বুলগেরিয়া: প্রধানমন্ত্রী বয়কো বরিসভ বিহীন একটি দিন

৫ জুলাই, ২০১১, এই দিনটিতে বুলগেরিয়ার প্রচলিত ধারার প্রচার মাধ্যমের প্রতি এক ধরনের কৌতূহলজনক চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া হয়। প্রচলিত ধারার প্রচার মাধ্যম কি ফেসবুকে একটি গ্রুপের কার্যক্রম: “প্রধানমন্ত্রী বয়কো বরিসভ ছাড়া একটি দিন” [বুলগেরীয় ভাষায়; বর্তমানে এই পাতাটা মুছে ফেলা হয়েছে, এই অনুষ্ঠানের পর সংগঠকরা এটিকে মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় এই কারণে যে এটা হয়ত স্প্যাম হিসেবে ব্যবহার করা হবে] নামক বিষয়কে অনুসরণ করবে- নাকি তারা আগের মত বুলগেরীয় প্রধানমন্ত্রীর কাজকর্ম নিয়ে ক্রমাগত ভাবে সংবাদ প্রদান করে যাবে?

রয়টার্স ও ফেসবুকের এই ঘটনা খেয়াল করেছে, এবং সে তার খবরে এই তথ্য প্রকাশ করেছে। তারা এমন এক শিরোনাম ব্যবহার করেছে যা এই সংগঠনের উদ্দেশ্যের সাথে দারুনভাবে মিলে যায়। এর শিরোনাম “বুলগেরীয় নাগরিকরা তাদের নাই কাজে ব্যস্ত প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একটি দিন চাইছে”।

Bulgarian Prime Minister Boyko Borisov. Image by Flickr user kaladan (CC BY-SA 2.0).

বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী বয়কো বরিসভ। ছবি ফ্লিকার ব্যবহারকারী কালাদান-এর (সিসি বাই-এসএ ২.০)।

তবে বুলগেরিয়ার প্রচার মাধ্যম এই উদ্যোগের কথা প্রচার করেনি এবং তারা তাদের সংবাদে প্রধানমন্ত্রীর কাজের কথাই উল্লেখ করছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি ব্যতিক্রম সংবাদ প্রকাশনা হচ্ছে-সংবাদ সংস্থা বিজিনিউজ এবং ইন্টারনেট ভিত্তিক সংবাদ প্রদানকারী সাইট মিডিয়াপুল। বুলগেরিয়ার ব্লগার এবং প্রাক্তন সংসদ বারিস্লভ তাসেকভ বিজিনিউজের মতামত জানাচ্ছেন। তিনি এখানে মন্তব্য করেছেন যে, তিনি এর সাথে পুরোপুরি একমত। অন্য ব্লগাররাও বিষয়টি খেয়াল করেছে এবং তা নিয়ে লিখেছে। তারা কখনো কখনো পরিহাসের ছলে, আবার কখনো ব্যাঙ্গাত্মক স্বরে নিজেদের লেখার শিরোনাম দিয়েছে, যে লেখার উদ্দেশ্য তাদের প্রধানমন্ত্রী।

পলিটিক্স ইজ আর্টস এর লেখিকা নেলি, এক ধৈর্য্যশীল এবং বেদনাদায়ক লেখা লিখেছে। লেখাটিতে বুলগেরীয় প্রচার মাধ্যমের প্রতি খানিকটা সমালোচনা [বুলগেরীয় ভাষায়] করা হয়েছে। এই লেখায় লেখিকা প্রশ্ন করেছে কেন আমাকে, আমাদের সাংবাদিকদের লেখার বদলে, বিদেশী সাইট থেকে সংবাদ পড়তে হবে, বিদেশী টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দেখতে হবে, এবং ব্লগারদের মতামতকে বেছে নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বরিসভ নিজেই ঘোষণা দিয়েছেন যে, তিনি এই ধরনের অনুষ্ঠানের প্রতি আগ্রহী নন। এবং সাথে সাথে মন্তব্য করেছেন যে বিরোধীরা এই অনুষ্ঠানের সংগঠকদের অর্থ যোগান দিয়েছে। এই অনুষ্ঠানের অন্যতম সংগঠক, “এটানাস পাভলভ” লিখেছেন যে এটা খুব বাজে এক রসিকতা হবে যে যদি প্রধানমন্ত্রী যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করে, তাহলে তারা ফেসবুকে বিকল্প একটি পাতা “বয়কো বরিসভের সাথে একদিন” তৈরি করবে।

যে তিনজন তরুণ ব্যক্তির মাথা থেকে (এদের মধ্যে অন্য দুজন ব্যক্তি হচ্ছে মিজ.ক্যামেলিয়া এনচেভা এবং মিজ.ভালিয়া ক্রুশেভা) এই চিন্তা বের হয়েছে, তারা এই কার্যক্রমের সাথে কোন ধরনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করেছে। এদের একজন থাকে অষ্ট্রিয়ায় এবং অন্যজন থাকে বেলজিয়ামে, আর এদের আরেকজন থাকে বুলগেরিয়ায়। দেখে মনে হচ্ছে তার রাজনীতির দ্বারা প্রভাবিত নয়।

৫ জুলাই তারিখে এই অনুষ্ঠানের দিন ধার্য করা হয়েছিল কারণ, এখন থেকে দুই বছর আগে ২০০৯ সালের নির্বাচনের পর ঠিক এই দিনে বরিসভকে বিজয়ী করা হয়েছিল।

এই ঘটনার পর এর সংগঠকরা একটি উন্মুক্ত চিঠি প্রকাশ করে, যেখানে তারা ব্যাখ্যা করে এই এই উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রী লক্ষ্য করে করা হয়নি, আসলে তাদের লক্ষ্য ছিল বুলগেরিয়ার প্রচার মাধ্যম, যারা বয়কো বরিসভ নিয়ে যে ভাবে মাতামাতি করে তার বিরুদ্ধে। একই সময়ে তারা জানায় যে, এই বিষয়টি “বারলোসকোনি ছাড়া একটি দিন” নামক ইতালীয় এবং “স্মোলেনেস্ক ছাড়া একটি দিন” নামক পোলিশ এক উদ্যোগ থেকে ধার করা হয়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .