ক্যারিবিয়ান: বার্লিনে স্বর্ণ অভিযান

যদি কারো মনে কোন সন্দেহ থাকে যে জ্যামাইকা হয়তো নিজেকে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী মানুষটির দেশ বলে নিজেকে দাবি করতে পারে, উসাইন বোল্টের বিস্ময়কর ১৯.১৯ মিনিট সময় নিয়ে জয়ের মাধ্যমে বার্লিনে অনুষ্ঠিত অআইএএফ ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশীপ ইন এ্যাথলেটিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় গতকালের ২০০ মিটার দৌড়ের চূড়ান্ত ফলাফল অনেকটা প্রত্যাশিতযা সকল সংশয় দুর করেছে। আরো একবার আঞ্চলিক ব্লগাররা তাদের জ্যামাইকান প্রতিপক্ষের সাথে উৎসবে মেতে উঠেছে।

ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগো নিউজ ব্লগ এই প্রতিযোগীকে, অন্যান্য প্রতিযোগীদের মাঝে “অসাধারণ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন” বলে উল্লেখ করেছেন, সেখানে তার স্বদেশী আইসল্যান্ডিস্তা বুঝে উঠতে পারছে না কোন খান থেকে সে শুরু করবে।

ওহ! কি এক দিন হে আইসল্যান্ডিস্তা!

বার্লিনে আজকের দিনে আমরা সবাইকে ছাড়িয়ে গেছি, নয় কি?

কোথা থেকে শুরু করবো আমরা?

স্বর্ণবালিকা এবং বর্তমান অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন আইসল্যান্ডিস্তা বা দ্বীপ বাসি মেলেনি ওয়াকারের উত্তেজনাকর ৪০০ মিটার হার্ডলস-এ স্বর্ণ জয়।?

অথবা উসাইন বোল্টের চোয়াল বদ্ধ জয়, যা ‘স্বাভাবিক কোন কাজ নয়’ – চূড়ান্ত পর্বে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ১৯.১৯ সেকেন্ডে ২০০ মিটার দৌড়।

সেন্ট ভিনসেন্ট এন্ড দি গ্রানাডাইন থেকে এবেনি পরিকল্পনা করেছিল “আল মাগরাহিকে নিয়ে লিখবে। প্যান এম ১০৩ বিমানে বোমা বিস্ফোরণের জন্য তাকে দায়ী করা হয়। এটি ছিল উসাইন বোল্টের ১৯.১৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে বার্লিনে ২০০ মিটার দৌড়ে স্বর্ণ জয় করার আগের ঘটনা।“ ভদ্রমহিলা বলে চলেছেন:

উসাইন বোল্টের অনেক আগে বার্লিন জেসি ওয়েন্সের চমৎকারিত্ব দেখেছিল, যে কিনা হিটলারের আর্য জাতির শ্রেষ্ঠত্বের ধারণায় আঘাত হানে। এবার বোল্ট সমগ্র ক্রীড়া বিশ্বকে তার দুর্দান্ত প্রতিভা দিয়ে বিস্মিত করছে।

আমি এখনো আমার মনকে মুড়ে তর পায়ের কাছে রেখেছি।

বেশ কৌতুহলজনক ভাবে ইউটিউব ভিডিওর একটা লিঙ্ক রয়েছে- একটা মেমে বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়ানো কার্যক্রমের অংশ রয়েছে, যেখানে সাবটাইটেল বা ভাষান্তর সহ চলচ্চিত্রের কিছু অংশ যোগ করা হয়েছে। সেখানে সব ধরনের বিষয় নিয়ে আলোচনা রয়েছে, যার মধ্যে আছে হিটলারের এক কাল্পনিক সাক্ষাৎকার। এখানে উসাইন বোল্টের ১০০ মিটার দৌড়ে পুরাতন বিশ্ব রেকর্ড ভাঙ্গা উপলক্ষ‌ে তিনি তার প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। এই ভিডিও অঞ্চলের সব জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ইমেইল ও সোশ্যাল নেটওয়ার্ক, যেমন ফেসবুকের মাধ্যমে। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের বেশীর ভাগ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ও ক্রীড়ামোদী এই ছোট্ট ব্যঙ্গ নকশায় প্রচণ্ড আমোদ পেয়েছেন। কিন্তু একটা নোট রয়েছে: এই ভিডিও-তে প্রাপ্ত বয়স্কদের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তাই এটি ছোটদের উপযোগী নয়।

কিন্তু বোল্ট একমাত্র ক্যারিবীয় ক্রীড়াবিদ নয় যার অসাধারণ ফলাফল তাত্ত্বিক ভাবে হিটলারকে আহত করেছে। রায়ান ব্রাথওয়েট বিশ্বচ্যাম্পিয়ানশীপে বার্বাডোজকে প্রথম সোনার পদক এনে দেন। তিনি পুরুষদের ১১০ মিটার হার্ডলসে ১৩.১৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে স্বর্ণ পদক জয় করেন। বার্মুডায় বাস করা এক বার্বডোজবাসীর ব্লগ বিচলাইম.কম। তিনি বলেছেন, একজন বাজান (বার্বাডোসবাসীর ডাকনাম) হিসেবে তিনি গর্বিত এবং “বিমসায়ারের সকল বাসিন্দাদের তার অভিনন্দন” পাঠিয়ে দিয়েছেন। প্রবাসী ব্লগার জাডিড যোগ করেছেন

মি: বোল্টের ২০০ মিটার দৌড়ের ১৯.১৯ সেকেন্ড এক দারুণ ঘটনা, কিন্তু বাজান রায়ান ব্রাথওয়েটকে সমর্থন করুন তার ১১০ মিটার হার্ডলসে স্বর্ণ জয়ের জন্য। ওয়ার্ল্ড গেমসে এটি বার্বডোজের প্রথম স্বর্ণ জয়।

বার্বাডোজ আন্ডারগ্রাউন্ডও এর মূল্যায়ন করেছেন:

সিডনি অলিম্পিকে ওবাডেলে থমসনের ব্রোঞ্জ জয় করা ফলাফলের পর বার্বাডোজ উৎসব করার এক কারণ খুঁজে পেল, বিশ্বের মঞ্চে আমাদের ক্রীড়াবিদদের নৈপুণ্যের কারণে। সেদিন সন্ধ্যায় ১১০ মিটার হার্ডলসে ব্রাথওয়েটের স্বর্ণ জয় করা দক্ষতা, বার্বাডোজের ক্রীড়াবিদের কোন ভালো ফলাফল না করার ফলে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল তা পুরণ করেছে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল বার্বাডোজবাসীদের ক্রীড়াঙ্গনে সাফল্যের জন্য যে ক্ষুধা, তার কিছুটা পুরণ করে আমাদের ক্রীড়ামোদী জাতির জন্য।

ব্রাথওয়েটের সাফল্যে অন্য ক্ষেত্রেও সুবিধা বয়ে আনবে, পর্যটন ও আন্তর্জাতিক সেবা ব্যবস্থাপনায় দেশটির আস্থা তৈরি হবে। বার্বাডোজ নামটির প্রতি শ্রদ্ধা বাড়তেই থাকবে।

চীজ-অন-ব্রেড ব্লগের ভদ্রমহিলা তার অভিনন্দন বার্তা জানিয়েছেন:

নীল, হলুদ এবং কালো, এদের তুলে ধর! চীজ-অন-ব্রেড তোমাকে অভিবাদন জানাচ্ছে, বাজান রায়ান ব্রাথওয়েট, ১১০ মি হার্ডলসের দৌড়বিদ… তোমাকে অভিনন্দন, রায়ান। এর জন্য তুমি কঠোর পরিশ্রম করেছ, বালক। ভালো কাজ করেছ।

এবং উসাইন বোল্ট তার জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে, যেমন আজকে সে জিতেছে, তার নিজের গড়া রেকর্ডকে অতিক্রম করে। তার দৌড়ের সময় ১৯.১৯ সেকেন্ডে নিয়ে এসেছে। উহুলস( উল্লাস আনন্দ)। বোল্ট, নিজেকে এ ভাবেই অতিক্রম করে যাও।

টোবাগো, ত্রিনিদাদের এক সংলগ্ন ক্ষুদ্র দ্বীপ যা অনেকটা তার বোনের মতো, তারাও বিশ্বচ্যাম্পিয়ানশীপে তুলনামূলক ভালো ফল করেছে। জোসান্নে লুকাস ৪০০ মিটার হার্ডলসে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেছেটিটিগ্যাপারস.কম এই ফলাফলের বিশেষত্ব ব্যাখ্যা করেছে:

টোবাগো ল্যাশ প্রথম মহিলা ক্রীড়াবিদ যে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর হয়ে কোন বিশ্ব খেতাবী দৌড় প্রতিযোগিতায় প্রথম পদক জিতল।

তার স্বদেশী টিএন্ডটি (ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগো) এর ব্লগার আইসল্যান্ডিস্তা যে সুখ আনন্দ এই অঞ্চলের ব্লগার অনুভব করছে তার সংক্ষিপ্ত সার করছে।

এরকম সমৃদ্ধ খেলোয়াড়দের আবির্ভাব এখানে ঘটেছে। আজকের রাতে ক্যারিবিয়ানদের এত গুলো পদক জয়ে আমরা পচে গেছি!

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপের এই ছোট্ট অঞ্চলের জন্য এটা একটা বড়, অনেক বড় একটা দিন।

অনেক বছর ধরে আমরা কেবল তাদের দেখেছি, যারা এখানে জন্মায় এবং অন্য দেশের পতাকার নিচে দৌড়ায়… আমরা দেখেছি বড় বড় দেশের বড় মাপের খেলোয়াড়রা এক বিস্ময়কর সময় নিয়ে প্রতিযোগিতা শেষ করে, এক সন্দেহের বাতাবরণে, যা আমাদের কাছে এক নিশ্চিত বাস্তবতা বলে মনে হত, কিন্তু শক্তিশালী জাতির লোকেরা তা মনে করে না, যারা তাদের সাহায্য করত।

কিন্তু এখন… খেলার মাঠ অনেকটাই সমান হয়ে গেছে।

এবং আমি মনে করি আমরা যে ভাবে অনুভব করি সকল ক্যারিবিয়ান সে ভাবেই অনুভব করে।

এখনই সময় !!!!!

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .