- Global Voices বাংলা ভার্সন - https://bn.globalvoices.org -

সিরিয়াঃ গুলি খাওয়ার পরেও কি কেউ নিজের ভিডিও নিজে ধারণ করতে পারে?

বিষয়বস্তু: মধ্যপ্রাচ্য ও উ. আ., সিরিয়া, তাজা খবর, নাগরিক মাধ্যম, যুদ্ধ এবং সংঘর্ষ

সিরিয়া৭রা [1], নামক ব্যবহারকারী ইউটিউবে এক সিটিজেন ভিডিও পোস্ট করেছে [2]। প্রচার মাধ্যম এবং নেট নাগরিক উভয়ে এই ভিডিওর গ্রহণযোগ্যতার প্রতি বিস্ময় প্রকাশ করেন। এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে এক নাগরিক সাংবাদিক যে কিনা সিরিয়ার চলমান গণ্ডগোলের দৃশ্য ধারণ করেছিল, যেখানে মনে হছে সেই ভিডিওতে তার মৃত্যুর দৃশ্য ধরা পড়েছে।
http://youtu.be/cp_ajN7Kqvc

গার্ডিয়ান ইউকে [3] নামক প্রত্রিকা এই ভিডিওর সংবাদ প্রচার করে এবং তারা যতটা তথ্য পেয়েছিল তার বিস্তারিত তারা তুলে ধরে। এই ভিডিওটি সিরিয়ার হোমস শহরে ধারণ করা হয়েছিল। এই ভিডিও-তে ধারা বর্ণনাকারী বলছে কি ভাবে ১ জুলাইতে নাগরিকদের উপর গুলি বর্ষণ করা হচ্ছিল, যদিও সেদিন কারাম আল শাম নামক এলাকায় কোন বিক্ষোভ বা দৃশ্যত কোন গুলি করার মত কারণ দেখা যায়নি। তবে তারা নিশ্চিত করে [3] যে এই ভিডিওর ক্যামেরাম্যানের পরিচয় বের করা যায়নি এবং এই ভিডিওর সত্যতা তারা প্রমাণ করতে পারেনি।

ইউটিউবের মন্তব্য বিভাগে এর সত্যতা নিয়ে সেই অনিশ্চয়তার বিষয়টি ধরা পড়েছে:
জনির৮২ [4] লিখেছে [5]:

আমি ঠিক নিশ্চিত নই, এটা সত্য না ভুয়া, তবে নিশ্চিত ভাবে বলা যায় এখানে কিছু প্রশ্ন রয়েছে। যেমন কে এই ভিডিও ধারণকারী নাগরিক? তার নাম কি? কখন এবং কোথায় এই ঘটনাটি ঘটেছে?

আমি মনে করি, তার মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিওটি সরাসরি ইউটিউবে উঠিয়ে দেওয়া হয়নি। কেউ একজন তার ফোনটা নিয়ে সেখান থেকে এই ভিডিওটি কম্পিউটারে নিয়ে নেয়, তারপর কম্পিউটার থেকে ইউটিউবে উঠিয়ে দেয়। আর এই ক্ষেত্রে এই মৃত ব্যক্তির বিস্তারিত বর্ণনা, সময়, ঘটনার স্থান এবং এ রকম আরো কিছু তথ্য থাকার দরকার ছিল। কোন প্রেক্ষাপটের বর্ণনা ছাড়া অস্পষ্ট এই ভিডিওটি বিশ্বাসযোগ্য নয়।

এই ভিডিওতে যে কন্ঠ শোনা গেছে তাহাবালি [6] তা ইংরেজিতে অনুবাদ [7] করতে সাহায্য করেছে:

অনুবাদ: সে প্রথমে বলল: “কারাম এল-শামি নামক এলাকায় নিরাপত্তা রক্ষীরা জনতার উপর গুলি চালাচ্ছে [কারাম এল শামি হচ্ছে হোমস-এর কেন্দ্রীয় এলাকা], কোন কারণ ছাড়াই, তারা গুলি ছুড়তে শুরু করেছে, এমনকি এখানে কোন বিক্ষোভের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না, আজ ১ জুলাই, ২০১১-তে।” যখন তার শরীরে গুলি লাগে, মনে হয় তখন একজন বন্ধু তার দিকে এগিয়ে আসে সে উপলব্ধি করে যে তার শরীরে গুলি লেগেছে, তখন সে বলে” তোমার মাথায় গুলি লেগেছে? হে খোদা! হে খোদা!”। মনে হয় এরপর যেন তার বুদ্ধি ভ্রষ্ট হয়ে যায়, সম্ভবত সে কোন কিছুর দিকে নির্দেশ করে বলতে থাকে, তাড়াতাড়ি, তাড়াতাড়ি, সবশেষে তার বন্ধুকে বলতে শোয়ান যায়, তুমি চাইছো, আমি ভিডিও করতেই থাকি?”

নিরোফেইটও [8] এই ভিডিওর উপর সাড়া প্রদান করেছে [9]:

এটা খুব বীভৎস! এটা একটা ভুয়া ভিডিও, এই মন্তব্যের সাথে আমি একমত নই। যে ব্যক্তিটি এই ভিডিওটিও ধারণ করছিল, সে খুব শঙ্কিত ছিল এবং গুলি করার ২.৫ সেকেন্ড আগে পর্যন্ত সে খেয়াল করেনি যে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হচ্ছে। যখন আমি প্রথম্বার এই ভিডিওটি দেখি তখন আমি খেয়াল করি যে ওই কুত্তার বাচ্চা ক্যামেরার দিকে বন্দুক তাক করেছে। আমি এখানে এই মন্তব্যকারীর সাথে একমত যে এখন কেউ একজন তার দিকে বন্দুক তাক করতে দেখে তথন সে সম্ভবত জমে যায়। কিন্তু আমি এখনো মনে করি যে এখানে তার প্রতিক্রিয়া না থাকার কারণ (হাঁস!) এই সকল আওয়াজের কারণে নার্ভাস হয়ে যাওয়া/ নজর না দেওয়া।

টিএইচ৩এ৫ [10] হচ্ছে তাদের মধ্যে একজন যে বিশ্বাস করে যে এই ভিডিওটি একটি প্রতারণা [11]:

ভুয়া এক ভিডিও ! আমি এখানে বন্দুক থেকে গুলি ছোড়ার কোন ঝলকানি দেখতে পাইনি এবং ক্যামেরাটি লুকানো ছিল। বাস্তবে এই ঘটনার পর হাত থেকে ক্যামেরাটা পড়ে যেত, ইত্যাদি……সব কিছুকে আরো খারাপ করে দেবার জন্য আরেকটা ভুয়া জিনিষ তৈরি করা হল।

এবং বিএস৯আরডাব্লিউবিবি [12] -এর এই ভিডিওর বিষয়ে প্রতিক্রিয়া [13] ছিল, এটি খানিকটা বিভ্রান্তিকর, যে এই সংঘর্ষের যারা বাইরে অবস্থান করছে তাদের সাহায্য করার জন্য কি করা যেতে পারে তাই নিয়ে ভাবছে:

এটা খুব বেদনাদায়ক, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সিরিয়ার জন্য সত্যি কিছু করতে চায়। কিন্তু সেখানে কি ঘটছে সে সম্বন্ধে বলা খুব কঠিন। এখানে আসা কিছু মন্তব্য বেশ অর্থহীন, যে মানুষটি ভিডিও ধারণ করেছে যে তার জীবনের জন্য সম্মান বয়ে আনবে এমন কিছু করতে চেয়েছিল এবং এর জন্য তাকে চরম মূল্য দিতে হয়েছে। সে তোমাদের মত বেশীর ভাগ মানুষের চেয়ে সাহসী।