তিউনিশিয়া: আলজেরিয়ার নাগরিকরা তিউনিশিয়ার জনতার সাহসিকতাকে অভিবাদন জানাচ্ছে

তিউনিশিয়ার পর কোন রাষ্ট্র, আলজেরিয়া? ছবি ফ্লিকার ব্যবহারকারী এএনডাব্লিউ-এফআর-এর, সিসি বাই লাইসেন্সের অধীনে ব্যবহার করা হয়েছে।

সকল আলজেরীয় নাগরিক তিউনিশিয়ার জনতার প্রতিরোধ আন্দোলনকে অভিবাদন জানাচ্ছে, যারা স্বৈরশাসক জিনে এল আবেদিন বেন আলিকে [ইংরেজী ভাষায়] তার ২৩ বছরের অপ্রতিরোধ্য শাসনের পর ক্ষমতা থেকে অপসারিত করেছে। ফোরাম, ব্লগ এবং ফেসবুকের সকল আলোচনা সভায় আলজেরিয়ার নাগরিকরা তিউনিশীয় জনতাকে অভিবাদন জানানোর আর কোন উপযুক্ত ভাষায় খুঁজে পাচ্ছে না, যারা তাদের স্বৈরশাসক রাষ্ট্রপতিকে এক বিপ্লবের মাধ্যমে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।

ব্লগ মটস ডে তেতে-এ, [ফরাসী ভাষায়] ব্লগার আর. জেড, ব্যাপক এক আন্দোলনের জন্য একত্রিত হবার কারণে তিউনিশিয় জনতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করছে [ফরাসী ভাষায়]। এই প্রবন্ধের শিরোনাম “তেল অথবা স্বাধীনতা? তিউনিশিয়ার তাদের পছন্দ বেছে নিয়েছে…” (এমন এক উত্তেজনাকর শিরোনাম যা আলজেরিয়ার সাম্প্রতিক দাঙ্গার অভিজ্ঞতার প্রেক্ষাপটে লেখা হয়েছে, আলজেরীয় সরকার সম্প্রতি সাফল্যের সাথে তরুণদের দ্বারা সৃষ্ট দাঙ্গা দমন করতে সক্ষম হয়। মূলত তেল এবং চিনির দাম বেড়ে যাবার প্রেক্ষাপটে দেশের তরুণরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল)। আর. জেড লিখেছে:

Qui peut rester insensible à ce qui vient de se produire en Tunisie ? Le peuple tunisien, par sa mobilisation  pacifique et sa détermination arrache sa liberté. Mieux encore, à contraindre le dictateur Ben Ali à quitter le pouvoir. Pis encore et humiliant pour lui : à  fuir son pays penaud. Honni et vomi, le tyran sort par la petite trappe de l'Histoire. Il aurait pu se retirer autrement, «dignement». Cependant sa soif inextinguible du pouvoir, l'en a empêché. Manifestement, la dignité n'est pas l'apanage des dictateurs.

তিউনিশিয়ায় এই মাত্র যা ঘটেছে তার প্রেক্ষাপটে কেউ আবেগ প্রবণ না হয়ে থাকতে পারে না? তিউনিশিয়ার জনগণ, তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন এবং বিক্ষোভ প্রদর্শনের মাধ্যমে স্বৈরশাসকের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। তারা সবচেয়ে ভালো যে কাজটি করেছে তা হচ্ছে, স্বৈরশাসক বেন আলিকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামিয়েছে। বেন আলির জন্য খারাপ ঘটনাটি হচ্ছে, তাকে অপমানিত হয়ে, নিজ দেশ থেকে ভেড়ার মত পালিয়ে যেতে হয়েছে। এখানে এই বিষয়টি উন্মোচিত এবং প্রকাশিত হল যে, অত্যাচারীকে ইতিহাসের এক ক্ষুদ্র দরজা দিয়ে বেরিয়ে যেতে হল। তিনি হয়ত মর্যাদার সাথে অবসর গ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু অপরিসীম ক্ষমতার লোভ, তাকে এই কাজ করা থেকে বিরত রেখেছে। পরিষ্কার ভাবে বলা যায়, স্বৈরশাসকেরা মর্যাদা চায় না।

ব্লগারের মত অনুসারে:

Les peuples opprimés ont leurs raisons que leurs dirigeants n'ont pas. Soif de liberté, la rue, elle, avait tout  compris. Elle avait compris que c'était le début de la fin d'une oligarchie. Même son soutien le plus fort, celui de son ami Sarkozy, n'a pas accouru à son secours. Ben Ali a compris, mais tardivement. La messe était dite.

নিপীড়নের শিকার জনতার কারণ রয়েছে স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করা, যা তাদের নেতার নেই। রাজপথ সব জানে। রাজপথ এটা বোঝে যে এর মধ্য দিয়ে এক স্বৈরশাসকের পতনের সূত্রপাত হয়। এমনকি বেন আলির সবচেয়ে বড় সমর্থক, তার বন্ধু ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি সারকোজি তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। বেন আলি বিষয়টি বুঝতে পেরেছিল, কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। সমবেত জনতা এই কথাই বলছে।

“এরপর কার পালা?” আরেকজন আলেজরীয় ব্লগার ফ্রাগমেন্টস, রাষ্ট্রপতি বেন আলির দেশ ছেড়ে চলে যাবার ঘোষণার পর এই প্রশ্ন রেখেছে [ফরাসী ভাষায়]:

Si l’information du départ définitif du président tunisien, Ben Ali, venait à se confirmer, ce serait une grande étape de franchie pour l’instauration d’un véritable État démocratique en Tunisie. Même si tout reste à faire, il faut se réjouir de cet élan d’espoir né après des années de musellement et de répression.

তিউনিশীয় রাষ্ট্রপতির দেশ ত্যাগের বিষয়টি যদি নিশ্চিত হওয়া যায়, তাহলে তা হবে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া, যদিও এখনো অনেক কিছু করার আছে। তারপরেও আমরা অবশ্যই এই আশার মুহূর্তটিকে উপভোগ করব, যা অনেক বছরের নিপীড়ন এবং নীরবতার পর তৈরি হয়েছে।

তিনি এই প্রশ্ন দিয়ে তার লেখার উপসংহার টেনেছেন:

Le départ précipité de Zine El Abidine Ben Ali fera-t-il des émules du côté d’ElMouradia (siège de la présidence de la République algérienne) ? En d'autres termes, notre tour viendra-t-il un jour ?

জিনে এল আবেদিন আলির এভাবে হঠাৎ ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার মত ঘটনা কি একদিন এল মোউরিদিয়ায় ঘটবে (এলমোউরিদিয়া আলজেরীয় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়) অন্য কথায়, কখন আমাদের দেশে এমন ঘটনা ঘটবে?

তিউনিশিয়ার এই স্বৈরশাসকের এভাবে দেশত্যাগ করার (ফরাসী ভাষায়) উপর মন্তব্য করতে গিয়ে, আলজেরীয় ইনাটরনাটসরা (ইন্টারনেট নাগরিকরা) বেন আলিকে একজন নেতার বদলে, ইঁদুরের সাথে তুলনা করেছে।

En préférant quitter le navire en pleine bourrasque, l'ex-président Ben Ali s'est donné (pour la postérité des poubelles de l'histoire) l'image d'un rat que celle d'un vrai commandant assumant ses responsabilités à savoir mener à bon port son navire avant de le quitter.

যখন তিউনিশিয়া নামক রাষ্ট্রটি এক অশান্ত ঝড়ের মাঝে পড়া জাহাজের মত অবস্থায় ছিল, তখন সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বেন আলি নিজেকে এক ইঁদুরে পরিণত করলেন (ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ইতিহাসে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবার জন্য)। সত্যিকারের এক নেতার মত তার দায়িত্ব ছিল ঝড়ের কবলে পড়া তিউনিশীয় নামক জাহাজটি ছেড়ে যাবার আগে, তাকে নিরাপদে তীরে ভিড়িয়ে দেওয়া, তার বদলে তিনি তা পরিত্যাগ করলেন।

তিনি এর সাথে যোগ করেন:

Honteux destin pour un voleur , un criminel …..parmi tant d'autres de ses collèges
arabes et Africains.

এক চোর, অপরাধীর ভাগ্যে যা ঘটে, তাই ঘটেছে.. তার অন্য অনেক আরব এবং আফ্রিকান সহযোগীর মত।

আলজেরিয় এক লেখক “মোখালুফ বোয়াউচি”, তার ব্লগে এক প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে, যার শিরোনাম “তিউনিশিয়া-আলজেরিয়া: সাদৃশ্য” [ইংরেজী ভাষায়]। এই প্রবন্ধে তিনি খানিকটা হতাশা প্রকাশ করেছেন। মূলত ১৯৮৮ সালের অক্টোবর মাসে আলজেরিয়া অনুষ্ঠিত রক্তক্ষয়ী দাঙ্গার সাথে তিউনিশিয়ার ঘটনার তুলনা করে, তিনি তার এই হতাশা ব্যক্ত করেন।

Nous assisterons à un ‘retour à la légalité’ (en Tunisie), à un ‘retour au calme’, à des arrestations de hauts dignitaires, à des rendements de comptes, les islamistes qui (re) viendront au premier plan…Tout cela donnera, à coup sûr, un peu de répit au régime pour se reconstituer. Enfin, une certaine décennie à l’algérienne bis.

আমরা (তিউনিশিয়া) “বৈধতার প্রত্যাবর্তন” এক “শান্ত হয়ে আসা”র মত ঘটনা প্রত্যক্ষ করব। আমরা সেখানে ঊর্ধ্বতন মর্যাদাবান ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা, নত হওয়া, এবং ইসালমপন্থী দলের আবার সামনে চলে আসার মত ঘটনা প্রত্যক্ষ করব। এই সকল ঘটনা, নিঃসন্দেহে শাসকদের একটি বিরতি প্রদান করবে, যাতে তারা আবার নিজেদের পূর্ণগঠিত করতে পারে। সব শেষে, এক দশক পরে তিউনিশিয়ার পরিণতি হবে আলজেরিয়ার মত।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .