সিঙ্গাপুর: পাশের বাড়িতে আসা বিদেশী শ্রমিক

গত সপ্তাহে সিঙ্গাপুরের সরকার তাদের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে যে বিদেশী শ্রমিকদের থাকার জন্য ১১টি নতুন বাড়ী বানানো হবে। কিন্ত এতে মধ্যবিত্তদের বসতি সেরাঙ্গুন গার্ডেন এলাকার লোক খুশি হয়নি। এলাকাবাসীর প্রতিক্রিয়া হিসেবে, তারা তাদের স্থানীয় এম পি, জর্জ ইয়াও আর লিম উই হুয়ার কাছে একটা পিটিশন দিয়েছে। এই প্রতিনিধিরা বলেছেন যে তারা বিতর্ককে স্বাগত জানাচ্ছেন। ওদিকে ব্লগাররা এ নিয়ে বিতর্ক করছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী জর্জ ইয়ো সেরাঙ্গুন গার্ডেনের বাসিন্দাদের সাথে একটি কথোপকথনের কথা আ রাইটার্স ব্লগে লিখেছেন:

এটা সৌভাগ্যের ব্যাপার যে ডায়ালগ সেসন আগে থেকে ঠিক ছিল। অনেক বাসিন্দা কথা বলেছেন, কেউ কেউ আবেগ দিয়ে। যেমন ধারণা করা হয়েছে, মূল চিন্তা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে। এতে সমস্যাসঙ্কুল ট্রাফিক যাতায়াত আরো বেড়ে যাবে। তবে এটা ভালো যে সবাই আমাদের দেশের অর্থনীতিতে বিদেশী শ্রমিকদের অবদান স্বীকার করেছেন।

কিন্তু সিঙ্গাপুর প্যাট্রিয়টের জেরাল্ড গিয়াম এই মিটিং এর কথা অন্যভাবে বলেছেন। তিনি বাসিন্দাদের অভিযোগ আরো শত্রুভাবাপন্ন বলে জানিয়েছেন

  • তারা ‘অর্ধ উলংগ মানুষ’ তাদের এলাকায় চায়না;
  • বৃদ্ধদের জন্য এলাকা নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে;
  • বাবা মা তাদের বাচ্চা আর বৃদ্ধদের বাড়িতে রেখে কাজে যেতে চিন্তিত হয়ে পড়বে;
  • ট্রাফিক সমস্যা হবে কারন লরিতে করে শ্রমিকদের আনা নেয়া হবে;
  • ১ মিলিয়ন ডলার মুল্যের প্রায় ১৪০০টি বাড়ীর প্রত্যেকটির মূল্য কমে যাবে।
  • গিয়াম আরো বলেছেন:

    আমরা অনেকে ভয় পাই যে বিদেশী শ্রমিক সামাজিক সমস্যার কারন হবে। এই ভাবে বলা যাক: যদি মাসে আপনি মাত্র ৫০০ ডলার আয় করেন যেখানে দেশে আপনার উপর নির্ভরশীল ১২ জনের বর্ধিত পরিবার আছে, আপনি কি আপনার আয়ের উপায় ঝুঁকির মুখে ফেলবেন বোকার মতো কোন অপরাধ করে জেল, মার খাওয়া আর নির্বাসিত হয়ে? বিদেশী শ্রমিকরা জায়গা ময়লা করে? কারা আমাদের ময়লা তোলে আর রাস্তা ঝাড়ু দেয়?

    অনেক ব্লগার বলেছেন যে এই ব্যাপারটা তুলে ধরে বিদেশীদের সাথে সিঙ্গাপুরের সার্বিক সম্পর্কের ব্যাপারটি। দ্যা অনলাইন সিটিজেনে প্রকাশিত সেরাঙ্গুন গার্ডেন এলাকাবাসীদের একটা ভিডিও পোস্ট আর খালি স্কুল যা (শ্রমিক বসতিতে) রুপান্তরিত হবে তা নিয়ে রিপোর্ট প্রচুর বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। মি. ব্রাউন শোর পডকাস্টার লাম্পুন দেখিয়েছেন যে বাসিন্দারা এলিয়েন বাংলা নিয়ে ভীত।

    এসজিপলিটিক্স.নেট এর এনজি ই-জে অবশ্য বলেছেন যে এটা কুসংস্কারের ব্যাপার না। তিনি সরকারের সমালোচনা করেছেন শ্রমিকদের আনার আগে পরিকল্পনা না করার জন্যে:

    সরকার যদি আমাদের ক্যাসিনো আর বিশাল প্রকল্প নির্মাণের জন্য অনেক বিদেশী শ্রমিক আমদানি করতে চায় যা আমাদের অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নেবে বলে বলা হয়, তাহলে প্রথমেই তাদেরকে ঠিকমতো রাখার যথেষ্ট ব্যবস্থা করতে হবে। তার মানে বিদেশী শ্রমিকদের বাসস্থান এমন জায়গায় দেয়া যা স্থানীয় বাসিন্দাদের খুব কম অসুবিধার সৃষ্টি করবে।

    স্ট্রেইটস টাইমস পত্রিকা অনুযায়ী, সরকার বাসিন্দাদের সাথে বোঝাপড়া করতে চাচ্ছে যে তারা ভারত, থাইল্যান্ড আর বাংলাদেশ থেকে আসা শ্রমিকদের পাশেই থাকবে। কিন্তু জর্জ ইয়ো ঘোষণা করেছে যে সরকার এখন উপচিয়ে পড়া বিদেশী শ্রমিকদের জন্য আলাদা শহরের কথা চিন্তা করছে।

    ফ্লাইং লো- বেনামী একজন লেখক যে নিজেকে একজন সরকারী কর্মচারী বলে পরিচয় দেয় এই ঘোষণার সমালোচনা করেছে:

    একটি এইচডিবি [গৃহায়ন উন্নয়ন বোর্ড] জাতিগত কোটা কি কার্যকর আছে না যাতে বলা আছে সিঙ্গাপুরে জাতিগত কোন অঞ্চল হবে না? কিন্তু (তারা বলছে) বিদেশী শ্রমিকদের জন্য একটি এলাকা নির্মাণ করা ঠিক আছে। হ্যা, বিদেশী এই শ্রমিকদের সিঙ্গাপুরবাসীদের থেকে আলাদা করে দাও। এটা অবশ্যই সব থেকে ভালো উপায় উৎসাহিত করার যে “সিঙ্গাপুরবাসী তোমার হৃদয় ওদের জন্য উন্মুক্ত করে দাও।”

    1 টি মন্তব্য

    আলোচনায় যোগ দিন

    লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

    নীতিমালা

    • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .