Pinoys would say “parang Coca-Cola. Nung araw regular, naging light, ngayon zero.”

আশা করি কোন একদিন যখন এ দেশের কাউকে জিজ্ঞেস করা হবে, আপনাদের দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি কেমন? তখন ফিলিপাইনের নাগরিকরা বলবে, “এটা কোকাকোলার মত, প্রথমে নিয়মিত, তারপর হালকা আর এখন শূন্যের কোঠায়।”

আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলো উল্লেখ করেছে যে, দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে এবং দেশে যে সব যুদ্ধবাজ নেতা রয়েছে তাদের দমনে একুইনো প্রশাসন খুব সমান্য কাজ করেছে।

ফিলিপাইনস ভিত্তিক কয়েকটি যুক্ত মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ৪৮ টি বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, আইন রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ৫ জনের গুম হয়ে যাওয়া, ২৯টি নির্যাতন, ১৫১ টি অবৈধ গ্রেফতার এবং গ্রামীণ এলাকায় জোর করে উচ্ছেদের শিকার ৩,০১০ জন ব্যক্তির কাহিনী তালিকাভুক্ত করেছে।

রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের জন্য অর্থ বরাদ্দ শূন্যের কোঠায়

রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের (সাইউসিএস) বাজেটের পরিমাণ নাটকীয় ভাবে কমিয়ে আনার বিরুদ্ধে ছাত্ররা প্রতিবাদ জানাচ্ছে, এখনো এর পরিসমাপ্তি ঘটেনি। এই বার তারা একুইনোর ভালবাসাহীন জীবনের সাথে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়-এর ব্যয়ের পরিমাণ কমিয়ে আনার বিষয়টির তুলনা করছে।

মূল বাজেট নতুন নতুন স্থাপনা এবং যন্ত্রপাতি কেনার জন্য খরচ করা হচ্ছে। এখন প্রস্তাবিত ২০১২ সালের জাতীয় বাজেটে ৩২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাজেটে কাটছাট করা হবে, যার পরিমাণ প্রায় ৫৬৯.৮ মিলিয়ন পেসো। অভিযোগ করা হচ্ছে যে, বাজেট কর্তনের ফলে ফিলিপাইনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছে

১৬ সেপ্টেম্বর দিবসটিকে ফিলিপাইনের ব্লগাররা শিক্ষার জন্য ব্লগ কার্যক্রম দিবস হিসেবে গ্রহণ করে, ২১-২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ক্যাম্পাস ধর্মঘটের জন্য নিজেদের তৈরি করছে। বাজেট এবং সমাজ সেবা কার্যক্রমের পরিধি কমিয়ে আনার কারনে তারা এই ধর্মঘটের আহ্বান করেছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .