ভারত: গুজরাতের হীরা শ্রমিকরা সঙ্কটের কারনে আত্মহত্যা করছে


হীরার স্বপ্ন দেখা। ছবি স্বোয়ামীবুর সৌজন্যে।

নীচের ভিডিওগুলোতে আমরা দেখতে আর শুনতে পাবো ভারতের গুজরাতের হীরা পলিশকারীরা কি ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। তাদের শিল্পকে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা গ্রাস করার ফলে হাজার হাজার লোক চাকুরিচ্যুত হচ্ছে। পরিবারকে খাওয়াতে না পেরে, বিল দিতে না পেরে আর বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে না পেরে, তাদের রোজ আনা রোজ খাওয়াতে অভ্যস্ত হতে হচ্ছে। আর অনেকে আত্মহত্যাকে তাদের শেষ আশ্রয় হিসেবে বেছে নিচ্ছে।

নীচের ভিডিওটি (ইংরেজী আর হিন্দী ভাষায়) আপ্লোড করা হয় আইআইএম এলাহাবাদ এর ছাত্রদের দ্বারা। এটি তাদের ব্যবসা প্রশাসন কোর্সের সামাজিক সাংস্কৃতিক পরিবেশ ব্যবস্থাপনা বিষয়ের অংশ। এই ভিডিও ব্যাখ্যা করে গুজরাতের সুরাটের হিরা পলিশকারীরা এই শিল্পে কি ভূমিকা রেখেছিল, আর এখন এই প্রক্রিয়া থেকে তাদেরকে কিভাবে বাদ দেয়া হচ্ছে। আগের ব্যস্ত কারখানা থেকে হিরা পলিশকারীদের বাদ দেয়া হচ্ছে আর কারুকাজ শিল্পে তাদের প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে, যার সম্পর্কে তারা কিছুই জানে না। খুবই ভালো যোগ্যতাসম্পন্ন শ্রমিককে অন্য কারখানায় কাজ খুঁজতে হচ্ছে, আর আগের থেকে অনেক কম আয় হচ্ছে। তাদের বাচ্চা, যারা আগে প্রাইভেট স্কুলে যেত এখন পরীক্ষা দিতে পারছে না বেতন না দিতে পারার কারনে:

সুরাটের পরিস্থিতি বেশ জটিল, যেহেতু ৫০% হিরা কাটার আর পলিশের শ্রমিক চাকুরি হারিয়েছে। সরকার চেষ্টা করছে শ্রমিকদের বাচ্চাদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করতে যাতে তারা তাদের পড়া চালাতে পারে। হিন্দুস্তান টাইমস ব্লগে একটা সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে:

এই সঙ্কটের আর একটা দিক আছে সুরাটে- বিশ্বের অন্যান্য জায়গার চাকুরিচ্যুত শ্রমিকরা তাদের পরিবারের উপরে নির্ভর করতে পারে তাদের সাহায্য করার জন্য, এখানে বেশীরভাগ শ্রমিকের পুরো পরিবার হীরা পলিশ শিল্পে নিয়োজিত, আর সবার চাকুরী হারানোর বা বেতন অনেক কমে যাওয়ার ভয় আছে।

প্রগতি.অর্গ এ বলা হয়েছে হীরা শিল্পের সঙ্কটের কারনে আত্মহত্যার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৭১:

মোদির বাদ্যবাদকরা যখন লগ্নীর পরিমান দেখে খুশীতে লাফাচ্ছে, তখন অন্তত ৭১ জন হিরা পলিশকারী গত কয়েক মাসে গুজরাতে আত্মহত্যা করেছে কারন বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা তাদের শিল্পকে মারাত্মকভাবে আঘাত করার ফলে তারা চাকুরিচ্যুত হয়েছে। মোদি যিনি নিজেকে ‘সাধারন মানুষ’ হিসাবে তুলে ধরতে ভালোবাসেন, অস্বীকার করেন হীরা শমিকদের ছাড়িয়ে আনতে যারা কঠোর ব্যবসায়ীদের দয়ার উপরে নির্ভরশীল হয়ে আছে…

…গুজরাতের ৭১টি আত্মহত্যার ঘটনা ছাড়াও, হীরা শ্রমিকদের মধ্যে অবস্থা এতো হতাশাজনক হয়ে পড়েছে যে সুরাট হীরা সমবায়ের বাইরে প্রায় হুড়োহুড়িতে পিষ্ট হওয়ার মত পরিস্থিতি হয়েছিল যেখানে স্কুলের বেতন মওকুফ করার ফর্ম বিতরন করা হয়।

হীরা পলিশ করা একটা বিশেষ শিল্প, যেখানে একটা পাথরকে চমৎকার রত্নে পরিনত করা হয় যা বিশ্বব্যাপী অলঙ্কারকে সাজিয়ে তোলে। নীচের ভিডিওতে, ইন্টারঅ্যাকটিভ (অন্তর্জালমূলক) অনলাইন তথ্যচিত্র ‘হীরক সড়ক’ দেখানো হচ্ছে [সাবধান, মনে হচ্ছে মূল সাইটে ভাইরাস আছে, যার জন্য আমি লিঙ্ক দিচ্ছি না], আমরা দেখছি একটা তরুন হীরা পলিশ শিক্ষানবিশ তিন মাস বিনা বেতনে শিক্ষানবিশকাল শেষ করে তার প্রথম হীরা পলিশ করছে:

আপনি যদি এই শিল্প সম্পর্কে আরো জানতে চান, তাহলে (ইউটিউবে আপলোড করা) পরের ভিডিওগুলো দেখুন। জোবানপুত্রার ব্যাখ্যায় আমাদেরকে এগুলো সাঙ্গাভী হীরা প্রক্রিয়াজাতকরন কারখানায় নিয়ে যায়। চারভাগের বিশদ এই ভিডিওতে কারখানা ভমণ করে আমরা দেখি পাথর থেকে রত্ন তৈরির পুরো প্রক্রিয়া। এছাড়াও তারা কিভাবে ভালো নীতি অনুসরণ করে, বাচ্চাদের নিযোগ দেয়না, আর যাচাই করে তাদের হিরা যেন ভালো জায়গা থেকে আসে আর যেন ‘রক্ত হীরা‘ না হয়।

হীরা উৎপাদন প্রক্রিয়ার পর্ব , আর দেখতে সংখ্যায় ক্লিক করুন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .