গুয়াতেমালা: পাকাইয়া আগ্নেয়গিরি রাষ্ট্রীয় বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে


CC BY Teufelgt

সিসি বাই টয়ফেলগট


গুয়াতেমালার রাষ্ট্রপতি কোলম দেশটির কিছু অঞ্চলকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দুর্যোগ কবলিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা দেন। পাকাইয়া নামের আগ্নেয়গিরিটি অগ্ন্যুৎপাত বেড়ে যাওয়ার কারণেই তার এই ঘোষণা। এটি দেশটির রাজধানী গুয়াতেমালা সিটি থেকে ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। (এখানে চিহ্নিত অংশ ছাড়া সকল লিঙ্কের লেখা স্প্যানিশ ভাষায় প্রকাশিত)

গতকাল পাকাইয়া [ইংরেজী ভাষায়] নামের আগ্নেয়গিরিটি সামান্য এক ভূমিকম্পের পরে তার অগ্ন্যুৎপাতের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। একেবারে তার চূড়ায় ক্রান্তীয় এক ঝড়ের আগমনে, সেখান থেকে পানি, ছাই এবং পাথর পড়ার মত ঘটনা ভয়াবহ এক বিপদের সৃষ্টি করে। আজ দুটি ভূমিকম্পের কারণে, পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ক্রান্তীয় ঝড় এবং আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এই এলাকার জনগোষ্ঠীর উপর দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়িয়ে চলছে। ছাই পড়তে থাকা এবং সামনের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসার কারণে ঠিকমত দেখতে না পাওয়া এবং বৃষ্টির কারণে, রাস্তায় ৩০ টির বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এখন পর্যন্ত ৩ জন লোক নিখোঁজ এবং একজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে: এনিবাল আরসিলার একজন চিত্রগ্রাহক (ক্যামেরাম্যান)। বিস্ফোরণের উপর সংবাদ প্রদান করার সময় তার মাথায় আগ্নেয়গিরি থেকে উড়ে আসা পাথরের টুকরা আঘাত করে। ইতোমধ্যে যখন নেটিজেনরা অনলাইনের (স্ট্রিমিং চ্যানেলগুলোতে) চ্যানেলে প্রবেশ করে তখন তারা বিষয়টি আবিষ্কার করে, আরো বিশজনের আহত হবার সংবাদ জানা গেছে, আশেপাশের শহরগুলো খালি করে দেওয়া হচ্ছে।

এই পরিস্থিতির ভয়াবহতা বাড়তে থাকার বিষয়টি ব্লগ, টুইটার, আইডেন্টি.কা একাউন্ট (হ্যাশট্যাগ #পাকাইয়া ব্যবহার করে) এবং এমনকি একটি রক সঙ্গীতের ফোরাম বা আলোচনা সভায় স্থান পায়। আকাশ থেকে আগ্নেয়গিরির ছাই পড়ছে, গুয়াতেমালায় এমন দৃশ্য নতুন কিছু নয়। কিন্তু গুয়াতেমালায় সিটিতে এই প্রথম এ ধরনের ঘটনা ঘটলো। ৩১ মে তারিখ পর্যন্ত শহরের বিমান বন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাথরের ময়লা মাটিতে পড়ে আছে এবং আকাশে ছাই উড়ছে। লোকজনকে বিষয়টি আইসল্যান্ডের আগ্নেয়গিরি আইজাফজালাজকুল আগ্নেয়গিরি যে ছাইয়ের মেঘ তৈরি করেছিল তার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। গত মাসে আইসল্যান্ডের এই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে ইউরোপের বিমান যাত্রা ব্যহত হয়।

পাকাইয়া আগ্নেয়গিরি একটি জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা [ইংরেজী ভাষায়], এবং লোকজন এখানকার প্রবাহমান লাভা দেখে, ঝলসানো মার্শম্যালোস খায় (চিনি, ভুট্টার সিরাপ,পানি, জেলেটিন ইত্যাদি দিয়ে তৈরি মিষ্টি) এবং এলাকাটিকে চষে বেড়ায়, কাজেই তার অগ্ন্যুৎপাত বেড়ে যাওয়ার ফলে তা কি রকম পরিস্থিতির তৈরি করবে? ভিভো এন গুয়াতেমালা সংবাদ প্রকাশ করেছে যে:

Actualmente se producen explosiones cada segundo y alcanzan hasta 500 metros de altura sobre el cráter. Las columnas de ceniza llegan hasta 1 mil 500 metros de altura y se dispersan hacia el Oeste y Sur-Oeste sobre las aldeas El Rodeo y El Patrocinio. También se reporta caída de ceniza en Amatitán, San Francisco de Sales, Calderas, Los Pocitos y San Vicente Pacaya.

সম্প্রতি, এই আগ্নেয়গিরিটি প্রতি সেকেন্ডে বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে এবং এর অগ্ন্যুৎপাত এর কেন্দ্রে থেকে লাভা ৫০০ মিটার ঊর্ধ্বে উঠে যাচ্ছে। এর ছাই-এর স্তম্ভ ১৫০০ মিটার উচ্চতায় উঠছে এবং তা পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিম এলাকার গ্রাম এল রোডেও ও এল প্যাট্রোসিনিও এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। আমাটিটান, সান ফ্রান্সিসকো অফ সালেস, কালডেরাস, লস পোকিটোস এবং সান ভিসেন্টে পাকাইয়া এলাকায় ছাই ছড়িয়ে পড়ার খবর জানা যাচ্ছে।

গুয়াতেমালা অগ্নি নির্বাপক দল (ফায়ারম্যান স্কোয়াড) তাদের ব্লগে সংবাদ প্রকাশ করেছে যে অনেক বেশি জনসংখ্যা সম্বলিত এলাকা যার মধ্যে আমাটিটলান, ভিলা নুয়েভা এবং সান মিগুয়েল পেটাপা এলাকা বেশ কয়েক বার ছিটকে আসা বালুর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। ব্লগার চিটোওরে আকাশ থেকে কালো ধুলার পতনের ছবি তুলে দিয়েছে। ভিডিও এবং প্রয়োজনীয় লিঙ্ক এই পরিস্থিতি সম্বন্ধে তথ্য জানাতে থাকবে।

গতকাল পর্যন্ত, শহরের উপর যে সমস্ত ছাই পড়ছিল তা ছিল এক অন্য রকম ঘটনা, যদিও তা গুয়াতেমালায় একেবারে নতুন কোন ঘটনা নয়, যা নিচের ভিডিওতে দেখা যাবে, যেখানে একজন তরুণ বাইরে দাঁড়িয়ে আছে, সে সময় শুকনা ছাই তার উপর ছড়িয়ে পড়ে। এগুলো ছাদ এবং মাটির উপর ছড়িয়ে পড়েছে।

পরবর্তী ভিডিওতে এক প্রশান্ত ব্যক্তি টেসি ক্যাসপাইন দেখাচ্ছে তার উঠানে যে ছাই পড়ছে তা কয়লার মত কালো এক স্তরে উঠান ভরিয়ে দিয়েছে। শহরের কোন কোন অংশে তা ২ থেকে ৩ ইঞ্চি গভীর এক স্তরের সৃষ্টি করে এবং এটি গাড়ি দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

আপনি অনলাইনে প্রকাশ করা গুয়াতেমালা টিভি নিউজ চ্যানেলের ভিডিওর মাধ্যমে এই রহস্যময় ঘটনাটির দৃশ্য দেখতে পাবেন (প্রবাহমান বা স্ট্রিমিং ভিডিওটি দেখতে পাবেন)। এছাড়াও গুয়াতেমালার প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রতিরোধ কমিশন (কনরেড) এর মাধ্যমে এই বিষয়ে সংবাদ পাবেন, যারা সব সময় তাদের ফেসবুকের পাতাটুইটারের পাতায় (টুইটার একাউন্ট) তাজা সংবাদ প্রদান করে যাচ্ছে। এর মধ্যে সংযুক্ত রয়েছে,সেই সমস্ত সম্প্রদায়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা মানচিত্র, যারা এই বিশেষ বিপর্যয়ে আক্রান্ত হয়েছে।

এই পোস্টের কিছু তথ্যের ব্যাপারে সহযোগিতা করেছেন রেনাটা আভিলা।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .